হাওর বার্তা ডেস্কঃ রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে হওয়া সমঝোতা স্মারক কার্যকর করা সম্ভব হবে না বলে অভিমত প্রকাশ করেছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।
কূটনৈতিক ব্যর্থতার কারণে সরকার মিয়ানমারের সঙ্গে ‘শর্তের চুক্তির ফাঁদে’ পড়েছে বলেও মনে করছেন বিএনপির এই নীতি নির্ধারক।
আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক এই সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক কাউন্সিল (বিডিসি) নামে একটি সংগঠন।
মওদুদ আহমেদ বলেন, ‘সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতার কারণে বাংলাদেশকে মিয়ানমারের কাছে একটি চুক্তির ফাঁদে পড়তে হয়েছে। কেননা, ১৯ দফা শর্তের ওপর যে চুক্তি হয়েছে তা কোনো দিনই কার্যকর করা সম্ভব হবে না। দেশের সংবাদ মাধ্যম থেকে শুরু করে যারা বিশ্লেষক রয়েছেন তারাও বলছেন, এই চুক্তি কার্যকর সম্ভব হবে না। কারণ ভারত, চীন ও রাশিয়াকে বাংলাদেশ সরকার তাদের পক্ষে আনতে পারেনি। এটাই এই সরকারের ব্যর্থতা।’
ভবিষ্যতে রোহিঙ্গাদের কারণে বাংলাদেশ সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নৈরাজ্য ও অরাজকতা পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে বলে জানান মওদুদ।
নোয়াখালীর ভাসান চরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের প্রক্রিয়াকে সরকারের অত্যন্ত ভুল সিদ্ধান্ত মন্তব্য করে অবিলম্বে প্রকল্প বাতিলের আহ্বান জানান প্রবীণ এই আইনজীবী।
তিনি বলেন, ‘নোয়াখালীর ভাসান চরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করা আত্মঘাতী। কারণ এটা একটা নিভৃত এলাকা। এটা জলদস্যুদের জায়গা। ১ লাখ মানুষকে প্রত্যাবাসন করতে ২ কোটি ৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা বরাদ্দ করেছে সরকার। এই টাকা আমাদের টাকা, বাংলাদেশের মানুষের টাকা। এটা বিদেশি কোনো দান নয়। একদিকে, আপনি তাদের ফেরাতে চুক্তি করছেন, অপরদিকে তাদের থাকার জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা করছেন।’
‘এতে তারা দেখবে যে, বাংলাদেশে গেলে একটা স্থান পাওয়া যাবে। তারা ক্রমেই তাদের বিভিন্ন দাবি জানাবে, তাদের শিক্ষা দান, পরিচর্যা করতে হবে, সেখানে বিদ্যুৎ দিতে হবে, গ্যাস লাইন দিতে হবে, তাদের এই চাহিদাগুলো দিন দিন বাড়তে থাকবে। এই বোঝা বাংলাদেশের মানুষ ও সরকারের নেওয়া সম্ভব হবে না। এটা একটা ভুল সিদ্ধান্ত। এই প্রকল্প অবিলম্বে বাতিল করুন’, বলেন তিনি।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির সমালোচনা করে দলটির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘এতে প্রমাণ হলো সরকার সম্পূর্ণভাবে নিম্ন আদালতকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং সরকারের নিয়ন্ত্রণে এই বিচারকেরা কাজ করে বলেই তাদের কোনো স্বাধীনতা নেই। এজন্য হয়তো তাকে বাধ্য হয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে হয়েছে শুধু খালেদা জিয়াকে জনসম্মুখে হেয় করার জন্য। এই ধরনের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেওয়া সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এম এ হালিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, এনডিপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মঞ্জুর হোসেন ঈশা, শাহবাগ থানা কৃষক দলের সভাপতি এম জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।