হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল করেছ দান, আমি দিতে এসেছি শ্রাবণের গান… মেঘের ছায়ায় অন্ধকারে রেখেছি ঢেকে তারে এই যে আমার সুরের ক্ষেতের প্রথম সোনার ধান … আজ এনে দিলে, হয় তো দিবে না কাল রিক্ত হবে যে তোমার ফুলের ডাল … প্রথমদিনে এবার কদমের দেখা পাওয়া যায়নি। কদমেরা অবশেষে পাপড়ি মেলেছে।
অনাবিল আবেদন নিয়ে নগরীর উঁচু উঁচু গাছগুলোয় কদমগুচ্ছ জানান দেয়, বর্ষারাণীর সঘন উপস্থিতি। সাদা-হলুদের মৌতাতে মাতে আষাঢ়। সেই রেশে উদ্বেল হয় শ্রাবণ। পূর্ণতা পায় বর্ষার উদযাপন। বড় বড় সবুজ পাতার মাঝে, থোকা থোকা কদম। এমন উপহারে বাঙালি বরাবরই বিহ্বল, মেদুর স্মৃতিতে।
ভরা বর্ষায় রাজধানীতে সৌরভ ছড়াচ্ছে। আসলে, পঞ্জিকার হিসেব ওলট-পালট করে প্রকৃতি এবার নিজের মতো করেই সাজিয়েছে নিজেকে। কদমেরাও তাই সময়ের আগে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিয়ে, ঝরেছে বেলা শেষের আগেই।
বর্ণে-গন্ধে-গীতিতে এবার সেই বাদলকে স্বাগত জানায়নি কদম। সে ফুটেছে সময়ের আগে। ভরা জৈষ্ঠ্যে পাপড়ি মেলে, ঝরেছে আষাঢ় না আসতেই। অবশ্য, পুরন্ত বর্ষার অঝোর ধারায় সিক্ত প্রকৃতিতে, দেরিতে হলেও আবার সুবাস ছড়িয়েছে কাঙ্খিত কদম। কিন্তু কেন পঞ্জিকার হিসেবে এই অবাক গড়মিল? কেনই প্রকৃতির খামখেয়ালিপনায় ঋতুর বদলে যাওয়া?
তাহলে কি এই অনাকঙ্খিত বিবর্তনে সৌরভ বিলাতে কুণ্ঠিত কদম? নানা নৈবদ্য সাজিয়ে প্রকৃতি কেবল দৃষ্টিসুখের অনুঘটক হয় না, আশ্রয়ও দেয় বৈকি। প্রকৃতি ও প্রাণীর নিবিড় সম্পর্ক অনাদিকালের। যেকোনো ছন্দপতনে উভয়ের অস্তিত্বই যে বিপন্ন হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।