ঢাকা ০১:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:৪৬:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  • ৩০৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী আজ। একাত্তরের ৫ সেপ্টেম্বর সকালে ঝিকরগাছার গোয়ালহাটি এলাকায় হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে নিজ জীবন উৎসর্গ করেন এই বীরযোদ্ধা।

বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ নূর মোহাম্মদ শেখ বিডিআর’র একজন ল্যান্স নায়েক ছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে চরম সাহসিকতা আর অসামান্য বীরত্বের স্বীকৃতি স্বরূপ যে সাতজন বীরকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে তিনি তাদের অন্যতম নূর মোহাম্মদ শেখ।

মৃত্যুর পর কাশিপুর সীমান্তের মুক্ত এলাকায় পুকুর পাড়ে তাকে দাফন করা হয়। যশোরের সীমান্তবর্তী শার্শা উপজেলা সদর থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার উত্তরে সীমান্ত ঘেঁষা গ্রাম কাশিপুর। ওপারে ভারতের চব্বিশ পরগনার বয়রা। কাশিপুর পুকুর পাড়ে চিরঘুমে আছেন ৭ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। এখানে নির্মাণ করা হয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ নূর মোহাম্মদ শেখ স্মৃতিস্তম্ভ। বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ নূর মোহাম্মদ শেখসহ অপর ৬ জন হচ্ছেন শহীদ সিপাহী এনামূল হক, শহীদ সিপাহী আব্দুস ছাত্তার, বাহাদুর গেরিলা শহীদ, শহীদ এম সিএ সৈয়দ আতর আলী, শহীদ সুবেদার মনিরুজ্জামান ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আহাদ।

এই স্মৃতিস্তম্ভ আজ পড়ে আছে অযত্ন আর অবহেলায়। সরকারিভাবে রক্ষণা-বেক্ষন না করায় সীমান্ত ঘেঁষা অজপাড়া গায়ের এসব শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের কবরস্থান গো-চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এসব মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে এখানে একটি মিউজিয়াম স্থাপন করার কথা থাকলেও আজ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন হয়নি। সরকারিভাবে তদারকির জন্য এখানে একজন লোক রাখার দাবি এলাকাবাসীর।

সেদিন বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের জানাজা নামাজ পড়ান ইমাম মাওলানা হাবিবুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ সহ এখানে ৭ বীরের কবর দেওয়া আছে। এসব বীরদের জানাজা নামাজ ও দাফন আমি নিজে হাতে করেছি। একজন পাহারাদার নিয়োগ দিয়ে প্রতিদিন জায়গাটা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখলে এবং মাঝখান দিয়ে পথ বন্ধ করে দেওয়া হলে, কবর ও স্মৃতিস্তম্ভের পবিত্রতা রক্ষা পাবে।’ 
শার্শা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সিরাজুল হক মঞ্জু বলেন, ‘বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের মাজারের ঠিকমত সংরক্ষণ হচ্ছেনা। নোংরা পরিবেশ।অবস্থাটা দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। এই মাজারকে সংরক্ষণের জন্য আমি দাবি জানাচ্ছি। এখানে একটি বসার ব্যবস্থা অত্যন্ত প্রয়োজন। চারিদিক থেকে দেওয়াল দিয়ে সংরক্ষণ করা দরকার।’

নূর মোহাম্মদ শেখের ছেলে এস এম গোলাম মোস্তফা কামাল বীরশ্রেষ্ঠদের নামে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানগুলো অবিলম্বে জাতীয় করণের দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদেরকে অবহেলায় রেখে কখনই মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো সম্ভব নয়। এজন্য জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদেরকে উচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’ এজন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন এই বীরশ্রেষ্ঠপুত্র।

বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আজ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের পক্ষ থেকে কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া তার গ্রামের বাড়ি নড়াইলের নূর মোহাম্মদ নগরে র‌্যালি, আলোচনা সভা, কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী

আপডেট টাইম : ০৪:৪৬:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী আজ। একাত্তরের ৫ সেপ্টেম্বর সকালে ঝিকরগাছার গোয়ালহাটি এলাকায় হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে নিজ জীবন উৎসর্গ করেন এই বীরযোদ্ধা।

বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ নূর মোহাম্মদ শেখ বিডিআর’র একজন ল্যান্স নায়েক ছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে চরম সাহসিকতা আর অসামান্য বীরত্বের স্বীকৃতি স্বরূপ যে সাতজন বীরকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে তিনি তাদের অন্যতম নূর মোহাম্মদ শেখ।

মৃত্যুর পর কাশিপুর সীমান্তের মুক্ত এলাকায় পুকুর পাড়ে তাকে দাফন করা হয়। যশোরের সীমান্তবর্তী শার্শা উপজেলা সদর থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার উত্তরে সীমান্ত ঘেঁষা গ্রাম কাশিপুর। ওপারে ভারতের চব্বিশ পরগনার বয়রা। কাশিপুর পুকুর পাড়ে চিরঘুমে আছেন ৭ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। এখানে নির্মাণ করা হয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ নূর মোহাম্মদ শেখ স্মৃতিস্তম্ভ। বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ নূর মোহাম্মদ শেখসহ অপর ৬ জন হচ্ছেন শহীদ সিপাহী এনামূল হক, শহীদ সিপাহী আব্দুস ছাত্তার, বাহাদুর গেরিলা শহীদ, শহীদ এম সিএ সৈয়দ আতর আলী, শহীদ সুবেদার মনিরুজ্জামান ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আহাদ।

এই স্মৃতিস্তম্ভ আজ পড়ে আছে অযত্ন আর অবহেলায়। সরকারিভাবে রক্ষণা-বেক্ষন না করায় সীমান্ত ঘেঁষা অজপাড়া গায়ের এসব শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের কবরস্থান গো-চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এসব মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে এখানে একটি মিউজিয়াম স্থাপন করার কথা থাকলেও আজ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন হয়নি। সরকারিভাবে তদারকির জন্য এখানে একজন লোক রাখার দাবি এলাকাবাসীর।

সেদিন বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের জানাজা নামাজ পড়ান ইমাম মাওলানা হাবিবুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ সহ এখানে ৭ বীরের কবর দেওয়া আছে। এসব বীরদের জানাজা নামাজ ও দাফন আমি নিজে হাতে করেছি। একজন পাহারাদার নিয়োগ দিয়ে প্রতিদিন জায়গাটা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখলে এবং মাঝখান দিয়ে পথ বন্ধ করে দেওয়া হলে, কবর ও স্মৃতিস্তম্ভের পবিত্রতা রক্ষা পাবে।’ 
শার্শা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সিরাজুল হক মঞ্জু বলেন, ‘বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের মাজারের ঠিকমত সংরক্ষণ হচ্ছেনা। নোংরা পরিবেশ।অবস্থাটা দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। এই মাজারকে সংরক্ষণের জন্য আমি দাবি জানাচ্ছি। এখানে একটি বসার ব্যবস্থা অত্যন্ত প্রয়োজন। চারিদিক থেকে দেওয়াল দিয়ে সংরক্ষণ করা দরকার।’

নূর মোহাম্মদ শেখের ছেলে এস এম গোলাম মোস্তফা কামাল বীরশ্রেষ্ঠদের নামে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানগুলো অবিলম্বে জাতীয় করণের দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদেরকে অবহেলায় রেখে কখনই মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো সম্ভব নয়। এজন্য জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদেরকে উচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’ এজন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন এই বীরশ্রেষ্ঠপুত্র।

বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আজ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের পক্ষ থেকে কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া তার গ্রামের বাড়ি নড়াইলের নূর মোহাম্মদ নগরে র‌্যালি, আলোচনা সভা, কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।