ঢাকা ০৮:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫, ১৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মঙ্গল শোভাযাত্রায় আবু সাঈদের ‘ভাস্কর্য’ চায় না পরিবার

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১২:৪৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫
  • ৯ বার

নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের ২০ ফুট ‘ভাস্কর্য’ রাখার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর শোভাযাত্রায় আবু সাঈদের ‘ভাস্কর্য’ না রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তার পরিবার।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় এ তথ্য জানিয়েছেন আবু সাঈদের মেজো ভাই আবু হোসেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা মঙ্গল শোভাযাত্রায় আবু সাঈদের ভাস্কর্য চাই না, ভাস্কর্যের পক্ষে আমরা নই। ইতোমধ্যে ওর বন্ধু-বান্ধবরা এসব নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করে প্রতিবাদ করছে। ফেসবুকে দেখে আমিও তাদের প্রতিবাদে সম্মতি জানিয়েছি যে, আমরা ভাস্কর্য চাই না।’

আবু হোসেন আরও জানান, ‘আমি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে ফোন দিয়েছিলাম, উপদেষ্টার পিএসের সাথে কথা বলেছি, তিনি বলেছেন তারা এটা বাস্তবায়ন করছে না, এটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে আয়োজন করছে। আমার সেখানে কোন যোগাযোগের এক্সেস নেই, তারপরেও আমি তাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি, যেন তারা এটা না করেন।’

এর আগে গত বছরের ৯ আগস্ট এক বিবৃতিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (রেবোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদের ‘ভাস্কর্য’ না বানানোর অনুরোধ জানান তার পিতা মকবুল হোসেন।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজাহারুল ইসলাম শেখ জানান, আবু সাঈদের ২০ ফুট দীর্ঘ একটি ভাস্কর্য থাকার বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রাথমিক কাজ হিসেবে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে, কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়।

আবু সাঈদের পরিবারের সম্মতি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কমিটি গঠন করা হয়েছে, তারা তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করবেন। নববর্ষের শোভাযাত্রায় এই আয়োজন জুলাই আন্দোলনের চেতনা তুলে ধরার জন্য বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, বাংলা নববর্ষ বা পয়লা বৈশাখে কয়েক দশক ধরে চলছে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’। চারুকলা ১৯৮৯ সাল থেকে পহেলা বৈশাখে শোভাযাত্রা করে আসছে।

শুরুতে নাম ছিল আনন্দ শোভাযাত্রা। নব্বইয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের পটভূমিতে অমঙ্গলকে দূর করে মঙ্গলের আহ্বানের মর্মধারণে এর নাম হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা।

২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর জাতিসংঘের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ‘বিশ্বের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের’ তালিকাভুক্ত করে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মঙ্গল শোভাযাত্রায় আবু সাঈদের ‘ভাস্কর্য’ চায় না পরিবার

আপডেট টাইম : ১১:১২:৪৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫

নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের ২০ ফুট ‘ভাস্কর্য’ রাখার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর শোভাযাত্রায় আবু সাঈদের ‘ভাস্কর্য’ না রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তার পরিবার।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় এ তথ্য জানিয়েছেন আবু সাঈদের মেজো ভাই আবু হোসেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা মঙ্গল শোভাযাত্রায় আবু সাঈদের ভাস্কর্য চাই না, ভাস্কর্যের পক্ষে আমরা নই। ইতোমধ্যে ওর বন্ধু-বান্ধবরা এসব নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করে প্রতিবাদ করছে। ফেসবুকে দেখে আমিও তাদের প্রতিবাদে সম্মতি জানিয়েছি যে, আমরা ভাস্কর্য চাই না।’

আবু হোসেন আরও জানান, ‘আমি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে ফোন দিয়েছিলাম, উপদেষ্টার পিএসের সাথে কথা বলেছি, তিনি বলেছেন তারা এটা বাস্তবায়ন করছে না, এটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে আয়োজন করছে। আমার সেখানে কোন যোগাযোগের এক্সেস নেই, তারপরেও আমি তাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি, যেন তারা এটা না করেন।’

এর আগে গত বছরের ৯ আগস্ট এক বিবৃতিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (রেবোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদের ‘ভাস্কর্য’ না বানানোর অনুরোধ জানান তার পিতা মকবুল হোসেন।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজাহারুল ইসলাম শেখ জানান, আবু সাঈদের ২০ ফুট দীর্ঘ একটি ভাস্কর্য থাকার বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রাথমিক কাজ হিসেবে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে, কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়।

আবু সাঈদের পরিবারের সম্মতি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কমিটি গঠন করা হয়েছে, তারা তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করবেন। নববর্ষের শোভাযাত্রায় এই আয়োজন জুলাই আন্দোলনের চেতনা তুলে ধরার জন্য বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, বাংলা নববর্ষ বা পয়লা বৈশাখে কয়েক দশক ধরে চলছে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’। চারুকলা ১৯৮৯ সাল থেকে পহেলা বৈশাখে শোভাযাত্রা করে আসছে।

শুরুতে নাম ছিল আনন্দ শোভাযাত্রা। নব্বইয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের পটভূমিতে অমঙ্গলকে দূর করে মঙ্গলের আহ্বানের মর্মধারণে এর নাম হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা।

২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর জাতিসংঘের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ‘বিশ্বের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের’ তালিকাভুক্ত করে।