রাতের ঢাকায় ভাসমান পতিতাদের দাপট

সংসদ ভবনের সামনের ফুটপাত প্রতিদিন বিকাল থেকেই সরগরম। সন্ধ্যা হলেই আধো আলো ছায়াতে প্রেমিক-প্রেমিকা যুগলরা অনেকটা ভাবনা চিন্তার একটু বাইরেই চলে যায়। একটু আলোতে আবার দেখা মেলে সাধারণ কিছু মানুষের যারা আসেন মুক্ত হাওয়ায় অজানা শুদ্ধ বাতাসে একটু গল্পে মেতে উঠতে।

সংসদ ভবন এলাকার ফুটপাতকে মোটামুটি ৩ ভাগে ভাগ করা যায়, যার একপ্রান্ত খামার বাড়ি এলাকা থেকে শুরু এবং অন্য প্রান্তের শেষ মানিক মিয়া এভিনিউ এর দিকে। মাঝখানে কিছু জায়গায় দেখা মেলে বেলা শেষে ঘুরতে আসা সাধারণ মানুষ , যারা কিছুটা উন্মুক্ত পরিবেশেই থাকে। আর সংসদের বেড়ার গা ঘেঁসে বসে থাকে প্রেমিক যুগল। তবে খামার বাড়ি থেকে সংসদের দিকে যেতে থাকলেই দেখা মিলবে কতিপয় যুবতী এবং মধ্যবয়স্ক নারী। অনেকটা ভাসমান পতিতা বলেই পরিচিত তারা।

বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান সংসদ ভবনের সামনে খোলামেলা ভাবেই ঘুরে বেড়ায় এসকল ভাসমান পতিতা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা থাকলেও দেখা মেলে না কঠোর পদক্ষেপের। এছাড়া এইসকল ভাসমান পতিতারা মূলত একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এরা যে স্থানে অবস্থান করে, সেখানেই মূলত রিক্সা কিংবা সিএনজির দেখা মিলবেই। কারণ এই সকল রিক্সা কিংবা সিএনজির চালকরাও এই সিন্ডিকেটেই কাজ করে চলছে।

রাজধানীর যেসব স্থানে দিনে হাজার হাজার মানুষের আনাগোনা, সন্ধ্যা নামলেই সেইসব এলাকা ও অলিগলি হয়ে উঠে ভয়ংকর। রাত গভীর হওয়ার সাথে সাথে সেইসব এলাকা হয়ে ওঠে আরও ভয়ংকর।

প্রতিটি মানুষই নিজ নিজ কাজে নিদ্দিষ্ট সময়ে ব্যস্ত থাকেন। কেউ দিনে, আবার কেউ রাতে। রাজধানী ঢাকায়ও দিনে ও রাতে জীবিকা নির্বাহের কাজে ব্যস্ত সময় কাটান সবাই।

ছিনতাইকারী, নেশাকারী ও পুলিশ বাহিনীসহ অনেকেই রাতের ঢাকায় জেগে থাকেন। এদের পাশাপশি আরও একটি অসহায় নারী গোষ্ঠি অন্ধকার গলি, ফুট ওভারব্রিজ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এবং রমনা পার্কে ভেতরে সামান্য টাকায় বিক্রি করেন তাদের দেহ।

মাত্র ১০০-২০০ টাকার বিনিময় এসব অসহায় নারীদের দেহ ভোগ করেন রিশকা ও সিএনজি চালকসহ দেশের অনেক বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ। এদের সঙ্গে অনেক সময় দেখা যায় মাঝ বয়সী পুরুষসহ বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের।
ভাসমান পতিতাদের খপ্পরে পড়ে অনেকেই মোবাইল টাকা খুইয়েছেন। এছাড়া বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষকে।

এদিকে, পলি (ছদ্মনাম) নারী যৌনকর্মী কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, এছাড়া আর কি করবো। এরআগে এক বাসায় কাজ করতাম। ওই বাসার মালিক প্রতিদিন…। এরপর কাজ ছেড়ে দিয়ে এখানে এসেছি। এটা না করলে খাব কি? ছেলে সন্তান নিয়ে চলতে হবে তো।

এছাড়া রাজধানীতে ছিনতাইয়ের জাল বিছিয়ে বসে থাকে ভাসমান পতিতারা। মধ্য রাতে ভাগ ভাগ হয়ে তারা এ কাজটি করে।

এ বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত উপ কমিশনার পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা বলেন, রাজধানীর অপরাধ রোধে পুলিশ যথেষ্ঠ সচেতন রয়েছে এবং সজাগ রয়েছে। অপরাধ দমনে পুলিশ বাহিনী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর