ঢাকা ০৬:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রুশ তেল খাতে ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:৪৪:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৪ বার
বাইডেন প্রশাসন রাশিয়ার বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত সবচেয়ে কঠোর কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, যা ইউক্রেনে মস্কোর যুদ্ধের তহবিলকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে তৈরি করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞাগুলো দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে লক্ষ্যবস্তু করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ব্যবসায়ী, কর্মকর্তা, বীমা কম্পানি ও শত শত তেলবাহী জাহাজ।

এ ছাড়া ইউক্রেনে মস্কোর পূর্ণমাত্রার আক্রমণের পর প্রথমবারের মতো যুক্তরাজ্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গ্যাজপ্রম নেফট ও সারগুটনেফটেগ্যাস জ্বালানি কম্পানির ওপর সরাসরি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেন, ‘রাশিয়ার তেল কম্পানিগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ পুতিনের যুদ্ধ তহবিলকে শুকিয়ে দেবে—আর পুতিনের হাত থেকে প্রতিটি রুবল কেড়ে নেওয়া মানে ইউক্রেনীয়দের জীবন রক্ষা করা।

শুক্রবার মার্কিন ট্রেজারি ঘোষিত কিছু পদক্ষেপ আইনে পরিণত হবে, যার মানে আগত ট্রাম্প প্রশাসন যদি এগুলো প্রত্যাহার করতে চায়, তবে তাদের কংগ্রেসকে সম্পৃক্ত করতে হবে। ওয়াশিংটন রাশিয়ার জ্বালানি কিনতে যাদের আইনি অনুমতি আছে তাদের সংখ্যা কঠোরভাবে সীমিত করার পাশাপাশি মস্কোর ‘ছায়া নৌবহর’কে টার্গেট করছে, যেগুলো সারা বিশ্বে তেল পরিবহন করে।

মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন বলেন, এই পদক্ষেপগুলো রাশিয়ার তেল বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত শিপিং ও আর্থিক সহায়তাকে নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। এ ছাড়া রুশ নেতা ভ্লাদিমির পুতিন ‘কঠিন পরিস্থিতির’ মধ্যে রয়েছেন উল্লেখ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘তিনি যে ভীষণ ভয়াবহ কাজগুলো চালিয়ে যাচ্ছেন, সেগুলো করার কোনো সুযোগ তাকে দেওয়া উচিত নয়।

সম্ভাব্যভাবে (যুক্তরাষ্ট্রে) গ্যাসের দাম গ্যালনপ্রতি তিন থেকে চার সেন্ট পর্যন্ত বাড়তে পারে।’বাইডেন আরো বলেছেন, এই পদক্ষেপগুলো রুশ অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির ওপর ‘গভীর প্রভাব’ ফেলবে। অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের ‘দ্বিপক্ষীয় সমর্থনের’ জন্য ধন্যবাদ জানান।

ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে তেলের ওপর মূল্যসীমা আরোপ ছিল রাশিয়ার জ্বালানি রপ্তানি সীমিত করার প্রধান পদক্ষেপগুলোর একটি।

কিন্তু আটলান্টিক কাউন্সিলের গ্লোবাল এনার্জি সেন্টারের ওলগা খাকোভার ব্যাখ্যা অনুযায়ী, এটি কার্যকারিতা হারিয়েছিল। কারণ বাজারে রাশিয়ার তেলের সরবরাহ কমে যাওয়ার ঝুঁকি এড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। বৈশ্বিক অর্থনীতিতে সরবরাহ কমে যাওয়ার প্রভাব নিয়ে উদ্বেগের কারণে এ রকম হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন তেলের বাজার আগের চেয়ে স্থিতিশীল।আটলান্টিক কাউন্সিলের ড্যানিয়েল ফ্রিড বলেন, ‘মার্কিন তেল উৎপাদন (ও রপ্তানি) রেকর্ড উচ্চতায় এবং বেড়েই চলেছে।

তাই রাশিয়ার তেল বাজার থেকে সরিয়ে নেওয়ার প্রভাব তেমন গুরুতর হবে না, আজকের নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য। মার্কিন সরকার রুশ তেল খাতের ওপর বড় ধরনের আঘাত হেনেছে, যা হয়তো একটি চূড়ান্ত আঘাতে পরিণত হতে পারে।’ইউক্রেনে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত জন হার্বস্ট জানান, পদক্ষেপগুলো ‘চমৎকার’, তবে এগুলোর বাস্তবায়ন হবে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘এর মানে, এই পদক্ষেপগুলো রুশ অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারবে কিনা, তা নির্ধারণ করবে ট্রাম্প প্রশাসন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

রুশ তেল খাতে ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের

আপডেট টাইম : ০৫:৪৪:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫
বাইডেন প্রশাসন রাশিয়ার বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত সবচেয়ে কঠোর কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, যা ইউক্রেনে মস্কোর যুদ্ধের তহবিলকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে তৈরি করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞাগুলো দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে লক্ষ্যবস্তু করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ব্যবসায়ী, কর্মকর্তা, বীমা কম্পানি ও শত শত তেলবাহী জাহাজ।

এ ছাড়া ইউক্রেনে মস্কোর পূর্ণমাত্রার আক্রমণের পর প্রথমবারের মতো যুক্তরাজ্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গ্যাজপ্রম নেফট ও সারগুটনেফটেগ্যাস জ্বালানি কম্পানির ওপর সরাসরি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেন, ‘রাশিয়ার তেল কম্পানিগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ পুতিনের যুদ্ধ তহবিলকে শুকিয়ে দেবে—আর পুতিনের হাত থেকে প্রতিটি রুবল কেড়ে নেওয়া মানে ইউক্রেনীয়দের জীবন রক্ষা করা।

শুক্রবার মার্কিন ট্রেজারি ঘোষিত কিছু পদক্ষেপ আইনে পরিণত হবে, যার মানে আগত ট্রাম্প প্রশাসন যদি এগুলো প্রত্যাহার করতে চায়, তবে তাদের কংগ্রেসকে সম্পৃক্ত করতে হবে। ওয়াশিংটন রাশিয়ার জ্বালানি কিনতে যাদের আইনি অনুমতি আছে তাদের সংখ্যা কঠোরভাবে সীমিত করার পাশাপাশি মস্কোর ‘ছায়া নৌবহর’কে টার্গেট করছে, যেগুলো সারা বিশ্বে তেল পরিবহন করে।

মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন বলেন, এই পদক্ষেপগুলো রাশিয়ার তেল বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত শিপিং ও আর্থিক সহায়তাকে নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। এ ছাড়া রুশ নেতা ভ্লাদিমির পুতিন ‘কঠিন পরিস্থিতির’ মধ্যে রয়েছেন উল্লেখ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘তিনি যে ভীষণ ভয়াবহ কাজগুলো চালিয়ে যাচ্ছেন, সেগুলো করার কোনো সুযোগ তাকে দেওয়া উচিত নয়।

সম্ভাব্যভাবে (যুক্তরাষ্ট্রে) গ্যাসের দাম গ্যালনপ্রতি তিন থেকে চার সেন্ট পর্যন্ত বাড়তে পারে।’বাইডেন আরো বলেছেন, এই পদক্ষেপগুলো রুশ অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির ওপর ‘গভীর প্রভাব’ ফেলবে। অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের ‘দ্বিপক্ষীয় সমর্থনের’ জন্য ধন্যবাদ জানান।

ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে তেলের ওপর মূল্যসীমা আরোপ ছিল রাশিয়ার জ্বালানি রপ্তানি সীমিত করার প্রধান পদক্ষেপগুলোর একটি।

কিন্তু আটলান্টিক কাউন্সিলের গ্লোবাল এনার্জি সেন্টারের ওলগা খাকোভার ব্যাখ্যা অনুযায়ী, এটি কার্যকারিতা হারিয়েছিল। কারণ বাজারে রাশিয়ার তেলের সরবরাহ কমে যাওয়ার ঝুঁকি এড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। বৈশ্বিক অর্থনীতিতে সরবরাহ কমে যাওয়ার প্রভাব নিয়ে উদ্বেগের কারণে এ রকম হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন তেলের বাজার আগের চেয়ে স্থিতিশীল।আটলান্টিক কাউন্সিলের ড্যানিয়েল ফ্রিড বলেন, ‘মার্কিন তেল উৎপাদন (ও রপ্তানি) রেকর্ড উচ্চতায় এবং বেড়েই চলেছে।

তাই রাশিয়ার তেল বাজার থেকে সরিয়ে নেওয়ার প্রভাব তেমন গুরুতর হবে না, আজকের নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য। মার্কিন সরকার রুশ তেল খাতের ওপর বড় ধরনের আঘাত হেনেছে, যা হয়তো একটি চূড়ান্ত আঘাতে পরিণত হতে পারে।’ইউক্রেনে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত জন হার্বস্ট জানান, পদক্ষেপগুলো ‘চমৎকার’, তবে এগুলোর বাস্তবায়ন হবে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘এর মানে, এই পদক্ষেপগুলো রুশ অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারবে কিনা, তা নির্ধারণ করবে ট্রাম্প প্রশাসন।