হাওর বার্তা ডেস্কঃ রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার নাজিরদহ গ্রামের ১২৮ বছর বয়সী মনের উদ্দিন নিজেকে দেশের সবচেয়ে প্রবীণ ব্যক্তি হিসেবে দাবি করেন। এই বয়সেও শুধু মনের জোরেই বাঁশের শৌখিন ডালি, কুলা ও ঝুড়ি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। এ বয়সেও অন্যের সাহায্য বা লাঠি ছাড়াই দিব্যি চলাফেরা করতে পারেন। চোখের দৃষ্টি শক্তিও প্রখর। চশমা ব্যবহার করতে হয় না তাকে। বাজারে গিয়ে একাই কেনাকাটাও করেন তিনি।
ছয় পুত্র ও চার কন্যাসন্তানের জনক মনের উদ্দিন। অনেক ঘটনার সাক্ষী তিনি। বৃটিশ আমল, পাকিস্তান আমল দেখেছেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতাও করেছেন। যৌবনে ব্যবসার কারণে সফর করেছেন পার্শ্ববর্তী বেশ কয়েকটি দেশ।
নাজিরদাহ গ্রামে মনের উদ্দিনের নিজবাড়িতে গিয়ে কথা হয় তার সাথে। তিনি শোনালেন তার বর্ণাঢ্য জীবনের নানা কথা। অতীতে জমি-জিরাত সবই ছিল। ব্যবসা ছিল জাঁকজমকপূর্ণ। আশির দশকে করালগ্রাসী তিস্তা নদী তার ভিটেমাটি কেড়ে নেয়। তখন বাধ্য হয়ে শুরু করেন তামাক বাঁধা (আইতেনদারি) দিনমজুরির কাজ। বয়স বাড়ার কারণে ভারি কাজ বাদ দিয়ে মসজিদে মুয়াজ্জিনের চাকরি নেন। এর পাশাপাশি বাঁশের শৌখিন জিনিসপত্র তৈরি করা শুরু করেন।
বর্তমানে ভালই চলছে তার সংসার। রোগ-বালাই তেমন নেই। মাঝে মধ্যে গ্যাস্ট্রিকের এবং দু-একটি ব্যথার টেবলেট খেতে হয়। সকালে হালকা নাস্তা, দুপুরে ভরপেটে ভাত ও রাতে দুধ-রুটি নিয়মিত খান তিনি। জাতীয় পরিচয়পত্রে তার জন্মতারিখ ১০/০৯/১৮৯০ খ্রি.। সে অনুযায়ী তার বর্তমান বয়স ১২৮ বছর ৪ মাস।
হারাগাছ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রকিবুল হাসান পলাশ বলেন, মনের উদ্দিন শুধু কাউনিয়ায় প্রবীণ ব্যক্তি নন, আমার মনে হয় দেশের মধ্যে সবচেয়ে প্রবীণ মানুষ হবেন তিনি।