হাওর বার্তা ডেস্কঃ চট্টগ্রামের শতবর্ষী আবদুল জব্বারের বলীখেলা বিশ্ব ঐতিহ্য করার প্রাথমিক পদক্ষেপ শুরু হয়েছে। জাতিসংঘের শিক্ষা-বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেসকোর কাছে এই বিষয়ে আবেদন করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।
প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলীখেলার আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। গত শুক্রবার মন্ত্রী চট্টগ্রাম অবস্থানকালে জব্বারের বলীখেলা ও কুস্তি প্রতিযোগিতা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী, সংস্কৃতিকর্মী দেওয়ান মাকসুদ, শিল্প সমালোচক আলম খোরশেদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক আলাপ করেছেন।
আলাপ-আলোচনায় মন্ত্রী চলতি বছর থেকে জব্বারের বলীখেলা আয়োজনের সঙ্গে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে সম্পৃক্ত করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
জানতে চাইলে জহরলাল হাজারী বলেন, ‘মন্ত্রী মহোদয় আমাকে ডেকে নিয়ে কথা বলেছেন। বলীখেলাকে ইউনেসকোর স্বীকৃতির বিষয়ে কথা বলেছেন। এ ছাড়া বলীখেলা আয়োজনের সঙ্গে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে যুক্ত করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এ বিষয়ে একটি ফাইল তৈরি করার পরামর্শ দিয়েছেন। ফাইল ও আবদুল জব্বারের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে পরে দেখা করতে বলেছেন তিনি।’
জানা গেছে, বলীখেলার ইতিহাস ঐতিহ্য এবং তথ্য সংগ্রহ করে তা সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে জানানোর জন্য বলা হয়েছে। এরপর আবদুল জব্বারের উত্তরাধিকারীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের ইচ্ছার বিষয়টিও জানার চেষ্টা করবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর হাওর বার্তাকে বলেন, ইউনেসকোর স্বীকৃতি আদায়ের জন্য বাংলা একাডেমি এবং জাতীয় জাদুঘরের সমন্বয়ে একটা দল করতে হবে। তারা পেপার ওয়ার্ক করবে, ইতিহাস সংগ্রহ করবে, গবেষণা করবে। তারপর ইউনেসকোর নির্ধারিত যে ফরম আছে, সেটা পূর্ণাঙ্গ তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে।
আসাদুজ্জামান নূর আরও বলেন, ‘মূল বিষয় ছিল বলীখেলা বা কুস্তি প্রতিযোগিতা। কিন্তু ১১০ বছর পার করে এখন আমরা কি দেখছি বলীখেলার অনুশীলন সেভাবে হচ্ছে না। মেলাটাই বড় হয়ে গেছে। আমরা এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে চাই এবং আরও চাঙা করতে চাই। ইউনেসকোতে বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য আবেদন করা হবে। এ ছাড়া আমরা সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এই আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত হতে চাই। আবদুল জব্বারের উত্তরাধিকার এবং আয়োজক কমিটির সভাপতিকে মন্ত্রণালয়ে আসতে বলেছি।’
উল্লেখ্য, ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বাঙালি যুব সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ এবং উদ্বুদ্ধ করতে চট্টগ্রামের বদরপতি এলাকার ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর বলীখেলা বা কুস্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলেন। ১৯০৯ সালে তিনি (বাংলা বছরের ১২ বৈশাখ) নিজ নামে লালদীঘির মাঠে এই বলীখেলার সূচনা করেন। প্রতিবছর বাংলা সনের ১২ বৈশাখ প্রতিযোগিতাটি লালদীঘি মাঠে অনুষ্ঠিত হয়।
জানতে চাইলে আবদুল জব্বারের উত্তরসূরি মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শওকত আনোয়ার বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য আনন্দের। আমরা কমিটির সবাই বসে সিদ্ধান্ত নেব। সংস্কৃতিমন্ত্রীর আগ্রহ বড় কথা। আমরা তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করব।