তামাক চাষের ক্ষেত্রে ব্যাংক ঋণ বন্ধের নির্দেশ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ তামাক চাষের ক্ষেত্রে যেকোনো ধরণের ব্যাংক ঋণ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। স্বাস্থ্য, আর্থিক সুবিধা ও পরিবেশের ক্ষতিকারক হিসেবে এর উৎপাদন নিরুৎসাহিত করার লক্ষ্যে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়। সম্প্রতি ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মনোজ কান্তি বৈরাগী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নীতি ও আর্থিক প্রণোদনা শাখার উপসচিব মৃত্যুঞ্জয় সাহার আবেদনের প্রেক্ষিতে মানুষের স্বাস্থ্য, আর্থিক সুবিধা (তামাক চাষ করলে উক্ত জমিতে শুধুমাত্র এক ফসলই ফলানো যায়) ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর তামাক চাষ যাতে ব্যাংক ঋণ সুবিধার মাধ্যমে কৃষকরা উৎসাহিত না হয় সে লক্ষ্যে এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

পাশাপাশি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষে সরাসরি অথবা চুক্তিবদ্ধ উৎপাদন ব্যবস্থার আওতায় কৃষকদেরকে তামাক চাষের জন্য ব্যাংক ঋণ/অর্থায়ন সুবিধা না দেওয়ার জন্য এসিডি সার্কুলারের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এতে করে তামাক উৎপাদনের জন্য ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে কোনো প্রকার কৃষিঋণ বিতরণ করা হচ্ছে না বলেও নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আরও জানা যায়, তামাক কৃষিপণ্য হিসেবে কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত (এগ্রোপ্রসেসিং) কৃষিপণ্য রপ্তানিখাতে কোনো প্রকার ভর্তুকী/নগদ সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে না। তামাক ও সিগারেট উৎপাদন বন্ধকরণে ব্যাংক আরও কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

যার মধ্যে রয়েছে, তামাক শিল্পের সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তামাকচাষীদের অনুকূলে ঋণ প্রদান নিরুৎসাহিতকরণ, কৃষকদের কন্ট্রাক্ট ফার্মিং এর আওতায় এনে তামাক চাষকৃত জমিতে লাভজনক বিকল্প ফসল উৎপাদনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা, সংশ্লিষ্ট জমিতে চাষাবাদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করা, কৃষকদের উৎপাদিত ফসল/পণ্যের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করা, কোনো ধরণের বিকল্প ফসল লাভজনক হবে সে বিষয়ে তামাক চাষীদেরকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক সচেতন করা, তামাক চাষে জমির উর্বরতা ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং চাষকৃত এলাকার পরিবেশে বিরূপ প্রভাব পড়ে। এছাড়াও তামাক চাষীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশংকা থাকে বিধায় এসকল বিষয়ে তামাক চাষীদেরকে সচেতন করা।

তামাক ও তামাকজাত পণ্যের উৎপাদন ও ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে এটি একটি শুভ উদ্যোগ বলে মন্তব্য করেছেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট এর কর্মসূচী ব্যবস্থাপক সৈয়দা অনন্যা রহমান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ধারাবাহিকভাবে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে এবং বর্তমানেও নিচ্ছে। আমি মনে করি বাংলাদেশ ব্যাংক এর ২০১০ সালে জারিকৃত সার্কুলারের আলোকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তামাক উৎপাদনের জন্য ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে কোন ঋণ না প্রদানের সিদ্ধান্ত অব্যহত রাখা অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত এবং প্রশংসনীয়।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সুরক্ষা সর্বোপরি জনকল্যাণে এ ধারা অব্যহত রাখা প্রয়োজন। তামাক নিয়ন্ত্রণে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের প্রয়োজন সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা বলে আমি মনে করি। যে যে যার যার অবস্থান থেকে তাদের সাধ্য অনুসারে এ উদ্যোগ গ্রহণ করলে কাংখিত ফলাফল প্রাপ্তি সহজ হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর