হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রায় ২০/২২ বছর আগের কথা। হাটে হাটে সবজি বিক্রি করতেন নাসির উদ্দিন। এতে স্ত্রী ও চার সন্তান নিয়ে দু’বেলা খাবার যোগাড় করাই মুশকিল হয়ে পড়তো তার। অভাব দূর করতে নিজের প্রায় ৪০ শতক জমিতে ফুলের চারা উৎপাদন শুরু করেন তিনি। পাশাপাশি অন্যান্য ফলদ, বনজ ও ওষুধি গাছের চারাও উৎপাদন শুরু করেন। আর তাতেই পাল্টে যায় জীবন। বছরের চার/পাঁচ মাসে শুধু ফুলের চারা বিক্রি করে আয় করেন দুই লাখ টাকা। আর বাকি সময়ে অন্যান্য চারা উৎপাদন করেও লাখ লাখ টাকা আয় হয় তার।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিবনাথপুর গ্রামের নাসির উদ্দিনের সাফল্য দেখে ফুল চাষ শুরু করে অনেকেই এখন স্বাবলম্বী।
এমনই একজন শাহ আলী। তিনি জানান, গত ডিসেম্বর মাসে মোট ৫০ শতক জমিতে তিনি ফুলের চাষ শুরু করেছেন। এর মধ্যে ৩০ শতক নিজের, বাকিটা লিজ নেওয়া। তাতে খরচ হয় প্রায় ৪০ হাজার টাকা। আর উৎপাদন করেছেন প্রায় দেড় লাখ টাকার ফুলগাছ।
একই এলাকার আলেয়া খাতুন জানান, তার স্বামী আব্দুর রহমানও ফুলগাছ চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। ফুলের পাশাপাশি মেহগনি, ইউক্যালিপটাস, আম, কাঁঠাল, লিচুর চারাও উৎপাদন হয় তাদের নার্সারিতে।
আব্দুল মান্নান, আব্দুল হালিম, ইউনুছ আলী, রফিকুল ইসলামসহ স্থানীয় অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারাসহ এ গ্রামের অন্তত অর্ধ শতাধিক কৃষক ফুলের চারা উৎপাদন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই আগে রিকশা চালিয়ে, কৃষি দিনমজুর দিয়ে অথবা তাঁত শ্রমিকের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। নিজের সামান্য জমি কিংবা অন্যের জমি বাৎসরিক চুক্তিতে লিজ নিয়ে ফুলগাছের চারা উৎপাদন করেন তারা।
অক্টোবর মাসের প্রথমদিকে চাষিরা দেশি গোলাপ, বিদেশি গোলাপ, চাইনিজ গাঁদা, হাইব্রিড গাঁদা, দেশি গাঁদা, বর্ষালী গাঁদা, ডালিয়া, সূর্যমুখী, হাসনাহেনা, গন্ধরাজ, জবা, গেটফুল, চন্দ্রমল্লিকাসহ নানা জাতের ফুলগাছের চাড়া উৎপাদন।