ঢাকা ১১:২৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঈশ্বরদীতে সূর্যমুখী চাষে কৃষকের মুখে হাসি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১০:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫
  • ০ বার

পদ্মা নদীর চরে বিস্তীর্ণ জমিতে হলুদ সূর্যমুখী ফুলের সৌন্দর্যে মুখরিত ঈশ্বরদী। মৌমাছির গুঞ্জন আর সুগন্ধ ছড়িয়ে দুলতে থাকা ফুলের সারি যেন আমন্ত্রণ জানাচ্ছে প্রকৃতিপ্রেমীদের। সৌন্দর্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সফলতার স্বপ্ন দেখছেন এখানকার কৃষকরাও।

ঈশ্বরদীর সাঁড়া ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের কৃষক আবুল কাশেম জার্মান আলী জানান, ধানের তুলনায় সূর্যমুখী চাষে তিন গুণ বেশি লাভের সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি ৩৩ শতক জমিতে বারি-৩ জাতের সূর্যমুখী চাষ করেছেন, যেখানে তার খরচ হয়েছে মাত্র ৭ হাজার টাকা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ৮-৯ মণ বীজ উৎপাদনের আশা করছেন, যার বাজারমূল্য মণপ্রতি ৩,০০০-৩,৫০০ টাকা।

ফেসবুক ও টিকটকে সূর্যমুখী ফুলের ছবি ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয় দর্শনার্থীরা দল বেঁধে আসছেন। কেউ সেলফি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন, কেউবা আপনজনদের সঙ্গে উপভোগ করছেন মনোমুগ্ধকর দৃশ্য।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার প্রহল্লাদ কুমার কুন্ডু জানান, এ বছর ঈশ্বরদীতে ৩ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। এটি স্বাস্থ্যকর ভোজ্য তেলের অন্যতম উৎস, যা সয়াবিনের বিকল্প হিসেবে ব্যবহারযোগ্য। ১০ কেজি বীজ থেকে প্রায় ৪.৫ কেজি তেল উৎপাদন হয়।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল আলিম বলেন, “পদ্মার চরাঞ্চলের দো-আঁশ মাটি সূর্যমুখী চাষের জন্য আদর্শ। কৃষকদের প্রশিক্ষণ, কীটনাশক সহায়তা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পরিবেশ অনুকূলে থাকলে এ অঞ্চলে সূর্যমুখী চাষ আরও বাড়বে।”

সরকারি সহায়তা ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহারে সূর্যমুখী চাষ ঈশ্বরদীর কৃষকদের জন্য সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচন করছে। সৌন্দর্য ও অর্থনৈতিক লাভ একসঙ্গে এনে কৃষকদের জীবনে নতুন আশার আলো যোগ করছে এই সোনালি ফুল।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ঈশ্বরদীতে সূর্যমুখী চাষে কৃষকের মুখে হাসি

আপডেট টাইম : ১১:১০:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫

পদ্মা নদীর চরে বিস্তীর্ণ জমিতে হলুদ সূর্যমুখী ফুলের সৌন্দর্যে মুখরিত ঈশ্বরদী। মৌমাছির গুঞ্জন আর সুগন্ধ ছড়িয়ে দুলতে থাকা ফুলের সারি যেন আমন্ত্রণ জানাচ্ছে প্রকৃতিপ্রেমীদের। সৌন্দর্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সফলতার স্বপ্ন দেখছেন এখানকার কৃষকরাও।

ঈশ্বরদীর সাঁড়া ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের কৃষক আবুল কাশেম জার্মান আলী জানান, ধানের তুলনায় সূর্যমুখী চাষে তিন গুণ বেশি লাভের সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি ৩৩ শতক জমিতে বারি-৩ জাতের সূর্যমুখী চাষ করেছেন, যেখানে তার খরচ হয়েছে মাত্র ৭ হাজার টাকা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ৮-৯ মণ বীজ উৎপাদনের আশা করছেন, যার বাজারমূল্য মণপ্রতি ৩,০০০-৩,৫০০ টাকা।

ফেসবুক ও টিকটকে সূর্যমুখী ফুলের ছবি ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয় দর্শনার্থীরা দল বেঁধে আসছেন। কেউ সেলফি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন, কেউবা আপনজনদের সঙ্গে উপভোগ করছেন মনোমুগ্ধকর দৃশ্য।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার প্রহল্লাদ কুমার কুন্ডু জানান, এ বছর ঈশ্বরদীতে ৩ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। এটি স্বাস্থ্যকর ভোজ্য তেলের অন্যতম উৎস, যা সয়াবিনের বিকল্প হিসেবে ব্যবহারযোগ্য। ১০ কেজি বীজ থেকে প্রায় ৪.৫ কেজি তেল উৎপাদন হয়।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল আলিম বলেন, “পদ্মার চরাঞ্চলের দো-আঁশ মাটি সূর্যমুখী চাষের জন্য আদর্শ। কৃষকদের প্রশিক্ষণ, কীটনাশক সহায়তা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পরিবেশ অনুকূলে থাকলে এ অঞ্চলে সূর্যমুখী চাষ আরও বাড়বে।”

সরকারি সহায়তা ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহারে সূর্যমুখী চাষ ঈশ্বরদীর কৃষকদের জন্য সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচন করছে। সৌন্দর্য ও অর্থনৈতিক লাভ একসঙ্গে এনে কৃষকদের জীবনে নতুন আশার আলো যোগ করছে এই সোনালি ফুল।