হাওর বার্তা ডেস্কঃ শুকনো মৌসুমে করিমগঞ্জের চামড়াঘাট ও বালিখলা হয়ে চং-নোয়াগাঁও থেকে মিঠামইন সড়কে প্রতিদিন শত শত মানুষ মোটর সাইকেল ও অন্যান্য যানবাহনে চলাচল করেন। কিন্তু গোপদিঘী ইউনিয়নের হাসানপুর গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া গড়াভাঙ্গা নদীতে সেতু না থাকায় সড়ক যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন ছিল।
এই সড়কে চলাচলকারী মানুষ এমনকি মোটর সাইকেলের মত হালকা যানকেও ঝুঁকি নিয়ে খেয়ানৌকায় করে নদীটি পার হতে হয়। খেয়া পারাপারে দুর্ভোগ আর ভোগান্তির কারণে নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগে মিঠামইনবাসীর ‘দুঃখ’ হয়ে ওঠে গড়াভাঙ্গা নদীটি।
এবার সড়ক যোগাযোগ নিয়ে মিঠামইনবাসীর সেই দুঃখ ঘুচেছে। নদীর উপর নির্মাণ করা হয়েছে ১৫৬.৭২ মিটার দীর্ঘ একটি সেতু। ২৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নবনির্মিত দৃষ্টিনন্দন এই সেতুটি বর্ষা মৌসুমে নজর কেড়েছে দর্শনার্থীদের। প্রতিদিন হাসানপুর সেতুটিতে ভীড় জমাতেন হাজারো মানুষ।
বহুল আকাঙ্ক্ষিত এই সেতুটি জন ও যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। শনিবার (২৩ নভেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে নবনির্মিত এই সেতুটির উদ্বোধন করেছেন কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক।
দুপুরে প্রধান অতিথি হিসেবে ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে তিনি সেতুটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধন শেষে দোয়া ছাড়াও এ উপলক্ষে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
কিশোরগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশেদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আলী নূর খান, মিঠামইন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকির রব্বানী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সমীর কুমার বৈষ্ণব, ইটনা উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট খলিলুর রহমান, গোপদীঘি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আসাদ আলী মাস্টার, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক গোলাপ মিয়া, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসান উল্লাহ প্রমুখ।
এ সময় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
২০১৭ সালের ২৯ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুটির নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেছিলেন রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক এমপি। সেতু ছাড়াও সেখানে ১.১৭ কিলোমিটার অলওয়েদার সড়ক ও ১.৬৫ কিলোমিটার সাবমার্চেবল সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হাওর উপজেলা মিঠামইনের সঙ্গে কিশোরগঞ্জ জেলা সদরের সড়কপথে যোগাযোগ নিরবচ্ছিন্ন করার লক্ষ্যে সেতু ও সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়েছিল। প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ায় এই সড়কে চলাচলকারী মানুষের দুর্ভোগ ও ভোগান্তি কমবে এবং সহজে জেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা সম্ভবপর হবে।