ঢাকা ০৩:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কিশোরগঞ্জের বাংলার প্রথম মহিলা কবি চন্দ্রাবতীর শিবমন্দির

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১৫:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ অগাস্ট ২০১৭
  • ৬২১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ষোড়শ শতকের কবি দ্বিজ বংশীদাসের কন্যা চন্দ্রাবতীকে বলা হয় বাংলার প্রথম মহিলা কবি। কিশোরগঞ্জ জেলা শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে জেলা সদরের মাইজকাপন ইউনিয়নের ফুলেশ্বরী নদীর তীরে অবস্থিত পাতুয়াইর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন কালজয়ী কবি চন্দ্রাবতী। কবির লেখা কবিতা বিশ্বের প্রায় ২১ ভাষায় অনুদিত হয়েছে।

বর্তমানে ফুলেশ্বরী নদীর চিহ্ন না থাকলেও কালের সাক্ষী হয়ে রয়েছে ঐতিহাসিক শিব মন্দির। দেশ-বিদেশের নানা স্থান থেকে দর্শনার্থীরা ঐতিহাসিক শিব মন্দির দেখতে ছুটে আসেন। অষ্টকোনাকৃতির মন্দিরটির উচ্চতা ১১ মিটার। আটটি কোনার প্রতিটি বাহুর দৈর্ঘ্য ১.৭ মিটার। বাংলা সাহিত্যের একজন সার্থক ট্রাজিক নায়িকা হিসাবে কিংবদন্তী হয়ে রয়েছেন।

রোমান্টিক মনের অধিকারী চনদ্রাবতীর জীবনে ঘটে যাওয়া প্রেমের বিয়োগান্তক ঘটনার বিবরণ পাওয়া যায় মৈমনসিংহ গীতিকার নয়ন চাঁদ ঘোষ রচিত চন্দ্রাবতীর পালায়। ১২টি অধ্যায়ের ৩৫৪টি ছত্রের এ লোকগাথাঁটি চন্দ্রাবতীর জীবনীর তথ্যভিত্তিক লিখিত প্রামান্য দলিল।

নয়ন চাঁদ ঘোষের বর্ননায়, জয়ানন্দের সাথে সুন্দরী চন্দ্রাবতীর ছিল গভীর প্রণয়। পরিবারের সম্মতিতে তাদের বিয়ে ঠিক হয়। কিন্তু জয়ানন্দ আসমানী নামের একটি মেয়েকে বিবাহ করে ফেলায় চন্দ্রাবতী নাওয়া খাওয়া ত্যাগ করেন। এ করুণ পরিস্থিতিতে কণ্যাকে উদ্ধারের জন্য দ্বিজ বংশীদাস চন্দ্রাবতীকে শিবের নাম জপ করতে ও রামায়ন লিখার উপদেশ প্রদান করেন। চন্দ্রাবতী তার পিতার নিকট দুটি প্রার্থনা করেন। প্রথমটি হল ফুলেশ্বরী নদীর তীরে মন্দির প্রতিষ্ঠা করা এবং দ্বিতীয়টি চিরকুমারী থাকার ইচ্ছা। পিতা তার কন্যার ইচ্ছায় রাজী হন।

কিছুকাল পর জয়ানন্দ অনুতপ্ত হয়ে চন্দ্রাবতীর নিকট ফিতে আসার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন কিন্তু চন্দ্রাবতী রাজী না হওয়ায় জয়ানন্দ তার বাড়ীর পাশে ফুলেশ্বরী নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরবর্তীতে চন্দ্রাবতী নিজেও ফুলেশ্বরী নদীতে নিজের প্রাণ বিসর্জন দেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

কিশোরগঞ্জের বাংলার প্রথম মহিলা কবি চন্দ্রাবতীর শিবমন্দির

আপডেট টাইম : ১২:১৫:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ অগাস্ট ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ষোড়শ শতকের কবি দ্বিজ বংশীদাসের কন্যা চন্দ্রাবতীকে বলা হয় বাংলার প্রথম মহিলা কবি। কিশোরগঞ্জ জেলা শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে জেলা সদরের মাইজকাপন ইউনিয়নের ফুলেশ্বরী নদীর তীরে অবস্থিত পাতুয়াইর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন কালজয়ী কবি চন্দ্রাবতী। কবির লেখা কবিতা বিশ্বের প্রায় ২১ ভাষায় অনুদিত হয়েছে।

বর্তমানে ফুলেশ্বরী নদীর চিহ্ন না থাকলেও কালের সাক্ষী হয়ে রয়েছে ঐতিহাসিক শিব মন্দির। দেশ-বিদেশের নানা স্থান থেকে দর্শনার্থীরা ঐতিহাসিক শিব মন্দির দেখতে ছুটে আসেন। অষ্টকোনাকৃতির মন্দিরটির উচ্চতা ১১ মিটার। আটটি কোনার প্রতিটি বাহুর দৈর্ঘ্য ১.৭ মিটার। বাংলা সাহিত্যের একজন সার্থক ট্রাজিক নায়িকা হিসাবে কিংবদন্তী হয়ে রয়েছেন।

রোমান্টিক মনের অধিকারী চনদ্রাবতীর জীবনে ঘটে যাওয়া প্রেমের বিয়োগান্তক ঘটনার বিবরণ পাওয়া যায় মৈমনসিংহ গীতিকার নয়ন চাঁদ ঘোষ রচিত চন্দ্রাবতীর পালায়। ১২টি অধ্যায়ের ৩৫৪টি ছত্রের এ লোকগাথাঁটি চন্দ্রাবতীর জীবনীর তথ্যভিত্তিক লিখিত প্রামান্য দলিল।

নয়ন চাঁদ ঘোষের বর্ননায়, জয়ানন্দের সাথে সুন্দরী চন্দ্রাবতীর ছিল গভীর প্রণয়। পরিবারের সম্মতিতে তাদের বিয়ে ঠিক হয়। কিন্তু জয়ানন্দ আসমানী নামের একটি মেয়েকে বিবাহ করে ফেলায় চন্দ্রাবতী নাওয়া খাওয়া ত্যাগ করেন। এ করুণ পরিস্থিতিতে কণ্যাকে উদ্ধারের জন্য দ্বিজ বংশীদাস চন্দ্রাবতীকে শিবের নাম জপ করতে ও রামায়ন লিখার উপদেশ প্রদান করেন। চন্দ্রাবতী তার পিতার নিকট দুটি প্রার্থনা করেন। প্রথমটি হল ফুলেশ্বরী নদীর তীরে মন্দির প্রতিষ্ঠা করা এবং দ্বিতীয়টি চিরকুমারী থাকার ইচ্ছা। পিতা তার কন্যার ইচ্ছায় রাজী হন।

কিছুকাল পর জয়ানন্দ অনুতপ্ত হয়ে চন্দ্রাবতীর নিকট ফিতে আসার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন কিন্তু চন্দ্রাবতী রাজী না হওয়ায় জয়ানন্দ তার বাড়ীর পাশে ফুলেশ্বরী নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরবর্তীতে চন্দ্রাবতী নিজেও ফুলেশ্বরী নদীতে নিজের প্রাণ বিসর্জন দেন।