ঢাকা ১১:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাশরাফির কাছে সবার চেয়ে আলাদা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১০:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুলাই ২০১৭
  • ৩১০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  অসাধারণ! না, এ বিশেষণটা তো বহুলচর্চিত। আমার কাছে রিয়াদ (মাহমুদ উল্লাহ) অন্য রকম একটা চরিত্র। বিশেষ কিছু কারণে ও আমাদের সবার চেয়ে আলাদা।

দল থেকে বাদ পড়লে সবারই খারাপ লাগে। রিয়াদেরও মন খারাপ হতে দেখেছি। কিন্তু কখনোই এটা শুনিনি যে নিজের বাদ পড়ার জন্য ও অন্যকে দায়ী করছে। বরং নিজেকে দোষ দিয়েছে। আরো বেশি কষ্ট করে ঠিকই জাতীয় দলে ফিরেছে। এ মানসিকতাই কিন্তু ওকে বারবার ফিরিয়ে এনেছে দলে। ১০টা বছর লড়াই করে এত দূর উঠে আসার জন্য রিয়াদকে অভিনন্দন।

আরেকটা বড় কারণে ওকে আমি সাধুবাদ দেব। সব ব্যাটসম্যানেরই পছন্দের একটা পজিশন থাকে। বড় খেলোয়াড়দের পছন্দ গুরুত্বও পায় দলে। কিন্তু রিয়াদের সে রকম কিছু নেই। দল যখন যেখানে ব্যাটিং করতে বলেছে, সে করে গেছে। টেস্ট, ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি—কোনো ফরম্যাটেই রিয়াদের নির্দিষ্ট ব্যাটিং পজিশন নেই। তবু কখনো অনুযোগ করেনি ছেলেটা। ক্যারিয়ার শুরু করেছিল লোয়ার অর্ডারে। এখন বেশির ভাগ সময় ওপরে খেলে। তবে আমার বিশ্বাস, শুরু থেকে নির্দিষ্ট একটা জায়গায় খেললে রিয়াদের ব্যাটিং গড় আরো ভালো অবস্থায় থাকত। আমি যে কথাটা বললাম, এটা কিন্তু রিয়াদ নিজে কখনো বলেনি। দল অন্তপ্রাণ মানুষ যাকে বলে।

আবার ব্যাটিং অর্ডারে ওঠানামা করানোর পেছনে যুক্তিও আছে। দলের কাছে রিয়াদের গুরুত্ব আছে বলেই একেক সময় ওকে একেক ‘রোল’ দেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে ভালো ব্যাপার হলো, সে দায়িত্বটা রিয়াদ নিষ্ঠার সঙ্গে পালনও করেছে। ২০১৫ বিশ্বকাপে ওর ব্যাটিংকীর্তির কথা তো নিশ্চয় সবার মনে আছে।

দলে প্রত্যেকেরই নির্দিষ্ট দায়িত্ব থাকে। রিয়াদেরও আছে। তবে সেটা কঠিন। ওয়ানডে কিংবা টি-টোয়েন্টিতে ও যখন ব্যাটিংয়ে নামে, তখন দ্রুত রান তোলার দাবি থাকে। আবার বড় ইনিংস খেলার দায়িত্বও নিতে হয়। আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটির কথা বলব। রিয়াদ যখন নামে, তখন ৪ উইকেট চলে গেছে আমাদের। ওদিকে রানরেটও ছয়ের ওপরে উঠে গেছে। সে সময় কী ইনিংসটাই না খেলল রিয়াদ। আমার বিশ্বাস, ওর অনেক ভালো ইনিংস সবাই ভুলে গেলেও সেদিনেরটা কেউ ভুলবে না।

আমার কাছে রিয়াদের এ সেঞ্চুরিটাই সেরা। ও আরো বড় বড় ইনিংস খেলেছে। কিন্তু আমাকে বেছে নিতে বললে আমি নিউজিল্যান্ডেরটাই বলব। ওই ম্যাচে সাকিবও দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছে। তবে চড়াও হয়ে খেলা নিউজিল্যান্ডকে পাল্টা আক্রমণ শুরুতে করেছিল রিয়াদই।

এখন রিয়াদ যে ফর্মে আছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে এমন আরো ইনিংস দেখার অপেক্ষায় রইলাম।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মাশরাফির কাছে সবার চেয়ে আলাদা

আপডেট টাইম : ১২:১০:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুলাই ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  অসাধারণ! না, এ বিশেষণটা তো বহুলচর্চিত। আমার কাছে রিয়াদ (মাহমুদ উল্লাহ) অন্য রকম একটা চরিত্র। বিশেষ কিছু কারণে ও আমাদের সবার চেয়ে আলাদা।

দল থেকে বাদ পড়লে সবারই খারাপ লাগে। রিয়াদেরও মন খারাপ হতে দেখেছি। কিন্তু কখনোই এটা শুনিনি যে নিজের বাদ পড়ার জন্য ও অন্যকে দায়ী করছে। বরং নিজেকে দোষ দিয়েছে। আরো বেশি কষ্ট করে ঠিকই জাতীয় দলে ফিরেছে। এ মানসিকতাই কিন্তু ওকে বারবার ফিরিয়ে এনেছে দলে। ১০টা বছর লড়াই করে এত দূর উঠে আসার জন্য রিয়াদকে অভিনন্দন।

আরেকটা বড় কারণে ওকে আমি সাধুবাদ দেব। সব ব্যাটসম্যানেরই পছন্দের একটা পজিশন থাকে। বড় খেলোয়াড়দের পছন্দ গুরুত্বও পায় দলে। কিন্তু রিয়াদের সে রকম কিছু নেই। দল যখন যেখানে ব্যাটিং করতে বলেছে, সে করে গেছে। টেস্ট, ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি—কোনো ফরম্যাটেই রিয়াদের নির্দিষ্ট ব্যাটিং পজিশন নেই। তবু কখনো অনুযোগ করেনি ছেলেটা। ক্যারিয়ার শুরু করেছিল লোয়ার অর্ডারে। এখন বেশির ভাগ সময় ওপরে খেলে। তবে আমার বিশ্বাস, শুরু থেকে নির্দিষ্ট একটা জায়গায় খেললে রিয়াদের ব্যাটিং গড় আরো ভালো অবস্থায় থাকত। আমি যে কথাটা বললাম, এটা কিন্তু রিয়াদ নিজে কখনো বলেনি। দল অন্তপ্রাণ মানুষ যাকে বলে।

আবার ব্যাটিং অর্ডারে ওঠানামা করানোর পেছনে যুক্তিও আছে। দলের কাছে রিয়াদের গুরুত্ব আছে বলেই একেক সময় ওকে একেক ‘রোল’ দেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে ভালো ব্যাপার হলো, সে দায়িত্বটা রিয়াদ নিষ্ঠার সঙ্গে পালনও করেছে। ২০১৫ বিশ্বকাপে ওর ব্যাটিংকীর্তির কথা তো নিশ্চয় সবার মনে আছে।

দলে প্রত্যেকেরই নির্দিষ্ট দায়িত্ব থাকে। রিয়াদেরও আছে। তবে সেটা কঠিন। ওয়ানডে কিংবা টি-টোয়েন্টিতে ও যখন ব্যাটিংয়ে নামে, তখন দ্রুত রান তোলার দাবি থাকে। আবার বড় ইনিংস খেলার দায়িত্বও নিতে হয়। আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটির কথা বলব। রিয়াদ যখন নামে, তখন ৪ উইকেট চলে গেছে আমাদের। ওদিকে রানরেটও ছয়ের ওপরে উঠে গেছে। সে সময় কী ইনিংসটাই না খেলল রিয়াদ। আমার বিশ্বাস, ওর অনেক ভালো ইনিংস সবাই ভুলে গেলেও সেদিনেরটা কেউ ভুলবে না।

আমার কাছে রিয়াদের এ সেঞ্চুরিটাই সেরা। ও আরো বড় বড় ইনিংস খেলেছে। কিন্তু আমাকে বেছে নিতে বললে আমি নিউজিল্যান্ডেরটাই বলব। ওই ম্যাচে সাকিবও দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছে। তবে চড়াও হয়ে খেলা নিউজিল্যান্ডকে পাল্টা আক্রমণ শুরুতে করেছিল রিয়াদই।

এখন রিয়াদ যে ফর্মে আছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে এমন আরো ইনিংস দেখার অপেক্ষায় রইলাম।