ঢাকা ১১:২৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চিংড়ি খাতে ব্যাংক সুদের হার ৯ শতাংশ করার প্রস্তাব

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১৫:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ অগাস্ট ২০১৫
  • ৩৫৩ বার

আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা ও উৎপাদন ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে চিংড়ি খাতে ব্যাংক প্রদত্ত চলতি মূলধন ঋণের সুদের হার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ করা প্রস্তাব করা হয়েছে নতুন রপ্তানি নীতিতে।

সরকার দেশের ব্যাপক জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান এবং ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করার উদ্দেশ্যে রপ্তানি বাণিজ্যে গতিশীলতা আনার লক্ষ্যে সম্প্রতি তিন বছর মেয়াদে (২০১৫-২০১৮) রপ্তানি নীতি ঘোষণা করেছে। নতুন রপ্তানি নীতিতে হিমায়িত মৎস্য ও মৎস্য পণ্য শিল্পের জন্য বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রেখে উন্নত সনাতন পদ্ধতি ও আধা নিবিড় চিংড়ি ও মৎস্য চাষের পদ্ধতি অবলম্বন করে চিংড়ি ও মৎস্য উৎপাদন বাড়ানোর জন্য চিংড়ি ও মৎস্য চাষিদের স্বল্প সুদে সহজ কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য ঋণ দেওয়া হবে।

হিমায়িত খাদ্য খাতে পণ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও রপ্তানির লক্ষ্যে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল দেওয়া হবে। পণ্যের উন্নতমান এবং সেনিটারি ও ফাইটো-স্যানিটারি (এসপিএস) সংশ্লিষ্ট মান নিশ্চিতকরণের জন্য সরকারি ও বেসরকারি বা যৌথ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন অ্যাক্রিডেটেড টেস্টিং ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠাসহ সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।

হিমায়িত খাদ্যের বাজার সম্প্রসারণ ও সংহতকরণের জন্য বিদেশে বিপণন মিশন পাঠানো, বিদেশে একক দেশীয় মেলার আয়োজন, দেশে ও বিদেশে আন্তর্জাতিক মেলার আয়োজন ও অংশ গ্রহণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আমদানিকৃত ফিশ-ফিড ব্যবহারের উপযোগী কি-না এবং তাতে দূষিত বা নিষিদ্ধ উপাদান বা সাবসটেন্স আছে কি-না, তা পণ্য চালান খালাসের আগে শুল্ক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিশ্চিত হতে হবে। বিএসটিআই ও মৎস্য অধিদপ্তর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে। মান যাচাই ব্যবস্থা উন্নততর ও বিস্তৃত করার জন্য মৎস্য অধিদপ্তর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

রপ্তানির উদ্দেশ্যে আহরণোত্তর স্বাস্থ্যসম্মত চিংড়ি ও মৎস্য নিরাপত্তায় প্রক্রিয়াকরণ কারখানায় দ্রুত পৌঁছার জন্য চিংড়ি ও মৎস্য উৎপাদন এলাকায় কমন রিসিভিং সেন্টার স্থাপনে প্রয়োজনীয় খাসজমি বরাদ্দ ও অবকাঠামো নির্মাণে স্বল্পসুদে ঋণের ব্যবস্থা করা হবে। চিংড়ি ও মৎস্য চাষ ঝুঁকিপূর্ণ বিধায় কৃষি শস্যের মতো চিংড়ি ও মৎস্য বীমা চালু করা করা হবে। চিংড়ি ও মৎস্য উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে চাষাঞ্চলের বাঁধ সংস্কার, খাল খননসহ অন্যান্য অবকাঠামো তৈরিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও মৎস্য অধিদপ্তর বিশেষ প্রকল্প নেবে।

সূত্র জানায়, নতুন রপ্তানি নীতিতে চিংড়ি ও মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধিকল্পে পোনা, খাদ্য, বিদ্যুৎ ও কেমিক্যাল ইত্যাদিতে শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চাষিদের উন্নত সনাতন চিংড়ি ও মৎস্য চাষে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কর্মকৌশল গ্রহণ করা হবে।

চিংড়ি ও মৎস্য চাষের উন্নয়নে মাধ্যমে দেশের জনগণের প্রোটিন চাহিদা পূরণের পাশাপাশি ২০২১ সালের মধ্যে রপ্তানি আয় ৫০ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করার লক্ষ্যে মৎস্য ব্যাংক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

দারিদ্র বিমোচনের জন্য নিবন্ধিত ক্ষুদ্র চিংড়ি ও মৎস্য চাষিদের স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা দেওয়া হবে। বাংলাদেশে বাগদা চিংড়িকে ‘জাতীয় ব্র্যান্ড’ হিসেবে বিশ্বে তুলে ধরার উদ্যোগ নেওয়া হবে। রপ্তানিতে ব্যাপক চাহিদা থাকায় প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রেখে কাঁকড়া ও কুঁচে চাষের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

চিংড়ি খাতে ব্যাংক সুদের হার ৯ শতাংশ করার প্রস্তাব

আপডেট টাইম : ১২:১৫:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ অগাস্ট ২০১৫

আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা ও উৎপাদন ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে চিংড়ি খাতে ব্যাংক প্রদত্ত চলতি মূলধন ঋণের সুদের হার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ করা প্রস্তাব করা হয়েছে নতুন রপ্তানি নীতিতে।

সরকার দেশের ব্যাপক জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান এবং ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করার উদ্দেশ্যে রপ্তানি বাণিজ্যে গতিশীলতা আনার লক্ষ্যে সম্প্রতি তিন বছর মেয়াদে (২০১৫-২০১৮) রপ্তানি নীতি ঘোষণা করেছে। নতুন রপ্তানি নীতিতে হিমায়িত মৎস্য ও মৎস্য পণ্য শিল্পের জন্য বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রেখে উন্নত সনাতন পদ্ধতি ও আধা নিবিড় চিংড়ি ও মৎস্য চাষের পদ্ধতি অবলম্বন করে চিংড়ি ও মৎস্য উৎপাদন বাড়ানোর জন্য চিংড়ি ও মৎস্য চাষিদের স্বল্প সুদে সহজ কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য ঋণ দেওয়া হবে।

হিমায়িত খাদ্য খাতে পণ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও রপ্তানির লক্ষ্যে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল দেওয়া হবে। পণ্যের উন্নতমান এবং সেনিটারি ও ফাইটো-স্যানিটারি (এসপিএস) সংশ্লিষ্ট মান নিশ্চিতকরণের জন্য সরকারি ও বেসরকারি বা যৌথ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন অ্যাক্রিডেটেড টেস্টিং ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠাসহ সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।

হিমায়িত খাদ্যের বাজার সম্প্রসারণ ও সংহতকরণের জন্য বিদেশে বিপণন মিশন পাঠানো, বিদেশে একক দেশীয় মেলার আয়োজন, দেশে ও বিদেশে আন্তর্জাতিক মেলার আয়োজন ও অংশ গ্রহণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আমদানিকৃত ফিশ-ফিড ব্যবহারের উপযোগী কি-না এবং তাতে দূষিত বা নিষিদ্ধ উপাদান বা সাবসটেন্স আছে কি-না, তা পণ্য চালান খালাসের আগে শুল্ক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিশ্চিত হতে হবে। বিএসটিআই ও মৎস্য অধিদপ্তর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে। মান যাচাই ব্যবস্থা উন্নততর ও বিস্তৃত করার জন্য মৎস্য অধিদপ্তর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

রপ্তানির উদ্দেশ্যে আহরণোত্তর স্বাস্থ্যসম্মত চিংড়ি ও মৎস্য নিরাপত্তায় প্রক্রিয়াকরণ কারখানায় দ্রুত পৌঁছার জন্য চিংড়ি ও মৎস্য উৎপাদন এলাকায় কমন রিসিভিং সেন্টার স্থাপনে প্রয়োজনীয় খাসজমি বরাদ্দ ও অবকাঠামো নির্মাণে স্বল্পসুদে ঋণের ব্যবস্থা করা হবে। চিংড়ি ও মৎস্য চাষ ঝুঁকিপূর্ণ বিধায় কৃষি শস্যের মতো চিংড়ি ও মৎস্য বীমা চালু করা করা হবে। চিংড়ি ও মৎস্য উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে চাষাঞ্চলের বাঁধ সংস্কার, খাল খননসহ অন্যান্য অবকাঠামো তৈরিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও মৎস্য অধিদপ্তর বিশেষ প্রকল্প নেবে।

সূত্র জানায়, নতুন রপ্তানি নীতিতে চিংড়ি ও মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধিকল্পে পোনা, খাদ্য, বিদ্যুৎ ও কেমিক্যাল ইত্যাদিতে শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চাষিদের উন্নত সনাতন চিংড়ি ও মৎস্য চাষে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কর্মকৌশল গ্রহণ করা হবে।

চিংড়ি ও মৎস্য চাষের উন্নয়নে মাধ্যমে দেশের জনগণের প্রোটিন চাহিদা পূরণের পাশাপাশি ২০২১ সালের মধ্যে রপ্তানি আয় ৫০ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করার লক্ষ্যে মৎস্য ব্যাংক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

দারিদ্র বিমোচনের জন্য নিবন্ধিত ক্ষুদ্র চিংড়ি ও মৎস্য চাষিদের স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা দেওয়া হবে। বাংলাদেশে বাগদা চিংড়িকে ‘জাতীয় ব্র্যান্ড’ হিসেবে বিশ্বে তুলে ধরার উদ্যোগ নেওয়া হবে। রপ্তানিতে ব্যাপক চাহিদা থাকায় প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রেখে কাঁকড়া ও কুঁচে চাষের উদ্যোগ নেওয়া হবে।