সর্বাধিক ঝুঁকিতে জলাভূমির পাখি
-
Reporter Name
-
আপডেট টাইম :
১০:৪৬:৪৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৫
-
৬
বার
বাংলাদেশ পাখি বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ হলেও দিনকে দিন দেশে পাখির বৈচিত্র্য কমছে। পাখির আবাসস্থল নষ্ট হওয়া, মনুষ্য শিকারসহ নানা কারণে ঝুঁকিতে রয়েছে এসব পাখি। এর মধ্যে সর্বাধিক ঝুঁকিতে আছে দেশের জলাভূমিকেন্দ্রিক পাখিরা। গত ১ জানুয়ারি বায়ো রিসার্চ কমিউনিকেশন নামে আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত গঙ্গা অববাহিকার এলাকার পাখিদের নিয়ে করা এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
গবেষণাটিতে বাংলাদেশের ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলা এলাকার পাখিদের বৈচিত্র্য, তাদের গঠন, বাসস্থান ব্যবহারের ধরন, মৌসুমভিত্তিক পরিবর্তন, পাখিদের ঝুঁকি এবং সংরক্ষণ বিষয়টি দেখা হয়েছে। গবেষণাটি ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত বছরব্যাপী পরিচালিত হয়। গবেষণাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে করা হয়। গবেষণায় নগর, গ্রামীণ, নগর ও গ্রামের মাঝামাঝি এলাকায় নিয়ে পরিচালিত হয়।
এর মধ্যে জলাভূমিকেন্দ্রিক আবাসস্থল আছে, এমন পাখিগুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। গবেষণায় ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় ১৫৩ প্রজাতির পাখির সন্ধান মেলে। এর মধ্যে গ্রামীণ বন ও জলাভূমিকেন্দ্রিক এলাকাগুলোতে পাখির প্রজাতির সংখ্যা বেশি পাওয়া যায়। এই এলাকাগুলোতে ১৩৬ প্রজাতির পাখি পাওয়া গেছে।
গবেষণাটিতে পাখিদের বাসস্থানের বৈচিত্র্য দেখা যায়। মানুষের বাসাবাড়ির পাশে যে বাগান বা গাছপালা রয়েছে, সেখানে সর্বাধিক প্রজাতির পাখি এখনো বাসা বাঁধে। এখানে ৮৮ প্রজাতির পাখি পাওয়া গেছে। আর জলাভূমিকে কেন্দ্র করে ৫৫ প্রজাতির পাখি বাস করে।মৌসুমভেদে এই এলাকায় শীতকালে সবচেয়ে বেশি প্রজাতির পাখি দেখা যায়।
শীতকালে মৌসুমি পাখির আগমনে বেশি প্রজাতির পাখি পাওয়া গেছে বলে গবেষণায় বলা হয়। এই এলাকায় শীতকালে ১৪৮ প্রজাতির পাখি, গরমকালে ৯৭ প্রজাতির পাখি আর বর্ষাকালে ৮৭ প্রজাতির পাখি দেখা গেছে। গবেষণাটিতে আরো উঠে এসেছে গঙ্গা প্লাবনভূমি এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় অন্যান্য এলাকার তুলনায় এই এলাকায় পাখির প্রজাতির সংখ্যা বেশ সমৃদ্ধ।গবেষণাটিতে জলাভূমিকেন্দ্রিক পাখিগুলো সর্বাধিক ঝুঁকিতে আছে বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর কারণ হিসেবে পাখি শিকার ও জলাভূমির ক্ষতিকে চিহ্নিত করা হয়। পাশাপাশি শীতকালে এই জলাভূমিকেন্দ্রিক পাখিগুলো সর্বাধিক শিকারের ঝুঁকিতে আছে বলে গবেষণায় চিহ্নিত করা হয়েছে। গবেষণাটির প্রধান গবেষক আশিকুর রহমান সমী বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন জলাভূমিকেন্দ্রিক পাখি সংরক্ষণে গুরুত্ব দিতে হবে। আবাসস্থল রক্ষা এবং অবৈধ শিকার বন্ধ না হলে আমরা হারিয়ে ফেলব আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অন্যতম নিয়ামককে।’
Tag :