ঢাকা ১০:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

বান্দার যে স্বীকৃতি বাস্তবায়নে রয়েছে পরকালের মুক্তি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:৪৭:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ অক্টোবর ২০১৭
  • ৩০৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আল্লাহকে জানা, তার একত্ববাদের ঘোষণা ও অস্তিত্বের স্বীকৃতি প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা অনেক আয়াত নাজিল করেছেন। আর একত্ববাদের বাস্তবায়নই ছিল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নবুয়তি মিশন। এ মিশন পরিচালনায় আল্লাহ যে ওহি পাঠিয়েছেন, প্রিয়নবি তা সাহাবাদের মাঝে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছেন। যার ফলশ্রুতিতে পেয়েছি আমরা হাদিসের বিশাল সংগ্রহ।

হাদিসের এ বিশাল সংগ্রহ মানুষকে আল্লাহ-রাসুল-দ্বীন সম্পর্কে জানতে যথেষ্ট সহায়ক ভূমিকা পালন করে আসছে। হাদিসের বিশাল সংগ্রহশালা থেকে বান্দার কাছ থেকে আল্লাহ তাআলা নিজেকে ‘রব’ বলে যে স্বীকৃতি নিয়েছেন, সে সম্পর্কিত একটি হাদিস তুলে ধরছি-

হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা (না’মান নামক স্থানে) আরাফার দিনে আদম আলাইহিস সালাম থেকে (তথা সমগ্র বনি আদমের নিকট থেকে) একটি বিশেষ প্রতিশ্রæতি গ্রহণ করেন। (প্রতিশ্রুতি গ্রহণের পদ্ধতিটি ছিল এইরূপ) আল্লাহ তাআলা হজরত আদম আলাইহিস সালামের পৃষ্ঠদেশ থেকে তাঁর প্রতিটি সন্তানকে (অর্থাৎ তাদের রূহকে) বের করে নিয়ে আসেন এবং তাঁর সম্মুখে লাল পিপীলিকার ন্যায় ছড়িয়ে দেন।

অতঃপর তাদের মুখোমুখি হয়ে সরাসরি কথা বলেন, ‘আলাসতুবি রাব্বিকুম থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত।’ অর্থাৎ ‘আমি কি তোমাদের রব নই? তারা (রূহ) বলল, অবশ্যই। আমরা সাক্ষী রইলাম। এ স্বীকৃতি গ্রহণ এ জন্য যে, তোমরা যেন কেয়ামতের দিন বলতে না পার যে, আমরা এ বিষয়ে গাফেল ছিলাম কিংবা তোমরা যেন না বল, আমাদের পূর্বপুরুষগণই শিরক করেছে আর আমরা তাদের পরবর্তী বংশধর, তবে কি পথভ্রষ্টদের কৃতকর্মের জন্য তুমি আমাদেরকে ধংস করবে? (মুসনাদে আহমদ, নাসাঈ)

উল্লেখিত হাদিসে থেকে জানা যায়, সব মানুষ আল্লাহকে প্রভু বলে স্বীকৃতি দিয়েই দুনিয়াতে এসেছে; সুতরাং মানুষকে যথাযথ নিয়মে আল্লাহর হুকুম পালন করাই মানুষের একমাত্র করণীয়।

মানুষের দেয়া স্বীকৃতি বাস্তবায়নে আল্লাহ তাআলা প্রতিদিন মানুষকে ৫ ওয়াক্ত নামাজ ইবাদত হিসেবে দিয়েছেন। আর সে নামাজে রবের স্বীকৃতির বিষয়টি তুলে ধরেছেন। যেমন- নামাজের সুরা ফাতিহায়, রুকুর তাসবিহ, রুকুতে থেকে ওঠার সময়, সিজদার তাসবিহ এই স্থানগুলোতে মানুষের রব শব্দের ব্যবহার এসেছে।

এ সব স্থানে ‘রব’ শব্দের উল্লেখ; এ যেন আলমে আরওয়াহের স্বীকৃতিকে স্মরণ করিয়ে দেয়। যাতে মানুষ সব সময় আল্লাহর বিধান পালনে সচেষ্ট থাকে।

সর্বোপরি আল্লাহ তাআলা মানুষের পরকালীন জীবনের প্রথম মনজিল কবরে এ ‘রব’ শব্দের মাধ্যমে প্রথম পরীক্ষা গ্রহণ করবেন। আর তাহলো ‘মান রাব্বুকা?’ সুতরাং হে মানুষ! সব সময় রবের স্মরণে নিজেকে আত্মনিয়োগ করুন। পরকালের মুক্তিতে হাদিসের ওপর আমল কুরন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। জীবনে সর্বক্ষেত্রে আল্লাহকে ‘রব’ বলে মেনে নেয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ভুলে শিশুর ভালো চোখে অস্ত্রোপচার

বান্দার যে স্বীকৃতি বাস্তবায়নে রয়েছে পরকালের মুক্তি

আপডেট টাইম : ০৫:৪৭:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ অক্টোবর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আল্লাহকে জানা, তার একত্ববাদের ঘোষণা ও অস্তিত্বের স্বীকৃতি প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা অনেক আয়াত নাজিল করেছেন। আর একত্ববাদের বাস্তবায়নই ছিল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নবুয়তি মিশন। এ মিশন পরিচালনায় আল্লাহ যে ওহি পাঠিয়েছেন, প্রিয়নবি তা সাহাবাদের মাঝে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছেন। যার ফলশ্রুতিতে পেয়েছি আমরা হাদিসের বিশাল সংগ্রহ।

হাদিসের এ বিশাল সংগ্রহ মানুষকে আল্লাহ-রাসুল-দ্বীন সম্পর্কে জানতে যথেষ্ট সহায়ক ভূমিকা পালন করে আসছে। হাদিসের বিশাল সংগ্রহশালা থেকে বান্দার কাছ থেকে আল্লাহ তাআলা নিজেকে ‘রব’ বলে যে স্বীকৃতি নিয়েছেন, সে সম্পর্কিত একটি হাদিস তুলে ধরছি-

হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা (না’মান নামক স্থানে) আরাফার দিনে আদম আলাইহিস সালাম থেকে (তথা সমগ্র বনি আদমের নিকট থেকে) একটি বিশেষ প্রতিশ্রæতি গ্রহণ করেন। (প্রতিশ্রুতি গ্রহণের পদ্ধতিটি ছিল এইরূপ) আল্লাহ তাআলা হজরত আদম আলাইহিস সালামের পৃষ্ঠদেশ থেকে তাঁর প্রতিটি সন্তানকে (অর্থাৎ তাদের রূহকে) বের করে নিয়ে আসেন এবং তাঁর সম্মুখে লাল পিপীলিকার ন্যায় ছড়িয়ে দেন।

অতঃপর তাদের মুখোমুখি হয়ে সরাসরি কথা বলেন, ‘আলাসতুবি রাব্বিকুম থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত।’ অর্থাৎ ‘আমি কি তোমাদের রব নই? তারা (রূহ) বলল, অবশ্যই। আমরা সাক্ষী রইলাম। এ স্বীকৃতি গ্রহণ এ জন্য যে, তোমরা যেন কেয়ামতের দিন বলতে না পার যে, আমরা এ বিষয়ে গাফেল ছিলাম কিংবা তোমরা যেন না বল, আমাদের পূর্বপুরুষগণই শিরক করেছে আর আমরা তাদের পরবর্তী বংশধর, তবে কি পথভ্রষ্টদের কৃতকর্মের জন্য তুমি আমাদেরকে ধংস করবে? (মুসনাদে আহমদ, নাসাঈ)

উল্লেখিত হাদিসে থেকে জানা যায়, সব মানুষ আল্লাহকে প্রভু বলে স্বীকৃতি দিয়েই দুনিয়াতে এসেছে; সুতরাং মানুষকে যথাযথ নিয়মে আল্লাহর হুকুম পালন করাই মানুষের একমাত্র করণীয়।

মানুষের দেয়া স্বীকৃতি বাস্তবায়নে আল্লাহ তাআলা প্রতিদিন মানুষকে ৫ ওয়াক্ত নামাজ ইবাদত হিসেবে দিয়েছেন। আর সে নামাজে রবের স্বীকৃতির বিষয়টি তুলে ধরেছেন। যেমন- নামাজের সুরা ফাতিহায়, রুকুর তাসবিহ, রুকুতে থেকে ওঠার সময়, সিজদার তাসবিহ এই স্থানগুলোতে মানুষের রব শব্দের ব্যবহার এসেছে।

এ সব স্থানে ‘রব’ শব্দের উল্লেখ; এ যেন আলমে আরওয়াহের স্বীকৃতিকে স্মরণ করিয়ে দেয়। যাতে মানুষ সব সময় আল্লাহর বিধান পালনে সচেষ্ট থাকে।

সর্বোপরি আল্লাহ তাআলা মানুষের পরকালীন জীবনের প্রথম মনজিল কবরে এ ‘রব’ শব্দের মাধ্যমে প্রথম পরীক্ষা গ্রহণ করবেন। আর তাহলো ‘মান রাব্বুকা?’ সুতরাং হে মানুষ! সব সময় রবের স্মরণে নিজেকে আত্মনিয়োগ করুন। পরকালের মুক্তিতে হাদিসের ওপর আমল কুরন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। জীবনে সর্বক্ষেত্রে আল্লাহকে ‘রব’ বলে মেনে নেয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।