কুষ্ঠরোগ কি ভালো হয়

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মানুষের অতি পুরাতন ব্যাধিগুলোর মধ্যে কুষ্ঠ অন্যতম। পবিত্র কোরআন ও পবিত্র বাইবেলে এই রোগের উল্লেখ আছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব মতে বাংলাদেশের প্রায় এক লাখ পঞ্চাশ হাজার লোক কুষ্ঠ রোগে ভুগছে। কুষ্ঠ বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ জনস্বাস্থ্য সমস্যা। কুষ্ঠ একটি দীর্ঘস্থায়ী কিন্তু স্বল্প সংক্রামক রোগ যা দেহের ত্বক এবং স্নায়ুকে আক্রমণ করে। মাইকোব্যাকটেরিয়াম লেপ্রী (Mycobacterium leprae) নামের একপ্রকার ব্যাকটেরিয়া থেকে এ রোগের সৃষ্টি হয়। কুষ্ঠরোগ জন্মসূত্রে প্রাপ্ত (বংশগত) কোন রোগ নয়। বিধাতার অভিশাপ কিংবা পাপের ফলও নয়।

কুষ্ঠ—নাম শুনলেই কেমন ভয় লাগে, গা ঘিনঘিন করে। এই কুষ্ঠ সম্পর্কে অনেক ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত আছে। কুষ্ঠ কোন বংশগত রোগ নয়। সাধারণত সব ধরনের কুষ্ঠরোগ ছড়ায় না। রোগটিতে প্রধানত দু’ভাগে ভাগ করা যায়। অধিক রোগজীবাণু সম্পন্ন এবং কম রোগজীবাণু সম্পন্ন। এই অধিক রোগজীবাণু সম্পন্ন রোগীরাই কুষ্ঠরোগ বিস্তারের প্রধান উৎস। মাত্র কয়েক বছর আগ পর্যন্ত মনে করা হত যে কুষ্ঠ রোগীর সঙ্গে নিবিড় মেলামেশা বা শারীরিক সংস্পর্শে চামড়ার মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায়। কিন্তু এ ধারণা সবটা ঠিক নয়। চিকিৎসকরা বলছেন কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত বাবা-মা সুস্থ শিশুর জন্ম দিতে পারে। চিকিৎসাকালীন এ রোগ ছড়ায় না। তবে বাসনপত্র, বিছানা, ব্যবহৃত জিনিসপত্র আলাদা রাখতে হবে।

কুষ্ঠরোগে প্রাথমিকভাবে ত্বকের রঙ পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। পরে ত্বকের নিচে গুটলির মতো দেখা যায়। শুরুতে চিকিৎসা না হলে ঘা হতে পারে। হতে পারে অঙ্গবিকৃতি।

অথচ সময়মতো চিকিৎসা করালে কুষ্ঠ নিরাময় করা যায়। ছয় মাস থেকে দুই বছর ওষুধ সেবনের মাধ্যমে কুষ্ঠ নিরাময় করা যায়। তাই ভীত হওয়ার প্রয়োজন নেই।

সরকারি কুষ্ঠ হাসপাতাল, থানা স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ঢাকা মহাখালীর কুষ্ঠ হাসপাতালসহ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা বিনামূল্যে বিনামূল্যে কুষ্ঠরোগের ওষুধ বিতরণ করে। কাজেই কুষ্ঠের নাম শুনে ভীত না হয়ে ধৈর্যের সঙ্গে চিকিৎসা করানোই বুদ্ধিমানের কাজ এবং সেটিই বেঁচে থাকার পথ।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর