ঢাকা ১১:৩৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাবরকে বরণের অপেক্ষায় হাওরাঞ্চলে সাজ সাজ রব

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৪৫:৩৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫
  • ২৭ বার

নিজাম (নেত্রকোনা) প্রতিনিধিঃ শেষ হচ্ছে লুৎফুজ্জামান বাবরের কারাগারের ১৭ বছরের অধিক সময়ের বন্দি জীবন। ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলাসহ সবগুলো মামলায় খালাস পাওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার তাঁর বন্দী জীবন শেষ হচ্ছে।

সর্বশেষ ১৪ জানুয়ারি ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনায় অস্ত্র আইনের মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ পাঁচজনকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর ২টায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার (কেরানীগঞ্জ) থেকে মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে সাবেক এই স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর।

আর এই সংবাদ শোনার পরপরই তার নিজ জেলা নেত্রকোনা ও নির্বাচনী এলাকা মদন, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরীতে নেতা কর্মীদের মধ্যে বয়ে যাচ্ছে আনন্দের ধারা। ভাটিবাংলার জনপ্রিয় নেতা লুৎফুজ্জামান বাবরকে বরণ করতে নেত্রকোনার সর্বত্র তোরণ-গেট তৈরিসহ নানা সাজে সেজেছে। তাঁর নিজ উপজেলা মদনে শহর থেকে গ্রাম সর্বত্র তৈরি করা হয়েছে নানা রঙের তোরণ-গেট। এছাড়া মদনসহ তাঁর নির্বাচনী এলাকা মোহনগঞ্জ -খালিয়াজুরীতেও তোরণ তৈরিসহ নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।

অধীর আগ্রহে হাওরপাড়ের লাখো মানুষ তাদের প্রিয় নেতার মুক্তির অপেক্ষায় ক্ষণ গণনা শুরু করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীসহ সাধারণ জনগণ।

নেতাকে বরণ করে নেওয়ার জন্য পুরোদমে শুরু হয়েছে নানা রকম আয়োজন। মদন-নেত্রকোনা সড়কে স্থাপন করা হচ্ছে বিভিন্ন রকমের তোরণ ব্যানার-ফেস্টুন। নেতার আগমনে যেন নতুন এক প্রাণের সঞ্চার হয়েছে পুরো জেলাজুড়ে।

বাবরের মুক্তির খবর পেয়ে আজ তাঁর নির্বাচনী এলাকা মদন, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরীসহ পুরো জেলার কয়োক লাখ মানুষ গত রাতেই ঢাকা উদ্দেশে রওনা হয়েছে। সকাল থেকেই তারা কেরানীগঞ্জ কারাগারের সামনের এলাকায় অবস্থান নিয়েছে বলে জানা গেছে।

এর আগে, লুৎফুজ্জামান বাবর সব মামলা থেকে বেকসুর খালাস পাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলা শহরে আনন্দ মিছিল বের করেন নেতাকর্মীরা। মিছিল হয়েছে বাবরের নিজ উপজেলা মদনে।

স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ বলছেন, লুৎফুজ্জামান বাবর সংসদ সদস্য ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন নিজ নির্বাচনী এলাকা মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরী ও মদন উপজেলাসহ জেলার সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। যে কারণে তিনি জেলাবাসীর কাছে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন।

নেত্রকোনার হাওরবেষ্টিত তিনটি উপজেলা, মদন, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরী। এই তিন উপজেলা নিয়ে গঠিত নেত্রকোনা-৪ আসন। এ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। হাওরবেষ্টিত জনপদের সাধারণ মানুষের কাছে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়।

লুৎফুজ্জামান বাবর ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীক নিয়ে নেত্রকোনা-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নেত্রকোনা-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারে তিনি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

২০০৭ সালের ২৮ মে আটক হন লুৎফুজ্জামান বাবর। এরপর বিভিন্ন মামলায় তার দণ্ড হয়। এর মধ্যে দুটি মামলায় তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ হয় এবং একটিতে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের সরকার পতন হওয়ার পর এসব মামলার আপিল শুনানি শেষে একে একে খালাস পান বাবর। এর মধ্যে গত ২৩ অক্টোবর দুর্নীতির মামলায় ৮ বছরের দণ্ড থেকে এবং ১ ডিসেম্বর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা থেকে খালাস পান তিনি। ২১ আগস্টের মামলায়ও বাবরকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন বিচারক আদালত।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

বাবরকে বরণের অপেক্ষায় হাওরাঞ্চলে সাজ সাজ রব

আপডেট টাইম : ১২:৪৫:৩৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫

নিজাম (নেত্রকোনা) প্রতিনিধিঃ শেষ হচ্ছে লুৎফুজ্জামান বাবরের কারাগারের ১৭ বছরের অধিক সময়ের বন্দি জীবন। ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলাসহ সবগুলো মামলায় খালাস পাওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার তাঁর বন্দী জীবন শেষ হচ্ছে।

সর্বশেষ ১৪ জানুয়ারি ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনায় অস্ত্র আইনের মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ পাঁচজনকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর ২টায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার (কেরানীগঞ্জ) থেকে মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে সাবেক এই স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর।

আর এই সংবাদ শোনার পরপরই তার নিজ জেলা নেত্রকোনা ও নির্বাচনী এলাকা মদন, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরীতে নেতা কর্মীদের মধ্যে বয়ে যাচ্ছে আনন্দের ধারা। ভাটিবাংলার জনপ্রিয় নেতা লুৎফুজ্জামান বাবরকে বরণ করতে নেত্রকোনার সর্বত্র তোরণ-গেট তৈরিসহ নানা সাজে সেজেছে। তাঁর নিজ উপজেলা মদনে শহর থেকে গ্রাম সর্বত্র তৈরি করা হয়েছে নানা রঙের তোরণ-গেট। এছাড়া মদনসহ তাঁর নির্বাচনী এলাকা মোহনগঞ্জ -খালিয়াজুরীতেও তোরণ তৈরিসহ নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।

অধীর আগ্রহে হাওরপাড়ের লাখো মানুষ তাদের প্রিয় নেতার মুক্তির অপেক্ষায় ক্ষণ গণনা শুরু করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীসহ সাধারণ জনগণ।

নেতাকে বরণ করে নেওয়ার জন্য পুরোদমে শুরু হয়েছে নানা রকম আয়োজন। মদন-নেত্রকোনা সড়কে স্থাপন করা হচ্ছে বিভিন্ন রকমের তোরণ ব্যানার-ফেস্টুন। নেতার আগমনে যেন নতুন এক প্রাণের সঞ্চার হয়েছে পুরো জেলাজুড়ে।

বাবরের মুক্তির খবর পেয়ে আজ তাঁর নির্বাচনী এলাকা মদন, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরীসহ পুরো জেলার কয়োক লাখ মানুষ গত রাতেই ঢাকা উদ্দেশে রওনা হয়েছে। সকাল থেকেই তারা কেরানীগঞ্জ কারাগারের সামনের এলাকায় অবস্থান নিয়েছে বলে জানা গেছে।

এর আগে, লুৎফুজ্জামান বাবর সব মামলা থেকে বেকসুর খালাস পাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলা শহরে আনন্দ মিছিল বের করেন নেতাকর্মীরা। মিছিল হয়েছে বাবরের নিজ উপজেলা মদনে।

স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ বলছেন, লুৎফুজ্জামান বাবর সংসদ সদস্য ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন নিজ নির্বাচনী এলাকা মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরী ও মদন উপজেলাসহ জেলার সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। যে কারণে তিনি জেলাবাসীর কাছে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন।

নেত্রকোনার হাওরবেষ্টিত তিনটি উপজেলা, মদন, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরী। এই তিন উপজেলা নিয়ে গঠিত নেত্রকোনা-৪ আসন। এ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। হাওরবেষ্টিত জনপদের সাধারণ মানুষের কাছে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়।

লুৎফুজ্জামান বাবর ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীক নিয়ে নেত্রকোনা-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নেত্রকোনা-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারে তিনি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

২০০৭ সালের ২৮ মে আটক হন লুৎফুজ্জামান বাবর। এরপর বিভিন্ন মামলায় তার দণ্ড হয়। এর মধ্যে দুটি মামলায় তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ হয় এবং একটিতে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের সরকার পতন হওয়ার পর এসব মামলার আপিল শুনানি শেষে একে একে খালাস পান বাবর। এর মধ্যে গত ২৩ অক্টোবর দুর্নীতির মামলায় ৮ বছরের দণ্ড থেকে এবং ১ ডিসেম্বর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা থেকে খালাস পান তিনি। ২১ আগস্টের মামলায়ও বাবরকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন বিচারক আদালত।