ঢাকা ০৬:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাঠজুড়ে সরিষা আবাদ সমারোহে কৃষকের মুখে হাসি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:০৩:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ জানুয়ারী ২০১৮
  • ৩১০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মাঠের পর মাঠ জুড়ে শুধুই হলুদের সমারোহ। মাঠজুড়ে গুন গুন করছে মৌমাছি। এমনই দৃশ্য চোখে পড়বে নীলফামারীতে।

চলতি রবি মৌসুমে জেলায় রেকর্ড পরিমাণ সরিষার আবাদ হয়েছে। এ মৌসমে সরিষা চাষ লাভজনক হওয়ায় আবাদে মনোযোগ দিয়েছে এলাকার কৃষকরা। এছাড়া আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চাষিরা ভালো ফলন পাওয়ার আশা করছেন।

সদর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এবারে চলতি মৌসুমে উপজেলায় এক হাজার ৮৪০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ছিল। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অর্জিত জমির পরিমাণ দুই হাজার ১শ’ হেক্টর। উফসি জাতের সরিষা চাষ করা হয়েছে।

এ ছাড়াও টলি-৭ ও সম্পদ জাতের সরিষা রয়েছে। মাঠে মাঠে শুধুই যেন হলুদের সমারোহ। গুন গুন করছে মৌমাছি। সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করতে ব্যস্ত মৌমাছির ঝাঁক। এদিকে কম খরচে বেশি লাভের আশায় কৃষকরা এবার বোরো ধানের জমিতে আগাম জাতের ও অধিক ফলনশীল তেল জাতীয় এই ফসলের চাষ করছেন।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা। নীলফামারী সদরের রামনগর ইউনিয়নের বিশমুড়ি এলাকার কৃষক আশরাফ আলী বলেন, কয়েক দফা বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তারা জমিতে আগাম জাতের সরিষার আবাদ করছেন।

তিনি বলেন, ধানের দামের দরপতনের কারণেই প্রতিবছরই তাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। তাই বিকল্প ফসল হিসেবে অন্য ফসলের পাশাপাশি তারা সরিষা চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

একই এলাকার (ইউনিয়নের) বাহালীপাড়া সরকার পাড়া গ্রামের বাবুল হোসেন বলেন, চলতি মৌসমে দুই বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। সরিষা তুলে নিয়ে ওই জমিতে বোরো ধান লাগাবেন। সরিষার ফসল থেকে উপার্জিত আয় বোরো ধান উৎপাদনে সহায়ক হবে বলে দাবি করেন তিনি।

উপজেলার টুপামারী ইউনিয়নের চৌধুরীপাড়া গ্রামের খোকন মিয়া বলেন, আগাম জাতের সরিষার অর্জিত অর্থ দিয়ে বোরো ধানের খরচ চালানো সহজ হবে। এছাড়াও সরিষা চাষে সার কম প্রয়োগ করতে হয়। সেচ, কীটনাশক ও নিড়ানি লাগে না। একেবারই খরচ কম ও স্বল্প সময়ে এ ফসল ঘরে তোলা যায়। বর্তমান বাজারে দামও ভাল।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলাম বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। তিনি বলেন, দেশে কয়েক দফা বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকরা সরিষা চাষের প্রতি ঝুঁকে পড়েছেন।

তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরিষার আবাদ থেকে কৃষকরা বাড়তি মুনাফা আয় করতে পারবেন বলে আশা করেন তিনি। চলতি বছর বিঘা প্রতি সরিষার পরিমাণ ধরা হয়েছে ৬ মণ।

এদিকে, সরিষার রোগ বালাই দমনে মাঠ পর্যায়ে উপ-কৃষি কর্মকর্তা চাষিদের রোগ বালাই দমনে নানা পরামর্শ প্রদান করছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মাঠজুড়ে সরিষা আবাদ সমারোহে কৃষকের মুখে হাসি

আপডেট টাইম : ১২:০৩:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ জানুয়ারী ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মাঠের পর মাঠ জুড়ে শুধুই হলুদের সমারোহ। মাঠজুড়ে গুন গুন করছে মৌমাছি। এমনই দৃশ্য চোখে পড়বে নীলফামারীতে।

চলতি রবি মৌসুমে জেলায় রেকর্ড পরিমাণ সরিষার আবাদ হয়েছে। এ মৌসমে সরিষা চাষ লাভজনক হওয়ায় আবাদে মনোযোগ দিয়েছে এলাকার কৃষকরা। এছাড়া আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চাষিরা ভালো ফলন পাওয়ার আশা করছেন।

সদর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এবারে চলতি মৌসুমে উপজেলায় এক হাজার ৮৪০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ছিল। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অর্জিত জমির পরিমাণ দুই হাজার ১শ’ হেক্টর। উফসি জাতের সরিষা চাষ করা হয়েছে।

এ ছাড়াও টলি-৭ ও সম্পদ জাতের সরিষা রয়েছে। মাঠে মাঠে শুধুই যেন হলুদের সমারোহ। গুন গুন করছে মৌমাছি। সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করতে ব্যস্ত মৌমাছির ঝাঁক। এদিকে কম খরচে বেশি লাভের আশায় কৃষকরা এবার বোরো ধানের জমিতে আগাম জাতের ও অধিক ফলনশীল তেল জাতীয় এই ফসলের চাষ করছেন।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা। নীলফামারী সদরের রামনগর ইউনিয়নের বিশমুড়ি এলাকার কৃষক আশরাফ আলী বলেন, কয়েক দফা বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তারা জমিতে আগাম জাতের সরিষার আবাদ করছেন।

তিনি বলেন, ধানের দামের দরপতনের কারণেই প্রতিবছরই তাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। তাই বিকল্প ফসল হিসেবে অন্য ফসলের পাশাপাশি তারা সরিষা চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

একই এলাকার (ইউনিয়নের) বাহালীপাড়া সরকার পাড়া গ্রামের বাবুল হোসেন বলেন, চলতি মৌসমে দুই বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। সরিষা তুলে নিয়ে ওই জমিতে বোরো ধান লাগাবেন। সরিষার ফসল থেকে উপার্জিত আয় বোরো ধান উৎপাদনে সহায়ক হবে বলে দাবি করেন তিনি।

উপজেলার টুপামারী ইউনিয়নের চৌধুরীপাড়া গ্রামের খোকন মিয়া বলেন, আগাম জাতের সরিষার অর্জিত অর্থ দিয়ে বোরো ধানের খরচ চালানো সহজ হবে। এছাড়াও সরিষা চাষে সার কম প্রয়োগ করতে হয়। সেচ, কীটনাশক ও নিড়ানি লাগে না। একেবারই খরচ কম ও স্বল্প সময়ে এ ফসল ঘরে তোলা যায়। বর্তমান বাজারে দামও ভাল।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলাম বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। তিনি বলেন, দেশে কয়েক দফা বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকরা সরিষা চাষের প্রতি ঝুঁকে পড়েছেন।

তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরিষার আবাদ থেকে কৃষকরা বাড়তি মুনাফা আয় করতে পারবেন বলে আশা করেন তিনি। চলতি বছর বিঘা প্রতি সরিষার পরিমাণ ধরা হয়েছে ৬ মণ।

এদিকে, সরিষার রোগ বালাই দমনে মাঠ পর্যায়ে উপ-কৃষি কর্মকর্তা চাষিদের রোগ বালাই দমনে নানা পরামর্শ প্রদান করছেন।