ঢাকা ০৩:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুর্ঘটনায় প্রাণহানির দায়ে ৫ বছরের কারাদণ্ড বা ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:২০:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  • ৩৫৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ অবহেলা বা বেপরোয়া মোটরযান চালনার কারণে দুর্ঘটনায় প্রাণহানির দায়ে ৫ বছরের করাদন্ড বা ৫ লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ড দন্ডিত করার বিধান রেখে ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ বিল’ সংসদে উত্থাপিত হয়েছে।

একইসঙ্গে প্রানহানির দায়ে অভিযুক্ত ড্রাইভার ও কন্ডাক্টরের অপরাধ জামিনযোগ্য নয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া দুর্ঘটনাজনিত অন্যান্য অপরাধ আপোষ মিমাংসার জন্য পুলিশকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে সংসদের ২২তম অধিবেশনের গতকাল বৃহস্পতিবারের বৈঠকে বিলটি উত্থাপন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পরে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বিলটি সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে প্রেরণ করা হয়।

সেই বিলে বলা হয়, লাইসেন্স ছাড়া কোন ব্যক্তি গণপরিবহনে কন্ডাক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে না। শ্রম আইন অনুযায়ী নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান চুক্তিছাড়া কাউকে কন্ডাক্টও নিয়োগ করতে পারবেনা। গণপরিবহন পরিচালনার জন্য সরকারি গেজেট দ্বারা প্রতিটি মহানগর, বিভাগ এবং জেলায় একটি করে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন কমিটি গঠিত হবে। কমিটিতে পরিবহন মালিক সমিতি ও শ্রমিক প্রতিনিধি থাকবেন। কমিটি রুট পারমিট প্রদান করবেন।

বিলে মোটরযানের মালিক বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বার্ষিক বা এককালীন চাঁদা আদায়ের বিধান রাখা হয়েছে। চাঁদার অর্থ মোটরযান দুঘর্টনায় ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি বা তার উত্তরাধিকারীকে ক্ষতিপূরণ বা চিকিৎসা খরচ বাবদ প্রদানের বিধান রাখা হয়েছে। এজন্য সরকার কর্তৃক আর্থিক সহায়তা তহবিল পরিচালনার জন্য একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠিত হবে। সরকার ট্রাস্টির চেয়ারম্যান নিয়োগ করবেন। এটি একটি স্ব-শাসিত প্রতিষ্ঠান হবে। বিলে পরিবহন খাতের বিমাসহ সার্বিক বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়েছে।

বিলে অপরাধ, বিচার ও দন্ড অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে প্যানাল কোডের ক্রিমিনাল প্রসিডিউর ১৮৯৮-এ ভিন্নতন কিছু না থাকলে, সাব ইনসপেক্টর বা সমমর্যাদার কর্মকর্তা আদলতে অবহিত করলে এ আইনের অধীনে সব অপরাধ আমলযোগ্য হবে। তবে আইনের ৮৪ (মোটরযানের কারিগরি ত্রুটি), ৯৮ (ওভার লোডিং, ওভার টেকিং বা বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালালে)  ও ১০৫ (প্রানহানি জনিত অপরাধ) অনুচ্ছেদে বর্ণিত অপরাধসমুহ ছাড়া অপর সব অপরাধ জামিনযোগ্য হবে।

জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট বা অতিরিক্ত সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ বা সমমর্যাদার কর্মকর্তাকে এই আইনের ৬৬(ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানো), ৭২ (রেজিষ্ট্রেশন ছাড়া মোটরযান চালালে), ৭৫  মোটরযানের ফিটনেস না থাকলে), ৮৭  (মোটরযানের গতি অনিয়ন্ত্রিত হলে), ৮৯ (ঝুঁকিপূর্ণ মোটরযান চালালে) এবং ৯২ (নেশা জাতীয় দ্রব্য পান কওে গাড়ি চালালে) ধারায় বর্ণিত অপরাধসমুহ আপোষ মিমাংসা করতে পারবেন।

এছাড়া অপরাধসমুহ নির্ধারিত টার্মিনাল চার্জ ব্যতীত পাবলিক প্লেসে মোটরযান চলাচলের জন্য অবৈধভাবে কোন অর্থ আদায় করা যাবে না, করলে প্যানাল কোডের অধীন চাঁদাবাজির অপরাধ বলে গণ্য হবে।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০১১ সালে আদালতের নিদের্শে মোটর ভেহিক্যাল অর্ডিন্যান্স ১৮৮৩ বাতিল হয়ে গেলে আবশ্যকতা বিবেচনায় ২০১৩ সালের ৭নং আইন দ্বারা এটি কার্যকর রাখা হয়। পরবর্তিতে সময়ের চাহিদা ও নিরাপদ সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য

সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ প্রণীত হয়। আধুনিক ও যুগোপযোগী করতে আইনে ১৪টি অধ্যায়ে ১২৬ ধারা যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বিল ২০১৮ পাস করেছে সংসদ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

দুর্ঘটনায় প্রাণহানির দায়ে ৫ বছরের কারাদণ্ড বা ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড

আপডেট টাইম : ১০:২০:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ অবহেলা বা বেপরোয়া মোটরযান চালনার কারণে দুর্ঘটনায় প্রাণহানির দায়ে ৫ বছরের করাদন্ড বা ৫ লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ড দন্ডিত করার বিধান রেখে ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ বিল’ সংসদে উত্থাপিত হয়েছে।

একইসঙ্গে প্রানহানির দায়ে অভিযুক্ত ড্রাইভার ও কন্ডাক্টরের অপরাধ জামিনযোগ্য নয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া দুর্ঘটনাজনিত অন্যান্য অপরাধ আপোষ মিমাংসার জন্য পুলিশকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে সংসদের ২২তম অধিবেশনের গতকাল বৃহস্পতিবারের বৈঠকে বিলটি উত্থাপন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পরে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বিলটি সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে প্রেরণ করা হয়।

সেই বিলে বলা হয়, লাইসেন্স ছাড়া কোন ব্যক্তি গণপরিবহনে কন্ডাক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে না। শ্রম আইন অনুযায়ী নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান চুক্তিছাড়া কাউকে কন্ডাক্টও নিয়োগ করতে পারবেনা। গণপরিবহন পরিচালনার জন্য সরকারি গেজেট দ্বারা প্রতিটি মহানগর, বিভাগ এবং জেলায় একটি করে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন কমিটি গঠিত হবে। কমিটিতে পরিবহন মালিক সমিতি ও শ্রমিক প্রতিনিধি থাকবেন। কমিটি রুট পারমিট প্রদান করবেন।

বিলে মোটরযানের মালিক বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বার্ষিক বা এককালীন চাঁদা আদায়ের বিধান রাখা হয়েছে। চাঁদার অর্থ মোটরযান দুঘর্টনায় ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি বা তার উত্তরাধিকারীকে ক্ষতিপূরণ বা চিকিৎসা খরচ বাবদ প্রদানের বিধান রাখা হয়েছে। এজন্য সরকার কর্তৃক আর্থিক সহায়তা তহবিল পরিচালনার জন্য একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠিত হবে। সরকার ট্রাস্টির চেয়ারম্যান নিয়োগ করবেন। এটি একটি স্ব-শাসিত প্রতিষ্ঠান হবে। বিলে পরিবহন খাতের বিমাসহ সার্বিক বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়েছে।

বিলে অপরাধ, বিচার ও দন্ড অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে প্যানাল কোডের ক্রিমিনাল প্রসিডিউর ১৮৯৮-এ ভিন্নতন কিছু না থাকলে, সাব ইনসপেক্টর বা সমমর্যাদার কর্মকর্তা আদলতে অবহিত করলে এ আইনের অধীনে সব অপরাধ আমলযোগ্য হবে। তবে আইনের ৮৪ (মোটরযানের কারিগরি ত্রুটি), ৯৮ (ওভার লোডিং, ওভার টেকিং বা বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালালে)  ও ১০৫ (প্রানহানি জনিত অপরাধ) অনুচ্ছেদে বর্ণিত অপরাধসমুহ ছাড়া অপর সব অপরাধ জামিনযোগ্য হবে।

জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট বা অতিরিক্ত সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ বা সমমর্যাদার কর্মকর্তাকে এই আইনের ৬৬(ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানো), ৭২ (রেজিষ্ট্রেশন ছাড়া মোটরযান চালালে), ৭৫  মোটরযানের ফিটনেস না থাকলে), ৮৭  (মোটরযানের গতি অনিয়ন্ত্রিত হলে), ৮৯ (ঝুঁকিপূর্ণ মোটরযান চালালে) এবং ৯২ (নেশা জাতীয় দ্রব্য পান কওে গাড়ি চালালে) ধারায় বর্ণিত অপরাধসমুহ আপোষ মিমাংসা করতে পারবেন।

এছাড়া অপরাধসমুহ নির্ধারিত টার্মিনাল চার্জ ব্যতীত পাবলিক প্লেসে মোটরযান চলাচলের জন্য অবৈধভাবে কোন অর্থ আদায় করা যাবে না, করলে প্যানাল কোডের অধীন চাঁদাবাজির অপরাধ বলে গণ্য হবে।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০১১ সালে আদালতের নিদের্শে মোটর ভেহিক্যাল অর্ডিন্যান্স ১৮৮৩ বাতিল হয়ে গেলে আবশ্যকতা বিবেচনায় ২০১৩ সালের ৭নং আইন দ্বারা এটি কার্যকর রাখা হয়। পরবর্তিতে সময়ের চাহিদা ও নিরাপদ সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য

সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ প্রণীত হয়। আধুনিক ও যুগোপযোগী করতে আইনে ১৪টি অধ্যায়ে ১২৬ ধারা যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বিল ২০১৮ পাস করেছে সংসদ।