ঢাকা ১২:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজ বৈঠকে চূড়ান্ত হচ্ছে এবার ভোট কেন্দ্র বাড়ছে ৫ হাজার

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:৫৬:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  • ৩৬০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট কেন্দ্র আজ চূড়ান্ত হচ্ছে। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চেয়ে এবার ৫ হাজারের মতো কেন্দ্র বাড়তে পারে। কারণ এরই মধ্যে খসড়া ভোট কেন্দ্র দাঁড়িয়েছে ৪০ হাজার ৬৫৭টি; তবে আপত্তি নিষ্পত্তি শেষে এ সংখ্যা ৪২ হাজার হতে পারে।

এবার প্রার্থীদের সুবিধাজনক স্থানে কেন্দ্র স্থাপনে আবেদনকারী সবাই ছিলেন মরিয়া। এ তালিকায় বর্তমান সংসদের মন্ত্রী-এমপিসহ সাবেক এমপিদের সুপারিশ ছিল। এসব জনপ্রতিনিধি ও সাবেক আইনপ্রণেতাদের পাশাপাশি স্থানীয় নাগরিকরাও জানিয়েছিলেন আবেদন। তবে ব্যক্তি বিবেচনায় কিছু সুপারিশ আমলে নিতে বাধ্য হয়েছেন মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তরা। এবার ৬৪ জেলায় ৫ শতাধিকের ওপরে অভিযোগ জমা পড়েছে।

ইসি সচিবালয় ও মাঠপর্যায়ের অফিসগুলোতে সহস্রাধিক দাবি আপত্তি জমা পড়েছে। এসব দাবি আপত্তিকারীর সিংহভাগই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাদের। এসব দাবি আপত্তি নিষ্পত্তি করে আজ ভোট কেন্দ্রের তালিকা চূড়ান্ত করবে ইসি। কারণ আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে।

ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, অনেকে নতুন স্থানে ভোট কেন্দ্র স্থাপনের আবেদন করেছেন, আবার অনেকেই ভোট কেন্দ্র পরিবর্তনের জন্য আবেদন করেছেন। কেউ আবেদন করেছেন আগের কেন্দ্র বহাল রাখার জন্য। আমাদের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা সরেজমিন পরিদর্শন করে এসব আবেদন নিষ্পত্তি করেছেন।

ইসির মাঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপে জানা যায়, ভোট কেন্দ্র স্থাপনে দুইটি নির্দেশনা ছিল ইসির, এর মধ্যে নদীভাঙন কেন্দ্র বিলুপ্ত এবং পূর্বের কেন্দ্র বহাল রাখা। কিন্তু কাজ করতে গিয়ে নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন মাঠ কর্মকর্তারা। ভিআইপিদের চাপ ও ইসির নির্দেশনা মানতে হয়েছে তাদের। অনেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আফসোস করে বলেন, আগের এ টি এম শামসুল হুদার কমিশন আর নেই। বর্তমান কমিশনে সরাসরি হাজির হন ক্ষমতাসীন দলের সংক্ষুব্ধরা।

তবে কেন্দ্র স্থাপনেও কিছু জটিলতায় পড়তে হয়েছে মাঠ কর্মকর্তাদের। কারণ যেসব কেন্দ্রে ৪ হাজারের ওপরে ভোটার রয়েছে এমন কেন্দ্র ভেঙে দিতে হয়েছে। এসব কেন্দ্র ভেঙে দুইটি কেন্দ্র করা হয়েছে। এতেও নানা জটিলতার উদ্ভব হয়েছে। দেখা গেছে, একই বংশ ও পরিবারের একাধিক সদস্য থাকলে দুইটি কেন্দ্র করার কারণে একজনের বাড়ির পাশে কেন্দ্রে ভোট দিতে পারবেন এবং অন্যজনকে নতুন স্থাপিত বাড়ি থেকে ২ কিলোমিটার দূরে গিয়ে ভোট দিতে হবে। এ ধরনের সমস্যার কথা জানিয়েছেন সাতক্ষীরা ও নারায়াণগঞ্জসহ অনেক জেলার মাঠ কর্মকর্তা।

এদিকে, পছন্দের জায়গায় ভোট কেন্দ্র করার জন্য নির্বাচন কমিশনেই শতাধিক আবেদন জমা পড়েছে। ৬৪ জেলার নির্বাচন অফিসে এ আবেদনের সংখ্যা সহস্রাধিক। আবার অনেক এমপি সরাসরি কমিশনে এসে পছন্দের ভোট কেন্দ্রের জন্য তদবিরও করেছেন। এসব আবেদন নিষ্পত্তি করতে সংশ্লিষ্ট জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

নিয়ম অনুযায়ী, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদেরই এসব আবেদন নিষ্পত্তি করতে হবে। প্রায় ১০ জন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, তাদের বেশিরভাগই নিজ নিজ জেলার ভোট কেন্দ্র নির্ধারণে স্থানীয় প্রভাবশালীদের চাপের মুখে পড়েছেন। পরে স্থানীয়ভাবে ম্যানেজ করে ভোট কেন্দ্রের তালিকা চূড়ান্ত করছেন। কোনো ক্ষেত্রে এমপিদের দাবি মেনে নেয়া হয়েছে, আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভোট কেন্দ্র স্থাপন নীতিমালা মানতে গিয়ে তাদের অনুরোধ উপেক্ষা করতে হয়েছে।

কালীগঞ্জের একাংশ, দেবহাটা ও আশাশুনি উপজেলা নিয়ে সাতক্ষীরা-৩ সংসদীয় আসন। এ আসনের বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের এমপি ডা. আ ফ ম রুহুল হক। তার নির্বাচনী এলাকা নলতায় একটি কেন্দ্রে ৪ হাজার ২০০ ভোটার। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রটি পরিবর্তন চেয়ে পাশের আরেকটি কেন্দ্রে স্থাপনের আবেদন জানান সাবেক এই স্বাস্থ্যমন্ত্রী। ইসির কর্মকর্তারা ভোট ভাগ করে দুইটি কেন্দ্র স্থাপনের ইচ্ছা প্রকাশ করলেও শেষ পর্যন্ত তা করতে পারেননি। এ ধরনের জটিলতা রাজধানীর উপকণ্ঠের জেলা নারায়ণগঞ্জেও রয়েছে। তবে নানা কৌশলে এখানকার কর্মকর্তরা ভোট কেন্দ্র স্থাপন করেছেন।

লালমনিরহাট পাটগ্রাম উপজেলার একটি ভোট কেন্দ্র পরিবর্তনের জন্য ইসির সচিবকে একটি উপানুষ্ঠানিক পত্র দিয়েছেন লালমনিরহাট-১ আসনের এমপি মো. মোতাহার হোসেন। এতে তিনি ওই উপজেলার বানিয়াডাঙ্গী ভোট কেন্দ্রটি পরিবর্তন করে মধ্য ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থানান্তরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানান। এছাড়া ঢাকা-৯ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী মুগদার মান্ডা ইউনিয়নের একটি ভোট কেন্দ্র পরিবর্তনের জন্য অনুরোধ জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কাছে চিঠি দেন। নিজ প্যাডে দেয়া ওই চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, মান্ডা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে অবস্থিত জান্নাতুল ফোরকানিয়া মহিলা মাদরাসা ভোট কেন্দ্রটি স্থানান্তর করে আইসিএস পাবলিক স্কুলে স্থাপন করার জন্য এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে আবেদন জানায়।

এছাড়া পরিবর্তন করা দুইটি কেন্দ্র বহাল চান ফরিদপুর-৪ আসনের জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য বেগম নিলুফার জাফর উল্লাহ। খসড়া ভোট কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়েছে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, ভোলা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম, সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটির সভাপতি ও শরীয়তপুর-২ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য কর্নেল (অব.) শওকত আলী, খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শেখ মো. নুরুল হকসহ প্রমুখ। এছাড়া শুধু ঢাকার ২০টি আসনে ২ হাজার ৮৬৯টি ভোট কেন্দ্র নির্ধারণ নিয়ে ৩০টির বেশি আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে ঢাকা-৫ আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র বাতিল করে নতুনভাবে ভোট কেন্দ্র বসানোর জন্য আবেদন করেন ডেমরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, তার এসব দাবি ভোট কেন্দ্র নীতিমালার পরিপন্থী।

উল্লেখ্য, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রায় ৩ হাজার ভোট কেন্দ্র ও ২০ হাজার ভোটকক্ষ বাড়তে পারে। খসড়া ভোট কেন্দ্রের তালিকা অনুযায়ী, এ নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৪০ হাজার ৬৫৭টি ও ভোটকক্ষ (বুথ) ২ লাখ ৯ হাজার ৪১৮টি। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর ভোট কেন্দ্র ও কক্ষের সংখ্যার কিছুটা কমবেশি হতে পারে। এর আগে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ৩৭ হাজার ৭০৭টি ও ভোটকক্ষ ১ লাখ ৮৯ হাজার ৭৮টি। এ হিসাবে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৯৫০টি ভোট কেন্দ্র ও ২০ হাজার ৩৪০টি ভোটকক্ষ বেড়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আজ বৈঠকে চূড়ান্ত হচ্ছে এবার ভোট কেন্দ্র বাড়ছে ৫ হাজার

আপডেট টাইম : ০৪:৫৬:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট কেন্দ্র আজ চূড়ান্ত হচ্ছে। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চেয়ে এবার ৫ হাজারের মতো কেন্দ্র বাড়তে পারে। কারণ এরই মধ্যে খসড়া ভোট কেন্দ্র দাঁড়িয়েছে ৪০ হাজার ৬৫৭টি; তবে আপত্তি নিষ্পত্তি শেষে এ সংখ্যা ৪২ হাজার হতে পারে।

এবার প্রার্থীদের সুবিধাজনক স্থানে কেন্দ্র স্থাপনে আবেদনকারী সবাই ছিলেন মরিয়া। এ তালিকায় বর্তমান সংসদের মন্ত্রী-এমপিসহ সাবেক এমপিদের সুপারিশ ছিল। এসব জনপ্রতিনিধি ও সাবেক আইনপ্রণেতাদের পাশাপাশি স্থানীয় নাগরিকরাও জানিয়েছিলেন আবেদন। তবে ব্যক্তি বিবেচনায় কিছু সুপারিশ আমলে নিতে বাধ্য হয়েছেন মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তরা। এবার ৬৪ জেলায় ৫ শতাধিকের ওপরে অভিযোগ জমা পড়েছে।

ইসি সচিবালয় ও মাঠপর্যায়ের অফিসগুলোতে সহস্রাধিক দাবি আপত্তি জমা পড়েছে। এসব দাবি আপত্তিকারীর সিংহভাগই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাদের। এসব দাবি আপত্তি নিষ্পত্তি করে আজ ভোট কেন্দ্রের তালিকা চূড়ান্ত করবে ইসি। কারণ আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে।

ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, অনেকে নতুন স্থানে ভোট কেন্দ্র স্থাপনের আবেদন করেছেন, আবার অনেকেই ভোট কেন্দ্র পরিবর্তনের জন্য আবেদন করেছেন। কেউ আবেদন করেছেন আগের কেন্দ্র বহাল রাখার জন্য। আমাদের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা সরেজমিন পরিদর্শন করে এসব আবেদন নিষ্পত্তি করেছেন।

ইসির মাঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপে জানা যায়, ভোট কেন্দ্র স্থাপনে দুইটি নির্দেশনা ছিল ইসির, এর মধ্যে নদীভাঙন কেন্দ্র বিলুপ্ত এবং পূর্বের কেন্দ্র বহাল রাখা। কিন্তু কাজ করতে গিয়ে নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন মাঠ কর্মকর্তারা। ভিআইপিদের চাপ ও ইসির নির্দেশনা মানতে হয়েছে তাদের। অনেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আফসোস করে বলেন, আগের এ টি এম শামসুল হুদার কমিশন আর নেই। বর্তমান কমিশনে সরাসরি হাজির হন ক্ষমতাসীন দলের সংক্ষুব্ধরা।

তবে কেন্দ্র স্থাপনেও কিছু জটিলতায় পড়তে হয়েছে মাঠ কর্মকর্তাদের। কারণ যেসব কেন্দ্রে ৪ হাজারের ওপরে ভোটার রয়েছে এমন কেন্দ্র ভেঙে দিতে হয়েছে। এসব কেন্দ্র ভেঙে দুইটি কেন্দ্র করা হয়েছে। এতেও নানা জটিলতার উদ্ভব হয়েছে। দেখা গেছে, একই বংশ ও পরিবারের একাধিক সদস্য থাকলে দুইটি কেন্দ্র করার কারণে একজনের বাড়ির পাশে কেন্দ্রে ভোট দিতে পারবেন এবং অন্যজনকে নতুন স্থাপিত বাড়ি থেকে ২ কিলোমিটার দূরে গিয়ে ভোট দিতে হবে। এ ধরনের সমস্যার কথা জানিয়েছেন সাতক্ষীরা ও নারায়াণগঞ্জসহ অনেক জেলার মাঠ কর্মকর্তা।

এদিকে, পছন্দের জায়গায় ভোট কেন্দ্র করার জন্য নির্বাচন কমিশনেই শতাধিক আবেদন জমা পড়েছে। ৬৪ জেলার নির্বাচন অফিসে এ আবেদনের সংখ্যা সহস্রাধিক। আবার অনেক এমপি সরাসরি কমিশনে এসে পছন্দের ভোট কেন্দ্রের জন্য তদবিরও করেছেন। এসব আবেদন নিষ্পত্তি করতে সংশ্লিষ্ট জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

নিয়ম অনুযায়ী, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদেরই এসব আবেদন নিষ্পত্তি করতে হবে। প্রায় ১০ জন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, তাদের বেশিরভাগই নিজ নিজ জেলার ভোট কেন্দ্র নির্ধারণে স্থানীয় প্রভাবশালীদের চাপের মুখে পড়েছেন। পরে স্থানীয়ভাবে ম্যানেজ করে ভোট কেন্দ্রের তালিকা চূড়ান্ত করছেন। কোনো ক্ষেত্রে এমপিদের দাবি মেনে নেয়া হয়েছে, আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভোট কেন্দ্র স্থাপন নীতিমালা মানতে গিয়ে তাদের অনুরোধ উপেক্ষা করতে হয়েছে।

কালীগঞ্জের একাংশ, দেবহাটা ও আশাশুনি উপজেলা নিয়ে সাতক্ষীরা-৩ সংসদীয় আসন। এ আসনের বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের এমপি ডা. আ ফ ম রুহুল হক। তার নির্বাচনী এলাকা নলতায় একটি কেন্দ্রে ৪ হাজার ২০০ ভোটার। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রটি পরিবর্তন চেয়ে পাশের আরেকটি কেন্দ্রে স্থাপনের আবেদন জানান সাবেক এই স্বাস্থ্যমন্ত্রী। ইসির কর্মকর্তারা ভোট ভাগ করে দুইটি কেন্দ্র স্থাপনের ইচ্ছা প্রকাশ করলেও শেষ পর্যন্ত তা করতে পারেননি। এ ধরনের জটিলতা রাজধানীর উপকণ্ঠের জেলা নারায়ণগঞ্জেও রয়েছে। তবে নানা কৌশলে এখানকার কর্মকর্তরা ভোট কেন্দ্র স্থাপন করেছেন।

লালমনিরহাট পাটগ্রাম উপজেলার একটি ভোট কেন্দ্র পরিবর্তনের জন্য ইসির সচিবকে একটি উপানুষ্ঠানিক পত্র দিয়েছেন লালমনিরহাট-১ আসনের এমপি মো. মোতাহার হোসেন। এতে তিনি ওই উপজেলার বানিয়াডাঙ্গী ভোট কেন্দ্রটি পরিবর্তন করে মধ্য ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থানান্তরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানান। এছাড়া ঢাকা-৯ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী মুগদার মান্ডা ইউনিয়নের একটি ভোট কেন্দ্র পরিবর্তনের জন্য অনুরোধ জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কাছে চিঠি দেন। নিজ প্যাডে দেয়া ওই চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, মান্ডা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে অবস্থিত জান্নাতুল ফোরকানিয়া মহিলা মাদরাসা ভোট কেন্দ্রটি স্থানান্তর করে আইসিএস পাবলিক স্কুলে স্থাপন করার জন্য এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে আবেদন জানায়।

এছাড়া পরিবর্তন করা দুইটি কেন্দ্র বহাল চান ফরিদপুর-৪ আসনের জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য বেগম নিলুফার জাফর উল্লাহ। খসড়া ভোট কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়েছে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, ভোলা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম, সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটির সভাপতি ও শরীয়তপুর-২ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য কর্নেল (অব.) শওকত আলী, খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শেখ মো. নুরুল হকসহ প্রমুখ। এছাড়া শুধু ঢাকার ২০টি আসনে ২ হাজার ৮৬৯টি ভোট কেন্দ্র নির্ধারণ নিয়ে ৩০টির বেশি আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে ঢাকা-৫ আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র বাতিল করে নতুনভাবে ভোট কেন্দ্র বসানোর জন্য আবেদন করেন ডেমরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, তার এসব দাবি ভোট কেন্দ্র নীতিমালার পরিপন্থী।

উল্লেখ্য, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রায় ৩ হাজার ভোট কেন্দ্র ও ২০ হাজার ভোটকক্ষ বাড়তে পারে। খসড়া ভোট কেন্দ্রের তালিকা অনুযায়ী, এ নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৪০ হাজার ৬৫৭টি ও ভোটকক্ষ (বুথ) ২ লাখ ৯ হাজার ৪১৮টি। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর ভোট কেন্দ্র ও কক্ষের সংখ্যার কিছুটা কমবেশি হতে পারে। এর আগে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ৩৭ হাজার ৭০৭টি ও ভোটকক্ষ ১ লাখ ৮৯ হাজার ৭৮টি। এ হিসাবে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৯৫০টি ভোট কেন্দ্র ও ২০ হাজার ৩৪০টি ভোটকক্ষ বেড়েছে।