ঢাকা ১০:৫৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির বাণী

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২৭:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ ডিসেম্বর ২০১৫
  • ৩৬৪ বার

রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :

“মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘বেগম রোকেয়া দিবস, ২০১৫’ উদ্যাপন ও ‘বেগম রোকেয়া পদক, ২০১৫’ প্রদান বাংলাদেশের নারী উন্নয়নে একটি প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। এ দিবসে আমি নারী জাগরণ, সমাজ সংস্কার ও নারী শিক্ষার অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।

ধর্মীয় গোঁড়ামি, রক্ষণশীলতার কূপম-ূকতা ও অশিক্ষার অভিশাপ থেকে নারীদের মুক্ত করতে বেগম রোকেয়া অনন্যসাধারণ ভূমিকা পালন করেন। তাঁর ক্ষুরধার লেখনিতে নারীর অধিকার, শিক্ষা এবং বঞ্চনার বিরুদ্ধে উচ্চারিত আহ্বান তৎকালীন নারী সমাজকে জাগিয়ে তোলে। ক্ষণজন্মা এই মহীয়সী নারী তাঁর জীবনের অধিকাংশ সময় ব্যয় করেছিলেন এই উপমহাদেশের অবহেলিত, নির্যাতিত ও অসহায় নারীদের উন্নয়নে। নারীর উন্নয়নে বেগম রোকেয়ার অবদান জাতি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে।

বর্তমান সরকারের ‘রূপকল্প ২০২১’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় নারীর সম-অধিকার, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্তকরণের লক্ষ্যে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। নারী ও শিশুর অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে সরকার পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন-২০১০, এসিড নিয়ন্ত্রণ (সংশোধন) আইন-২০১০, জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি-২০১১, জাতীয় শিশুনীতি-২০১১, ভবঘুরে ও নিরাশ্রয় ব্যক্তিদের পুনর্বাসন আইন-২০১১, জাতীয় শিশু আইন-২০১৩ ও নারী উন্নয়ন নীতিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। এসব আইন ও নীতিমালা সমাজের কলুষতা, বহুবিবাহ, যৌতুক, নারী নির্যাতন এবং কন্যা শিশুর প্রতি অবহেলা ও প্রবঞ্চনা দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তবে কেবল আইন করে নয়, নারী ও কন্যা শিশুর প্রতি সমাজের বিশেষত পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনই একটি নারী ও শিশুবান্ধব সমাজ গড়তে পারে।

বেগম রোকেয়ার আদর্শকে নারী শিক্ষা ও উন্নয়নের কৌশল হিসেবে ধারণ করার ফলে বর্তমানে দেশে নারী শিক্ষার প্রসার হয়েছে। এমডিজির লক্ষ্যমাত্রা পূরণের সময়সীমার পূর্বেই সরকার দারিদ্র্য বিমোচন এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে জেন্ডার সমতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। আমার বিশ্বাস বেগম রোকেয়ার জীবন ও দর্শন থেকে নারী সমাজ দীক্ষা নিয়ে নিজেদের উন্নয়নের পাশাপাশি জাতীয় উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। এ বছর যাঁরা নারী ও সমাজ উন্নয়নে অনবদ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বেগম রোকেয়া পদকে ভূষিত হয়েছেন আমি তাঁদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

আমি ‘বেগম রোকেয়া দিবস, ২০১৫’ উদ্যাপন উপলক্ষে গৃহীত কর্মসূচির সাফল্য কামনা করি।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির বাণী

আপডেট টাইম : ১১:২৭:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ ডিসেম্বর ২০১৫

রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :

“মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘বেগম রোকেয়া দিবস, ২০১৫’ উদ্যাপন ও ‘বেগম রোকেয়া পদক, ২০১৫’ প্রদান বাংলাদেশের নারী উন্নয়নে একটি প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। এ দিবসে আমি নারী জাগরণ, সমাজ সংস্কার ও নারী শিক্ষার অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।

ধর্মীয় গোঁড়ামি, রক্ষণশীলতার কূপম-ূকতা ও অশিক্ষার অভিশাপ থেকে নারীদের মুক্ত করতে বেগম রোকেয়া অনন্যসাধারণ ভূমিকা পালন করেন। তাঁর ক্ষুরধার লেখনিতে নারীর অধিকার, শিক্ষা এবং বঞ্চনার বিরুদ্ধে উচ্চারিত আহ্বান তৎকালীন নারী সমাজকে জাগিয়ে তোলে। ক্ষণজন্মা এই মহীয়সী নারী তাঁর জীবনের অধিকাংশ সময় ব্যয় করেছিলেন এই উপমহাদেশের অবহেলিত, নির্যাতিত ও অসহায় নারীদের উন্নয়নে। নারীর উন্নয়নে বেগম রোকেয়ার অবদান জাতি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে।

বর্তমান সরকারের ‘রূপকল্প ২০২১’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় নারীর সম-অধিকার, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্তকরণের লক্ষ্যে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। নারী ও শিশুর অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে সরকার পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন-২০১০, এসিড নিয়ন্ত্রণ (সংশোধন) আইন-২০১০, জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি-২০১১, জাতীয় শিশুনীতি-২০১১, ভবঘুরে ও নিরাশ্রয় ব্যক্তিদের পুনর্বাসন আইন-২০১১, জাতীয় শিশু আইন-২০১৩ ও নারী উন্নয়ন নীতিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। এসব আইন ও নীতিমালা সমাজের কলুষতা, বহুবিবাহ, যৌতুক, নারী নির্যাতন এবং কন্যা শিশুর প্রতি অবহেলা ও প্রবঞ্চনা দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তবে কেবল আইন করে নয়, নারী ও কন্যা শিশুর প্রতি সমাজের বিশেষত পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনই একটি নারী ও শিশুবান্ধব সমাজ গড়তে পারে।

বেগম রোকেয়ার আদর্শকে নারী শিক্ষা ও উন্নয়নের কৌশল হিসেবে ধারণ করার ফলে বর্তমানে দেশে নারী শিক্ষার প্রসার হয়েছে। এমডিজির লক্ষ্যমাত্রা পূরণের সময়সীমার পূর্বেই সরকার দারিদ্র্য বিমোচন এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে জেন্ডার সমতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। আমার বিশ্বাস বেগম রোকেয়ার জীবন ও দর্শন থেকে নারী সমাজ দীক্ষা নিয়ে নিজেদের উন্নয়নের পাশাপাশি জাতীয় উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। এ বছর যাঁরা নারী ও সমাজ উন্নয়নে অনবদ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বেগম রোকেয়া পদকে ভূষিত হয়েছেন আমি তাঁদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

আমি ‘বেগম রোকেয়া দিবস, ২০১৫’ উদ্যাপন উপলক্ষে গৃহীত কর্মসূচির সাফল্য কামনা করি।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”