ঢাকা ০৫:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:০১:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মার্চ ২০১৮
  • ৪৩৪ বার

হাওর  বার্তা ডেস্কঃ যশোর রোডের ১৫০ বছরের পুরনো বৃক্ষসহ প্রায় ২ হাজার ৭০০টি গাছ এখন হুমকির মুখে। যশোর-বেনাপোল সড়ক প্রশস্তকরণে এগুলো কেটে ফেলতে হবে বলে জানিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। তবে গাছ রেখে রাস্তা প্রশস্তকরণের দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা।

যশোর-বেনাপোল সড়ক প্রশস্তকরণে কেটে ফেলা হবে দুই পাশের গাছগুলো যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের একনেকের সভায় ৩২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে যশোর-বেনাপোল জাতীয় সড়কের (দড়াটানা-বেনাপোল পর্যন্ত) ৩৮ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর নকশা অনুযায়ী রাস্তার দুই পাশের গাছগুলো কেটে ফেলার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ রয়েছে।

14

যদিও বৃক্ষগুলো রেখেই সড়ক প্রশস্তকরণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী তারা বলেন, ‘১৮৪০ সালে জমিদার কালি পোদ্দার বাবু তার মায়ের গঙ্গাস্নানের জন্য যশোর থেকে কলকাতা পর্যন্ত সড়কটি নির্মাণ করেন। আর মায়ের নির্দেশ অনুযায়ী পথচারীদের সুবিধার জন্য রাস্তার দুই পাশে রোপণ করেন অসংখ্য গাছ। অথচ সড়কটি প্রশস্তকরণ ও সংস্কার করতে শতবর্ষী গাছগুলো কেটে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি মোটেও ঠিক হবে না।’

যশোর-বেনাপোল সড়কের শতবর্ষী গাছগুলো মুক্তিযুদ্ধ ও দেশের ইতিহাসের সাক্ষী জানিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, ‘১৯৭১ সালে হাজার হাজার নারী-পুরুষ-শিশু শরণার্থী হয়েছিলেন এই সড়ক দিয়েই। মিত্রবাহিনীও এসেছিলেন এই পথ ধরেই।’ তারা আরও বলেন, ‘গাছগুলো রেখেই সড়ক প্রশস্ত করা যেতে পারে। বেনাপোলের ওপাশেও গাছগুলো রেখে পাশ দিয়ে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। সুতরাং আমাদের এখানেও তা সম্ভব।’

15

গাছ কেটে সড়ক প্রশস্তকরণ প্রসঙ্গে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সাইবুর রহমান মোল্লা বলেন, ‘একসঙ্গে এত গাছ কেটে ফেলা ঠিক হবে না। এতে বাতাসে কার্বনডাইঅক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাবে; অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেবে। আর বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে গেলে তা পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বৈশ্বিক উষ্ণতা মোকাবেলায় গাছ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

তাই গাছগুলো না কেটে কীভাবে উন্নয়ন কাজ করা যায়, তা ভেবে দেখা দরকার।’ সওজ যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক দিয়ে দেশের অন্যতম বৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল থেকে হাজার হাজার টন মালামাল পরিবহন হয়। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় এটি এখন জরাজীর্ণ। এ কারণে এটি পুনর্নির্মাণের একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ৭ দশমিক ৩ মিটার মূল পেভমেন্ট এবং দু’পাশে দেড় মিটার করে হার্ডশোল্ডার রেখে মহাসড়কটি সংস্কারের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের উভয় পাশের প্রায় ২৭০০ গাছ কাটতে হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

আপডেট টাইম : ০৪:০১:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মার্চ ২০১৮

হাওর  বার্তা ডেস্কঃ যশোর রোডের ১৫০ বছরের পুরনো বৃক্ষসহ প্রায় ২ হাজার ৭০০টি গাছ এখন হুমকির মুখে। যশোর-বেনাপোল সড়ক প্রশস্তকরণে এগুলো কেটে ফেলতে হবে বলে জানিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। তবে গাছ রেখে রাস্তা প্রশস্তকরণের দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা।

যশোর-বেনাপোল সড়ক প্রশস্তকরণে কেটে ফেলা হবে দুই পাশের গাছগুলো যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের একনেকের সভায় ৩২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে যশোর-বেনাপোল জাতীয় সড়কের (দড়াটানা-বেনাপোল পর্যন্ত) ৩৮ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর নকশা অনুযায়ী রাস্তার দুই পাশের গাছগুলো কেটে ফেলার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ রয়েছে।

14

যদিও বৃক্ষগুলো রেখেই সড়ক প্রশস্তকরণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী তারা বলেন, ‘১৮৪০ সালে জমিদার কালি পোদ্দার বাবু তার মায়ের গঙ্গাস্নানের জন্য যশোর থেকে কলকাতা পর্যন্ত সড়কটি নির্মাণ করেন। আর মায়ের নির্দেশ অনুযায়ী পথচারীদের সুবিধার জন্য রাস্তার দুই পাশে রোপণ করেন অসংখ্য গাছ। অথচ সড়কটি প্রশস্তকরণ ও সংস্কার করতে শতবর্ষী গাছগুলো কেটে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি মোটেও ঠিক হবে না।’

যশোর-বেনাপোল সড়কের শতবর্ষী গাছগুলো মুক্তিযুদ্ধ ও দেশের ইতিহাসের সাক্ষী জানিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, ‘১৯৭১ সালে হাজার হাজার নারী-পুরুষ-শিশু শরণার্থী হয়েছিলেন এই সড়ক দিয়েই। মিত্রবাহিনীও এসেছিলেন এই পথ ধরেই।’ তারা আরও বলেন, ‘গাছগুলো রেখেই সড়ক প্রশস্ত করা যেতে পারে। বেনাপোলের ওপাশেও গাছগুলো রেখে পাশ দিয়ে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। সুতরাং আমাদের এখানেও তা সম্ভব।’

15

গাছ কেটে সড়ক প্রশস্তকরণ প্রসঙ্গে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সাইবুর রহমান মোল্লা বলেন, ‘একসঙ্গে এত গাছ কেটে ফেলা ঠিক হবে না। এতে বাতাসে কার্বনডাইঅক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাবে; অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেবে। আর বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে গেলে তা পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বৈশ্বিক উষ্ণতা মোকাবেলায় গাছ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

তাই গাছগুলো না কেটে কীভাবে উন্নয়ন কাজ করা যায়, তা ভেবে দেখা দরকার।’ সওজ যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক দিয়ে দেশের অন্যতম বৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল থেকে হাজার হাজার টন মালামাল পরিবহন হয়। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় এটি এখন জরাজীর্ণ। এ কারণে এটি পুনর্নির্মাণের একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ৭ দশমিক ৩ মিটার মূল পেভমেন্ট এবং দু’পাশে দেড় মিটার করে হার্ডশোল্ডার রেখে মহাসড়কটি সংস্কারের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের উভয় পাশের প্রায় ২৭০০ গাছ কাটতে হবে।