ঢাকা ০১:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
সাদপন্থীদের নিষিদ্ধ ও বিচারের দাবিতে মদনে আবারও বিক্ষোভ মিছিল পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বর্ডারে দুর্নীতির কারণে ঠেকানো যাচ্ছে না ‘রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ আব্রাম না থাকলে তাকে আমার যোগ্য বলেও মনে করতাম না ওমরাহ শেষে গ্রামে ফিরে খেজুর-জমজমের পানি বিতরণ করল শিশু রিফাত বিদেশে প্রশিক্ষণে ঘুরে-ফিরে একই ব্যক্তি নয়, জুনিয়রদের অগ্রাধিকার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়ে সড়ক ছাড়লেন চিকিৎসকরা রেমিট্যান্সে জোয়ার, ২১ দিনে এলো ২ বিলিয়ন ডলার গণমাধ্যমের পাঠক-দর্শক-শ্রোতার মতামত জরিপ জানুয়ারিতে বুয়েট শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩ আসামি রিমান্ডে বিয়ের আগে পরস্পরকে যে প্রশ্নগুলো করা জরুরি

আত্মহত্যার আগে মাকে যা বলেছিল অরিত্রি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৩৯:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ডিসেম্বর ২০১৮
  • ৩৪৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল ভিকারুননিসা নূন স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রি অধিকারী (১৫)। ফোনে নকল থাকার অভিযোগ তুলে তার বাবা-মাকে ডেকে পাঠায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। সোমবার সকালে তারা স্কুলে যান এবং মেয়ের হয়ে দফায় দফায় ক্ষমা চান। এরপরও প্রিন্সিপাল তাদের অপমান করেন এবং স্কুল থেকে ছাড়পত্র দেওয়ার ঘোষণা দেন।

এতটা অপমান সহ্য করতে পারেনি ছোট্ট অরিত্রি। বাসায় ফিরে সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটেছে সোমবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর শান্তিনগরে সাততলা ভবনের সপ্তম তলায় নিজ ফ্ল্যাটে।

আত্মহত্যার কিছুক্ষণ আগে রাজধানীর ভিকারুননিসা স্কুলের শিক্ষার্থী অরিত্রি অধিকারী (১৫) তার মাকে বলেন, মা এ লজ্জা নিয়ে আমি বাঁচতে চাই না।

এদিকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না দেয়া এবং স্কুলে ডেকে বাবা-মাকে অপমান করায় ছাত্রী অরিত্রি অধিকারী (১৫) আত্মহত্যার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস। তিনি দেশবাসী ও ছাত্রীর বাবা-মায়ের প্রতি ক্ষমা চেয়েছেন।

মঙ্গলবার বেলা ১১টায় স্কুলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি খুব দুঃখজনক ঘটনা, অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে আমাদের একজন ছাত্রীর মৃত্যু হল-সে জন্য আমরা সবাই ক্ষমা প্রার্থী। ছাত্রীর বাবা-মায়ের কাছেও আমি ক্ষমা চাচ্ছি।

অরিত্রির বাবা দিলীপ অধিকারী বলেন, তাঁর মেয়ের পরীক্ষা চলছে। গতকাল রোববার পরীক্ষা চলাকালে শিক্ষক অরিত্রির কাছে মোবাইল ফোন পায়। মোবাইলে নকল করছে-এমন অভিযোগে অরিত্রিকে আজ সোমবার তার বাবা-মাকে নিয়ে স্কুলে যেতে বলা হয়।

দিলীপ অধিকারী অভিযোগ করেন, আজ তিনি স্ত্রী ও অরিত্রিকে নিয়ে স্কুলে যান। তার ছোট মেয়েও একই স্কুলে পড়ে। তাঁরা প্রথমে ভাইস প্রিন্সিপালের কক্ষে যান। কিন্তু ভাইস প্রিন্সিপাল তাঁদের ‘অপমান’ করে কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। আগামীকাল মেয়ের টিসি (স্কুল থেকে দেওয়া ছাড়পত্র) নিয়ে যেতেও বলা হয়। দিলীপ অধিকারী বলেন, এরপর তিনি প্রিন্সিপালের কক্ষে যান। যেখানে স্কুল পরিচালনা পর্ষদের একজন সদস্যও ছিলেন। প্রিন্সিপালও ভাইস প্রিন্সিপালের মতো আচরণ করেন।

দিলীপ অধিকারী বলেন, ওই ঘটনার পর অরিত্রি প্রিন্সিপালের রুম থেকে দৌড়ে বের হয়ে যায়। তারাও তার পিছু নেন। স্কুল থেকে বের হয়ে মেয়ে একাই একটি রিকশায় তাদের শান্তিনগরের বাসায় চলে আসে। পরে তারা ফিরে দেখেন, নিজের ঘরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ঝুলছে অরিত্রির নিথর দেহ। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্বজনরা জানান, দুই বোনের মধ্যে বড় ছিল অরিত্রি। তার ছোট বোন হৃদি অধিকারী একই স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তাদের গ্রামের বাড়ি বরগুনা সদরে।

ঢামেক হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের সহযোগী সোহেল মাহমুদ জানান, প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে মেয়েটি গলায় ফাঁস দিয়েছে। গলায় দাগ ছিল। তার ‘নেক টিস্যু’ সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। পুরো প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিস্তারিত বলা যাবে।

সূত্রঃ বিডি২৪লাইভ

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

সাদপন্থীদের নিষিদ্ধ ও বিচারের দাবিতে মদনে আবারও বিক্ষোভ মিছিল

আত্মহত্যার আগে মাকে যা বলেছিল অরিত্রি

আপডেট টাইম : ০৬:৩৯:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ডিসেম্বর ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল ভিকারুননিসা নূন স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রি অধিকারী (১৫)। ফোনে নকল থাকার অভিযোগ তুলে তার বাবা-মাকে ডেকে পাঠায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। সোমবার সকালে তারা স্কুলে যান এবং মেয়ের হয়ে দফায় দফায় ক্ষমা চান। এরপরও প্রিন্সিপাল তাদের অপমান করেন এবং স্কুল থেকে ছাড়পত্র দেওয়ার ঘোষণা দেন।

এতটা অপমান সহ্য করতে পারেনি ছোট্ট অরিত্রি। বাসায় ফিরে সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটেছে সোমবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর শান্তিনগরে সাততলা ভবনের সপ্তম তলায় নিজ ফ্ল্যাটে।

আত্মহত্যার কিছুক্ষণ আগে রাজধানীর ভিকারুননিসা স্কুলের শিক্ষার্থী অরিত্রি অধিকারী (১৫) তার মাকে বলেন, মা এ লজ্জা নিয়ে আমি বাঁচতে চাই না।

এদিকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না দেয়া এবং স্কুলে ডেকে বাবা-মাকে অপমান করায় ছাত্রী অরিত্রি অধিকারী (১৫) আত্মহত্যার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস। তিনি দেশবাসী ও ছাত্রীর বাবা-মায়ের প্রতি ক্ষমা চেয়েছেন।

মঙ্গলবার বেলা ১১টায় স্কুলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি খুব দুঃখজনক ঘটনা, অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে আমাদের একজন ছাত্রীর মৃত্যু হল-সে জন্য আমরা সবাই ক্ষমা প্রার্থী। ছাত্রীর বাবা-মায়ের কাছেও আমি ক্ষমা চাচ্ছি।

অরিত্রির বাবা দিলীপ অধিকারী বলেন, তাঁর মেয়ের পরীক্ষা চলছে। গতকাল রোববার পরীক্ষা চলাকালে শিক্ষক অরিত্রির কাছে মোবাইল ফোন পায়। মোবাইলে নকল করছে-এমন অভিযোগে অরিত্রিকে আজ সোমবার তার বাবা-মাকে নিয়ে স্কুলে যেতে বলা হয়।

দিলীপ অধিকারী অভিযোগ করেন, আজ তিনি স্ত্রী ও অরিত্রিকে নিয়ে স্কুলে যান। তার ছোট মেয়েও একই স্কুলে পড়ে। তাঁরা প্রথমে ভাইস প্রিন্সিপালের কক্ষে যান। কিন্তু ভাইস প্রিন্সিপাল তাঁদের ‘অপমান’ করে কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। আগামীকাল মেয়ের টিসি (স্কুল থেকে দেওয়া ছাড়পত্র) নিয়ে যেতেও বলা হয়। দিলীপ অধিকারী বলেন, এরপর তিনি প্রিন্সিপালের কক্ষে যান। যেখানে স্কুল পরিচালনা পর্ষদের একজন সদস্যও ছিলেন। প্রিন্সিপালও ভাইস প্রিন্সিপালের মতো আচরণ করেন।

দিলীপ অধিকারী বলেন, ওই ঘটনার পর অরিত্রি প্রিন্সিপালের রুম থেকে দৌড়ে বের হয়ে যায়। তারাও তার পিছু নেন। স্কুল থেকে বের হয়ে মেয়ে একাই একটি রিকশায় তাদের শান্তিনগরের বাসায় চলে আসে। পরে তারা ফিরে দেখেন, নিজের ঘরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ঝুলছে অরিত্রির নিথর দেহ। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্বজনরা জানান, দুই বোনের মধ্যে বড় ছিল অরিত্রি। তার ছোট বোন হৃদি অধিকারী একই স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তাদের গ্রামের বাড়ি বরগুনা সদরে।

ঢামেক হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের সহযোগী সোহেল মাহমুদ জানান, প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে মেয়েটি গলায় ফাঁস দিয়েছে। গলায় দাগ ছিল। তার ‘নেক টিস্যু’ সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। পুরো প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিস্তারিত বলা যাবে।

সূত্রঃ বিডি২৪লাইভ