হাওর বার্তা ডেস্কঃ গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে বায়ুমণ্ডলে ক্রমবর্ধমান কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা প্রধান খাদ্যশস্য যেমন চাল ও গম থেকে ব্যাপক পরিমাণে প্রোটিন কমিয়ে দেবে।
বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, এর ফলে জনগোষ্ঠীর সঠিকভাবে বেড়ে উঠা বা অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়বে। বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের ক্রমবর্ধমান মাত্রার কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী আরো ১৫ কোটি মানুষ প্রোটিন ঘাটতির ঝুঁকিতে থাকবে।
হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি পরিচালিত এই গবেষণায় ফসলের প্রোটিন মাত্রার ওপর বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রভাব পরিমাপ করা হয়েছে। পর্যাপ্ত প্রোটিনের অভাবে মানুষের সঠিক বিকাশ বাঁধাপ্রাপ্ত হয়, নানা ধরনের রোগে ভোগে এবং অকাল মৃত্যুর সম্ভাবনা বেশি থাকে। কার্বন ডাই অক্সাইড উদ্ভিদের স্টার্চের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে পারে, যার ফলে প্রোটিন এবং অন্যান্য পুষ্টি হ্রাস পাবে।
গবেষকরা হিসেব করে দেখেছেন যে, ক্রমবর্ধমান কার্বন ডাই অক্সাইডের প্রভাবে ২০৫০ সাল নাগাদ বার্লিতে প্রোটিনের পরিমাণ ১৪.৬ শতাংশ, চালে ৭.৬ শতাংশ, গমে ৭.৮ শতাংশ এবং আলুতে ৬.৪ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে।
যদিও প্রোটিনের অভাব পুষ্টির জন্য শুধু বড় আঘাত হিসেবে বিবেচিত হবে না। অন্য একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ক্রমবর্ধমান কার্বন ডাই অক্সাইডের প্রভাবে আয়রন এবং জিংকের মতো খনিজ উপদানগুলোও শস্য থেকে হ্রাস পাবে, ফলে বিশ্বব্যাপী পুষ্টির ঘাটতি আরো বাড়বে।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় বলা হয়েছে, যদি বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের বৃদ্ধি অব্যহত থাকে তাহলে ২০৫০ সাল নাগাদ ১৮টি দেশের মানুষ চাল, গম সহ অন্যান্য প্রধান খাদ্যশস্য থেকে তাদের দৈনন্দিন প্রোটিন চাহিদার ৫ শতাংশের বেশি হারাবে। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৭৬ শতাংশ তাদের প্রতিদিনের প্রোটিনের জন্য উদ্ভিদের ওপর নির্ভর করে, বিশেষ করে দরিদ্র এলাকায়।
গবেষকরা ধারণা করেছেন সর্বাধিক ঝুঁকির শিকার হতে পারে সাব-সাহারান আফ্রিকা, যেখানে লাখ লাখ মানুষ ইতিমধ্যে তাদের খাবারে যথেষ্ট প্রোটিন পান না এবং দক্ষিণ এশিয়া যেখানে চাল ও গম প্রধান খাদ্যশস্য।
এর সমাধান হিসেবে গবেষকরা কাবর্ন নির্গমন নিয়ন্ত্রণ, আরো বিভিন্ন খাবার যোগ, প্রধানতম ফসলের পুষ্টি উপাদান বাড়ানো এবং সেসব ফসল উৎপাদন করা যেগুলোতে কার্বন ডাই অক্সাইডের ক্ষতিকারক প্রভাব কম হয়- এসব বিষয়ে গুরুতারোপ করেছেন।