হাওর বার্তা ডেস্কঃ টাইগার দলে ওপেনিংয়ে তামিম ইকবালের সঙ্গে বোঝাপড়াটা দারুণ ইমরুল কায়েসের। নয় বছরের ক্যারিয়ারে ২৮টি টেস্ট ইনিংস খেলেছেন ইমরুল, যার মধ্যে দুই নম্বর পজিশনেই খেলেছেন ২৫টি ম্যাচে।
তামিম-ইমরুল জুটি অনেক কিছুই দিয়েছে দলকে। দেশের হয়ে সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটির পাশাপাশি ওপেনিংয়ে সেরা তিনটি স্কোরই তাদের। তবে তামিমের সঙ্গে এখন আর ইনিংস করতে দেখা যাবে না ইমরুলকে। বাঁ-হাতি এ ব্যাটসম্যানকে তিন নম্বর পজিশনে খেলার জন্য প্রস্তুত হতে বলেছেন জাতীয় দলের হেড কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহে। ‘দলের প্রয়োজন’কে প্রাধান্য দিয়ে তাই তিন নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবেই নিজেকে মানিয়ে নিচ্ছেন ইমরুল।
২০০৮ সালে টেস্ট দলে অভিষেকের পর টানা ৩২ ইনিংসে তামিমের সঙ্গে ইনিংস ওপেন করেছেন ইমরুল। তবে ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুইটি টেস্টে ৩ নম্বর পজিশনে খেলেন ইমরুল। তামিম ইকবালের সঙ্গে তখন শামসুর রহমানকে দিয়ে ইনিংস ওপেন করানো হয়েছিল। তবে এ জুটি সফল না হওয়ায় আবারও তামিমের সঙ্গে ওপেনিংয়ে ফেরেন ইমরুল। গেল বছর সবশেষ ওয়েলিংটন টেস্টেও তামিমের সঙ্গে ইনিংস ওপেন করেছেন। কিন্তু ওয়েলিংটন টেস্টে রান নেয়ার সময় ডাইভ দিয়ে ইনজুরিতে পড়েন ইমরুল। এরপর তিনটি টেস্ট মিস করেছেন। নিউজিল্যান্ড থেকে ইমরুলের জায়গায় ওপেন করতে নেমে ভালো খেলে চলেছেন সৌম্য সরকার। ফলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শততম টেস্টে দলে ফিরে নিজের পছন্দের জায়গা হারাতে হয় ইমরুলকে।
কলম্বো টেস্টে তাকে তিন নম্বরে ব্যাট করতে পাঠান কোচ হাথুরুসিংহে। এরপর থেকেই নতুন অবস্থানের সঙ্গে মানিয়ে নিতে চেষ্টা করছেন ৩০ বছর বয়সী এ ব্যাটসম্যান। একই সঙ্গে টাইগার দলে তিন নম্বর পজিশনে ব্যাট করা মুমিনুলের অবস্থানও নড়বড়ে হয়ে যায়। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঢাকা টেস্টেও তিন নম্বরে ব্যাট করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন ইমরুল। কোচও তাকে সেভাবেই নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানালেন এ টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) মিরপুর শেরেবাংলায় দলের সঙ্গে অনুশীলন শেষে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন ইমরুল। সেখানে আসন্ন টেস্টে তার ব্যাটিং অর্ডার সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘কোচ আমাকে বলেছেন, তিনে ব্যাটিং করার জন্য। নেটে সেভাবেই ব্যাটিং করছি।’
তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস দেশের সবচেয়ে সফল ওপেনিং জুটি। ৪৮ ইনিংসে জুটি বেঁধে দেশের পক্ষে ওপেনিংয়ে সর্বোচ্চ ২২০৫ রান করেন এ দুই ব্যাটসম্যান। গড়টাও ঈর্ষণীয়, ৪৭.৯৩। এছাড়া জায়গা পরিবর্তন করা হলেও তার সঙ্গে মানিয়ে নিতেও কষ্ট। কিন্তু দলের প্রয়োজনে নিজেকে মানিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছেন ইমরুল, ‘ওপেনার থেকে তিন নম্বরে ব্যাটিং করা কঠিন, তবে মানিয়ে নিতে হচ্ছে। সফল ওপেনিং জুটির অংশ হয়েও তিনে ব্যাটিং করার জন্য আমি যখন ব্যাটিংয়ে নামার জন্য প্যাড পরে বসে থাকি, তখন নিজের মধ্যে অস্থিরতা কাজ করে, কখন মাঠে যাব। এটা আসলে এডজাস্ট করে নিতে হয়। তামিমকে যদি দেন, ও পারবে না। একটা সময় আমিও পারতাম না। তারপরও এডজাস্ট করতে হচ্ছে। দলের জন্য, দলের প্রয়োজনে খেলতে হচ্ছে।’
তবে যত কঠিনই হোক জাতীয় দলে খেলার জন্য যে কোনো পজিশনেই খেলতে রাজি ইমরুল। জাতীয় দলে খেলাকেই বড় মনে করছেন তিনি, ‘আমি মনে করি, জাতীয় দলের হয়ে ম্যাচ খেলাই সবচেয়ে বড় অর্জন। নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। ব্যাটিংয়ের জায়গা নিয়ে নিজের পছন্দ থাকে। কিন্তু দল যেটা ভালো মনে করে, সেটাই করতে হবে। আমার মনে হয়, দুই জায়গায়ই আমি ব্যাটিং করতে রাজি; ওপেনিং বা তিন নম্বর যাই হোক।’
গেল বছর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজের সাফল্য মাথায় রাখলে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও স্পিন সহায়ক উইকেটেই লড়াই হবে। সেক্ষেত্রে থাকবে নাথান লায়নকে সামলানোর চ্যালেঞ্জও। দারুণ ফর্মে থাকা এ অজি অফ স্পিনারকে সামলাতে অবশ্য ইমরুলরাও, ‘আমার মনে হয়, নাথান লায়ন বিশ্বের অন্যতম সেরা স্পিনার। আমরা তাকে খেলতে প্রস্তুত। দলের সবাই প্রস্তুত। উপমহাদেশের উইকেট স্পিনারদের সহায়ক হয়। আমরা এটা জানি এবং খেলতে প্রস্তুতও।