হাওর বার্তা ডেস্কঃ হেমন্তে সোনালী ধানের মিষ্টি গন্ধে মেতে উঠেছে বাংলার জনপদ। মাঠে মাঠে এখন রোপা আমন ধান কাটা ও মাড়াই পুরোদমে শুরু হয়েছে। মেহেরপুর, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গা (যশোর) অ লে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকেরা। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় নির্বিঘ্নে ধান কাটা-মাড়াই কাজ করছে কৃষক। কৃষি বিভাগের দাবি, ধান উৎপাদনের এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে যশোর অ লের ছয় জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬ হাজার ১৪৭ হেক্টর বেশি জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ হয়েছে। মেহেরপুর, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গা জেলায় রোপা আমনের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল চার লাখ ২২ হাজার ৮শ ২৫ হেক্টর জমি। তবে চাষাবাদ হয়েছে ৪ লাখ ২৮ হাজার ৯শ ৭২ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে হাইব্রিড ধান ১৭ হাজার ৯শ ৯৭ হেক্টর, উচ্চ ফলনশীল ৪ লাখ ৭ হাজার ১শ ২০ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ধান ৩ হাজার ৮শ ৫৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।
এ অ লের মাঠে মাঠে পাকা ধান কাটার ধুম পড়েছে। ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষক। ইতোমধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে। কৃষকের আঙিনা ভরে উঠছে সোনালি ধান; মুখে ফুটেছে হাসির ঝিলিক। ফসলের মৌ মৌ গন্ধে ভরে উঠছে সারা বাড়ি। উঠনে ছড়ানো সোনালি ধান। সাথে আনন্দের বন্যা। ঘরে ঘরে হবে নবান্ন উৎসব। কন্যা-জায়া-জননীর ব্যস্ততা এখন দিনরাত।
মেহেরপুর সদর উপজেলার বন্দর গ্রামের কৃষক আখের আলি জানান, আট বিঘা জমিতে চাষ করেছেন। ধান কাটা শুরু হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সব ধান ঘরে চলে আসবে।
মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান গ্রামের কৃষক আনসার আলি বলেন, তিন বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেছিলাম। ফলন ভাল হয়েছে। দামও পেয়েছি ভাল। প্রতিবছর ধান উঠার সময় দাম পড়ে যায়। কিন্তু এবার দাম পড়েনি। এজন্য কৃষকদের খুব বেশি লোকসান হবে না।
গাংনী উপজেলার ধলা গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, মাঠে মাঠে ধান কাটা উৎসব শুরু হয়েছে। এরপর নতুন ধানের চালের গুড়ায় ঘরে ঘরে নবান্ন উৎসব হবে।
যশোর অ লের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক চন্ডী দাস কুন্ডু জানান, আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। কৃষকরা আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব ধান ঘরে তুলতে পারবে। অকালে ভারি বর্ষণে ফসলের কিছুটা ক্ষতি হলেও এ বছর ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১১ লাখ ৮৫ হাজার ৯শ ৫৬ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশাবাদী।