হাওর বার্তা ডেস্কঃ যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র নির্মাণে নতুন নীতিমালার খসড়া করেছে সরকার। তথ্য মন্ত্রণালয় গত সোমবার তাদের ওয়েবসাইটে খসড়াটি প্রকাশ করেছে। এখন চলছে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের মতামত নেওয়ার কাজ। এর পরই খসড়া নীতিমালাটি চূড়ান্ত করা হবে।
যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত সব চলচ্চিত্রের প্রচারের সময় যৌথ প্রযোজনার বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। সব দেশের শিল্পী ও কলাকুশলীদের নাম সমানভাবে গুরুত্বসহকারে উল্লেখ করতে হবে। সব দেশের শিল্পীর ছবি সমানভাবে প্রদর্শন করার কথাও বলা হয়েছে।
বিদেশি কোনো প্রযোজক বা পরিচালক যৌথ প্রযোজনার নীতিমালা লঙ্ঘন করলে পরবর্তী সময়ে তিনি বা তাঁরা বাংলাদেশে যৌথ প্রযোজনায় চলচ্চিত্র নির্মাণের অনুমতি পাবেন না।
জানা গেছে, ২০১২ সালের নীতিমালাকে ভিত্তি ধরে নতুন নীতিমালাটি করা হয়েছে। এ বিষয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (চলচ্চিত্র) ইউছুব আলী মোল্লা বলেন, ‘২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খসড়াটির ওপর মতামত নেওয়া হবে। অন্তর্ভুক্ত করার মতো কোনো মতামত পাওয়া গেলে তা যুক্ত করে খসড়া চূড়ান্ত করা হবে।’
খসড়া নীতিমালায় আরো বলা হয়েছে, চলচ্চিত্র পরিচালনার ক্ষেত্রে দেশগুলোর যৌথ চলচ্চিত্র পরিচালক নিয়োজনকে উৎসাহিত করা হবে। কোনো কারণ ও প্রয়োজনে শিল্পী ও কলাকুশলী সমানুপাতিক হারে নিয়োগ না করে কমবেশি করার আবশ্যকতা থাকলে যৌথ প্রযোজনার আবেদনপত্র জমা দেওয়ার সময় যথাযথ যৌক্তিকতা প্রদর্শন করতে হবে।
চলচ্চিত্রের কাহিনি মৌলিক হতে হবে। শুটিং লোকেশন সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সমানুপাতিক হারে নির্ধারিত হবে। কাহিনি ও চিত্রনাট্যের প্রয়োজনে শুটিংয়ের লোকেশন সমানুপাতিক হারে নির্ধারণ করা না গেলে আবেদনপত্র দাখিলের সময় যথাযথ যৌক্তিকতা প্রদর্শন করতে হবে। বাছাই কমিটির মতামত সাপেক্ষে মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে বিশেষ অনুমতি দেবে।
কাহিনির প্রয়োজনে তৃতীয় কোনো দেশ এবং দেশগুলোতে যৌথ চলচ্চিত্রের চিত্রায়ণ করা যাবে। চূড়ান্ত অনুমোদন ও চিত্রায়ণের অনুমোদনের আগে চলচ্চিত্র নির্মাণকাজ ও শুটিং শুরু করা যাবে না। চিত্রায়ণের অনুমতি পাওয়ার পর নূন্যতম ৭৫ দিন পার না হলে এই চলচ্চিত্র প্রিভিউয়ের জন্য জমা দেওয়া যাবে না।
যৌথ প্রযোজনায় নির্মিতব্য চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য পর্যালোচনা করে নির্মাণের অনুমোদনের জন্য সুপারিশ বা মতামত দিতে এবং নির্মাণ শেষে চলচ্চিত্র দেখে প্রদর্শনের জন্য চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডে দাখিলের ছাড়পত্র দিতে বিএফডিসিতে [বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন] একটি বাছাই কমিটি গঠন করা হবে।
বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হবেন এই কমিটির সভাপতি। এ ছাড়া কমিটিতে সদস্য হিসেবে থাকবেন তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব [চলচ্চিত্র], বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতি, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি ও সরকারের মনোনীত একজন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব।
বিএফডিসির পরিচালক [উৎপাদন] এই কমিটিতে সদস্যসচিবের দায়িত্ব পালন করবেন। কমিটির প্রস্তাব বিবেচনা করে তথ্য মন্ত্রণালয় যৌথ প্রযোজনায় চলচ্চিত্র নির্মাণের ব্যাপারে চ‚ড়ান্ত প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত দেবে।
যৌথ প্রযোজনায় চলচ্চিত্র নির্মাণের অনুমতি দেওয়া এবং নির্মিত চলচ্চিত্র প্রদর্শনের বিষয়ে বাছাই কমিটির সিদ্ধান্তে সংক্ষুব্ধ প্রযোজক বা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য আপিল করতে পারবেন। আপিল আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে একটি আপিল কমিটি থাকবে।
তথ্যসচিব হবেন এই কমিটির সভাপতি। সদস্য হিসেবে থাকবেন তথ্য মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম বা অতিরিক্ত সচিব এবং সরকার মনোনীত চলচ্চিত্র নির্মাণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিনজন ব্যক্তি।
বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমিটিতে সদস্যসচিবের দায়িত্ব পালন করবেন। বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছাড়া বাছাই কমিটির অন্য কোনো সদস্য আপিল কমিটির সদস্য হতে পারবেন না।