ঢাকা ০১:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিএনপি জাতীয় নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার পথ খুঁজছে : কাদের

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:০১:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ মে ২০১৮
  • ২৭৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিএনপি আগামী নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার পথ খুঁজছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। খুলনা সিটি করপোরেশন ও বার কাউন্সিল নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে কাদের বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে জিতবে, বিএনপি এ আশা হারিয়ে ফেলেছে। নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ভয়ে নানান ছল ছুতায় নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার পথ খুঁজছে।’ আজ শুক্রবার (১৮ মে) দুপুরে রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপিকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা নির্বাচনে আসবে কি আসবে না। এর জন্য আওয়ামী লীগকে দোষ দিয়ে কোনও লাভ নেই।’

বিএনপির হেরে যাওয়ার ট্রেন্ড শুরু হয়ে গেছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচনে বিএনপির হেরে যাওয়ার ট্রেন্ড শুরু হয়ে গেছে। পর্যবেক্ষকরাও বলছে খুলনায় দু’তিনটা অনিয়ম ছাড়া প্রত্যেকটাতেই নির্বাচন ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার হয়েছে। শুধু বিএনপি এই নির্বাচন মেনে নিতে পারেনি। এক লাখ দশ হাজার ভোট পেয়েছে। নির্বাচন ফেয়ার না হলে বিএনপি এত ভোট পেত? নেতিবাচক রাজনীতির কারণে তাদের ভোট কমে যাচ্ছে।’

বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি বা জামিনের সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনের  কোনও সম্পর্ক নেই জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘খালেদা জিয়ার জামিন হয়েছে আইনি প্রক্রিয়ায়। জামিন এবং মুক্তি দিতে পারে আদালত। এটা সরকারের কোনও বিষয় না। এর সঙ্গে নির্বাচনের কোনও সম্পর্ক নেই।’

এ সময় তিনি বিএনপিকে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘আইনি লড়াইয়ে যান, আইনি লড়াইয়ে আপনারা এক মামলায় জামিন হয়েছে, আরও মামলা আছে। আরও লড়াই করুন আদালতই জামিন দিতে পারে।’

খালেদা জিয়াকে নির্বাচনের বাইরে রাখতে জামিনের পরও সরকার তাকে মুক্তি দিচ্ছে না বিএনপির এমন অভিযোগের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘মামলা কয়টা, জামিন কয়টার হবে? আর এটা আমাদের বিষয় নয়। আওয়ামী লীগ তো মামলাও দেয়নি, জামিনও দেয়নি। এই মামলা করেছে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার। অবিরাম মিথ্যাচার করছে, মনে হচ্ছে এই মামলা যেন আওয়ামী লীগ দিয়েছে। মামলার দণ্ড দিয়েছে আদালত, তাকে মুক্তিও দিতে পারে আদালত জামিনও দিতে পারে আদালত। আওয়ামী লীগ সরকার জামিন দিতে পারে না।’

এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ভারতীয় হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলার দৃষ্টি আকর্ষণ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশিরা কি আমাকে ক্ষমতায় বসিয়ে দিবে। মি. হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, তার দেশ কি আমাদের ক্ষমতায় বসাবে? আমাদের ক্ষমতায় বসাবে বাংলাদেশের জনগণ, তারা আমাদের বন্ধু। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আমরা সুদৃড় করতে চাই। আমরা আমাদের নিজেদের স্বার্থে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই।’

দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যালঘু না ভেবে মাথা উচু করে দাঁড়ানোর পরামর্শ দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনারা নিজেদেরকে মাইনরিটি ভাবেন কেন। আপনাদের ভোটের মূল্য কম আর মুসলমানদের ভোটের মূল্য বেশি এটা কি সংবিধানে আছে। ভোটের অধিকার সবার সমান। নিজেদেরকে দুর্বল ভাববেন না। মাথা উঁচু করে, শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়ান।’

হিন্দু সম্প্রদায়কে উদ্দেশ করে তিনি আরও বলেন, ‘মনে নেই ২০০১ এর নির্বাচনের পরের কথা।  আপনারা কি ২০০১, ২০০৩ এর নির্যাতনের কথা ভুলে গেছেন। আপনাদের জন্য আমাদের চেয়ে বেটার কেউ না। পাকিস্তানের বন্ধুরা আপনাদের বন্ধু হতে পারে না।’

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘বিএনপির আমলে আপনাদের ওপর যে নির্যাতন হযেছে, সেটা ওই সরকারের কেন্দ্রীয় পলিসির অংশ ছিল। আমাদের আমলে যে ছোট-খাটো ঘটনা ঘটেছে সেটা শেখ হাসিনা সরকারের পলিসির অংশ না। আওয়ামী লীগেও দুর্বৃত্ত আছে। কেউ কোনও অন্যায় করলে আমি তাদের দুর্বৃত্ত বলি। জমি, বাড়ি, সম্পত্তি দখল এ ব্যাপারে আমাদের সরকার জিরো টলারেন্স। আপনাদের জন্য বিকল্প আমরাই। আমাদের বিকল্প পাকিস্তানের দোসররা। ভুল করে পাকিস্তানের দোসরদের আমাদের বিকল্প ভাববেন না। কেউ হুমকি দিয়ে শক্ত হয়ে দাঁড়াবেন। বাড়ির সামনে এসে দুই তিন জন হুমকি দিলে পালিয়ে চলে গেলে হবে না।’

অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন শিংলা বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমলে দুই দেশের মধ্যে যে বন্ধুত্ব পূর্ণ সম্পর্ক এই সম্পর্ক আরও উচ্চ মাত্রায় যাবে। সুখে-দুঃখে ভারত সব সময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে। বাংলাদেশে সকল সম্প্রদায়ের মানুষ বিশষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ সবাই সমান অধিকার ভোগ করছে। এটা অব্যাহত থাকবে বলে আমি আশা করি।’

পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জয়ন্ত দাস দিপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণী সম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন সিকদার, হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত প্রমুখ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

বিএনপি জাতীয় নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার পথ খুঁজছে : কাদের

আপডেট টাইম : ০৪:০১:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ মে ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিএনপি আগামী নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার পথ খুঁজছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। খুলনা সিটি করপোরেশন ও বার কাউন্সিল নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে কাদের বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে জিতবে, বিএনপি এ আশা হারিয়ে ফেলেছে। নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ভয়ে নানান ছল ছুতায় নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার পথ খুঁজছে।’ আজ শুক্রবার (১৮ মে) দুপুরে রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপিকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা নির্বাচনে আসবে কি আসবে না। এর জন্য আওয়ামী লীগকে দোষ দিয়ে কোনও লাভ নেই।’

বিএনপির হেরে যাওয়ার ট্রেন্ড শুরু হয়ে গেছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচনে বিএনপির হেরে যাওয়ার ট্রেন্ড শুরু হয়ে গেছে। পর্যবেক্ষকরাও বলছে খুলনায় দু’তিনটা অনিয়ম ছাড়া প্রত্যেকটাতেই নির্বাচন ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার হয়েছে। শুধু বিএনপি এই নির্বাচন মেনে নিতে পারেনি। এক লাখ দশ হাজার ভোট পেয়েছে। নির্বাচন ফেয়ার না হলে বিএনপি এত ভোট পেত? নেতিবাচক রাজনীতির কারণে তাদের ভোট কমে যাচ্ছে।’

বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি বা জামিনের সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনের  কোনও সম্পর্ক নেই জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘খালেদা জিয়ার জামিন হয়েছে আইনি প্রক্রিয়ায়। জামিন এবং মুক্তি দিতে পারে আদালত। এটা সরকারের কোনও বিষয় না। এর সঙ্গে নির্বাচনের কোনও সম্পর্ক নেই।’

এ সময় তিনি বিএনপিকে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘আইনি লড়াইয়ে যান, আইনি লড়াইয়ে আপনারা এক মামলায় জামিন হয়েছে, আরও মামলা আছে। আরও লড়াই করুন আদালতই জামিন দিতে পারে।’

খালেদা জিয়াকে নির্বাচনের বাইরে রাখতে জামিনের পরও সরকার তাকে মুক্তি দিচ্ছে না বিএনপির এমন অভিযোগের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘মামলা কয়টা, জামিন কয়টার হবে? আর এটা আমাদের বিষয় নয়। আওয়ামী লীগ তো মামলাও দেয়নি, জামিনও দেয়নি। এই মামলা করেছে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার। অবিরাম মিথ্যাচার করছে, মনে হচ্ছে এই মামলা যেন আওয়ামী লীগ দিয়েছে। মামলার দণ্ড দিয়েছে আদালত, তাকে মুক্তিও দিতে পারে আদালত জামিনও দিতে পারে আদালত। আওয়ামী লীগ সরকার জামিন দিতে পারে না।’

এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ভারতীয় হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলার দৃষ্টি আকর্ষণ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশিরা কি আমাকে ক্ষমতায় বসিয়ে দিবে। মি. হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, তার দেশ কি আমাদের ক্ষমতায় বসাবে? আমাদের ক্ষমতায় বসাবে বাংলাদেশের জনগণ, তারা আমাদের বন্ধু। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আমরা সুদৃড় করতে চাই। আমরা আমাদের নিজেদের স্বার্থে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই।’

দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যালঘু না ভেবে মাথা উচু করে দাঁড়ানোর পরামর্শ দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনারা নিজেদেরকে মাইনরিটি ভাবেন কেন। আপনাদের ভোটের মূল্য কম আর মুসলমানদের ভোটের মূল্য বেশি এটা কি সংবিধানে আছে। ভোটের অধিকার সবার সমান। নিজেদেরকে দুর্বল ভাববেন না। মাথা উঁচু করে, শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়ান।’

হিন্দু সম্প্রদায়কে উদ্দেশ করে তিনি আরও বলেন, ‘মনে নেই ২০০১ এর নির্বাচনের পরের কথা।  আপনারা কি ২০০১, ২০০৩ এর নির্যাতনের কথা ভুলে গেছেন। আপনাদের জন্য আমাদের চেয়ে বেটার কেউ না। পাকিস্তানের বন্ধুরা আপনাদের বন্ধু হতে পারে না।’

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘বিএনপির আমলে আপনাদের ওপর যে নির্যাতন হযেছে, সেটা ওই সরকারের কেন্দ্রীয় পলিসির অংশ ছিল। আমাদের আমলে যে ছোট-খাটো ঘটনা ঘটেছে সেটা শেখ হাসিনা সরকারের পলিসির অংশ না। আওয়ামী লীগেও দুর্বৃত্ত আছে। কেউ কোনও অন্যায় করলে আমি তাদের দুর্বৃত্ত বলি। জমি, বাড়ি, সম্পত্তি দখল এ ব্যাপারে আমাদের সরকার জিরো টলারেন্স। আপনাদের জন্য বিকল্প আমরাই। আমাদের বিকল্প পাকিস্তানের দোসররা। ভুল করে পাকিস্তানের দোসরদের আমাদের বিকল্প ভাববেন না। কেউ হুমকি দিয়ে শক্ত হয়ে দাঁড়াবেন। বাড়ির সামনে এসে দুই তিন জন হুমকি দিলে পালিয়ে চলে গেলে হবে না।’

অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন শিংলা বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমলে দুই দেশের মধ্যে যে বন্ধুত্ব পূর্ণ সম্পর্ক এই সম্পর্ক আরও উচ্চ মাত্রায় যাবে। সুখে-দুঃখে ভারত সব সময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে। বাংলাদেশে সকল সম্প্রদায়ের মানুষ বিশষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ সবাই সমান অধিকার ভোগ করছে। এটা অব্যাহত থাকবে বলে আমি আশা করি।’

পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জয়ন্ত দাস দিপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণী সম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন সিকদার, হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত প্রমুখ।