বিয়ের দাবিতে ভৈরব থানায় প্রেমিকার রাতভর অনশন, প্রেমিক হাজতে রয়েছে

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কিশোরগঞ্জের ভৈরবে প্রেমিকা রাতভর থানায় অবস্থান করছে এবং প্রেমিক হাজতে রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ভৈবর বাজার হতে প্রেমিকা-প্রেমিকাকে ভৈরব থানায় সোপার্দ করে জনগন। এরপর থেকে প্রেমিকা থানায় অবস্থান করছেন।

আটককৃত প্রেমিক প্রেমিকা দু’জনই কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী। তারা দুজন হলেন শিমুলকান্দি ইউপি চানপুর গ্রামের আব্দুল হক মিয়ার মেয়ে সাহিদা আক্তার(২১)। সে ভৈরব জিল্লুর রহমান মহিলা কলেজের ইসলাম ও ইতিহাস বিভাগের ২য় বর্ষে ছাত্রী। প্রেমিক মো. রুবেল বেলায়েত (২৩) একই বংশের মো. বাদল মিয়ার ছেলে। সে ভৈরব হাজী আসমত কলেজের রাস্ট্র বিজ্ঞানের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। সম্পর্কে তার চাচাতো ভাই-বোন।

পুলিশ ও আত্মীয় সুত্রে জানা যায়, রুবেল ও সাহিদা দীর্ঘ আট বছর যাবত প্রেম করছে। পারিবারিক ভাবে ছেলে পক্ষ তাদের প্রেমের সম্পর্কে মেনে নেয়নি। মেয়েটির বিয়ে সম্পর্ক আসলেও সব সম্পর্কই ছেলেটির জন্য ছেড়ে দেয়।

ছেলের পরিবার সম্পর্কে মেনে নেবে ভেবেই ছেলেটি মেয়ে সাথে সম্পর্ক ত্যাগ করে। কিন্তু মেয়েটি দীর্ঘদিনের সম্পর্কের ছিন্নতা মেনে নিতে পারে নি। গত ২৮ অক্টোবর মেয়েটি ছেলেটির প্ররোচণায় বিষপান করলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে সাহিদা সুস্থ হয়ে উঠে। গত ২৯ অক্টোবর মেয়েটির সাথে শেষ কথা হয় রুবেলের।

পরবর্তিতে ছেলেটি তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। গতকাল ছেলেটির পরিক্ষার কেন্দ্র জিল্লুর রহমান মহিলা কলেজ হওয়ায় সেখানে পরিক্ষা দিতে আসলে মেয়েটি সেখানে এসে দেখে। কেন প্রতারণা করেছে জানতে চাইলে সেখানে হইচই সৃষ্টি হয়। তখন জনগন স্থানীয় কাউন্সিলর ও পৌর প্যানেল মেয়রের সহযোগীতায় থানায় সোপার্দ করে।

প্রেমিকা সাহিদা জানান, রুবেল আমার সাথে দীর্ঘ আট বছর প্রেম করেছে। আমাকে নানা ভাবে বিয়ের আশ্বাস দিয়েছে। আমার সাথে রাতও কাটিয়েছে। আমি তাকে অনেক ভালবাসি। তার কথায় আমি আমার অনেক বিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছি। সে আমাকে মরতে বলায় আমি বিষও খেয়েছি। বিষ পানের পরের দিন আমাকে ফোনে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে আমার সাথে গত চারমাস যাবত কোন যোগাযোগ করেনি। আমাকে ফেইজবুক, ইমু থেকে ব্লক দিয়েছে। এমন কি আমার নাম্বারও ব্লক দিয়ে রেখেছে।এমন ক্ষতি আমি মেনে নিতে পারছিলাম না। সে ঢাকায় থাকে। পরিক্ষা দিতে ভৈরবে আসলে খরব পেয়ে আমি তার কাছে যাই। তখন লোকজন আমাদের থানায় নিয়ে আসে। আমি চাই সে আমাকে বিয়ে করুক। না হলে আমি তার শাস্তির দাবী জানাই।

অপর দিকে প্রেমিক রুবেল জানায়, আমার সাথে তিন চার বছর আগে সম্পর্ক ছিল। এখন কোন সম্পর্ক নাই। আমি তাকে নিয়ে এক সময় ঘুরেছি তার সাথে প্রেমও করেছি। কিন্তু আমার লেখাপড়া এখনো শেষ হয়নি। আমি নিজের পায়ে দাড়াতে চাই। কিন্তু এখন বিয়ে করতে পারবো না। এমনকি এখন কোন সম্পর্ক নেই বলেও সে দাবী করে।

ভৈরব থানা ওসি তদন্ত বাহলুল খান বাহার জানান, ছেলে-মেয়ে দুই জনই প্রাপ্ত বয়স্ক। তাদের সম্পর্ক ছিল এটাও প্রমাণিত। গতাকল ভৈবর বাজরের লোকজন তাদের থানায় নিয়ে আসে। মেয়েটি রাতভর থানায় অবস্থান করছে। ছেলেটিও আটক রয়েছে। যদি ছেলটি মেয়েটিকে বিয়ে করতে রাজী হয়। তাহলে তাদের দুজনকেই বিয়ে জন্য অভিবাবকদের সোপার্দ করা হবে এবং যদি বিয়ে করতে রাজী না হয়। মেয়ে যদি মামলা করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর