ঢাকা ০৯:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবার নতুন লড়াইয়ে জামায়াতে ইসলামী

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:২৯:৫৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৬১ বার

রাজনৈতিক দল হিসাবে দেওয়া নিবন্ধন অবৈধ বলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল পুনঃশুনানির (পুনরুজ্জীবিত) জন্য আপিল বিভাগে আবেদন করবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

আজ রোববার সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে এ আবেদন করার কথা রয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর আইনজীবী প্যানেলের একটি সূত্র যুগান্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ১ আগস্ট জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা ভারতে চলে যান। ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। ২৮ আগস্ট জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে জারি করা প্রজ্ঞাপন বাতিল করে সরকার। জামায়াতে ইসলামীর অন্যতম আইনজীবী হলেন মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি ২৮ আগস্ট সুপ্রিমকোর্টে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, জামায়াতে ইসলামীকে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া নিবন্ধন অবৈধ বলে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিলেন, তার বিরুদ্ধে পুনরায় আপিল বিভাগে আবেদন করতে যাচ্ছে দলটি। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ফিরে পেতে আমরা দ্রুততম সময়ে আপিল বিভাগে মামলা পুনরুজ্জীবিতের আবেদন করব।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির শনিবার যুগান্তরকে জানান, রাজনৈতিক দল হিসাবে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া নিবন্ধন অবৈধ বলে রায় দেন হাইকোর্ট। সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে জামায়াত। আপিল শুনানিতে আপিলের পক্ষে নিয়োজিত জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলীর ব্যক্তিগত অসুবিধার জন্য ৬ সপ্তাহ সময়ের আবেদন দেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবী। শুনানি মুলতবির আবেদন দেওয়া হয়। আদালত আবেদনটি রিফিউজ (প্রত্যাখ্যান) করেন এবং ‘ডিসমিসড ফর ডিফল্ট’ বলেন। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল পুনঃশুনানির জন্য সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করব। রোববার (আজ) আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে এ আবেদন করা হবে।

আদালতে জামায়াতের বিরুদ্ধে করা আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তানিয়া আমীর ও আহসানুল করিম। আপিল পুনঃশুনানির বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় ব্যারিস্টার তানিয়া আমীরের কাছে। তিনি শনিবার যুগান্তরকে বলেন, রাজনৈতিক দল হিসাবে দেওয়া নিবন্ধন অবৈধ বলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল পুনঃশুনানির কোনো আবেদন আমি এখনও পাইনি। পেলে এ বিষয়ে মন্তব্য করব।

জামায়াতের আইনজীবী প্যানেলের অন্যতম সদস্য অ্যাডভোকেট মো. মতিউর রহমান আকন্দ শনিবার যুগান্তরকে বলেন, আপিল বিভাগ আমাদের আবেদনটি রিফিউজ (প্রত্যাখ্যান) এবং ‘ডিসমিসড ফর ডিফল্ট’ করেন। আইনে আছে, রায়ের ১ মাসের মধ্যে আপিল পুনঃশুনানির (পুনরুজ্জীবিত) আবেদন করতে হবে। তবে, কোনো কারণে যদি ১ মাসের মধ্যে করা না যায়, তাহলে কারণ উল্লেখ করে ব্যাখ্যা দিয়ে আবেদন করা যাবে। আমরা সেই ব্যাখ্যা দিয়ে আবেদনটি দাখিল করব। আশা করি আদালত আমাদের আবেদন গ্রহণ করবেন।

২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাজনৈতিক দল হিসাবে জামায়াতকে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৯ সালে রিট করেন সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ ২৫ ব্যক্তি। রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দল হিসাবে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্টের তিন সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চ। একই সঙ্গে আদালত এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সনদ দেন, যা পরবর্তী সময়ে আপিল হিসাবে রূপান্তরিত হয়। এছাড়া হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে একই বছর দলটির পক্ষ থেকে লিভ টু আপিল (সিপি) করা হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

এবার নতুন লড়াইয়ে জামায়াতে ইসলামী

আপডেট টাইম : ১০:২৯:৫৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

রাজনৈতিক দল হিসাবে দেওয়া নিবন্ধন অবৈধ বলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল পুনঃশুনানির (পুনরুজ্জীবিত) জন্য আপিল বিভাগে আবেদন করবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

আজ রোববার সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে এ আবেদন করার কথা রয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর আইনজীবী প্যানেলের একটি সূত্র যুগান্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ১ আগস্ট জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা ভারতে চলে যান। ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। ২৮ আগস্ট জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে জারি করা প্রজ্ঞাপন বাতিল করে সরকার। জামায়াতে ইসলামীর অন্যতম আইনজীবী হলেন মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি ২৮ আগস্ট সুপ্রিমকোর্টে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, জামায়াতে ইসলামীকে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া নিবন্ধন অবৈধ বলে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিলেন, তার বিরুদ্ধে পুনরায় আপিল বিভাগে আবেদন করতে যাচ্ছে দলটি। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ফিরে পেতে আমরা দ্রুততম সময়ে আপিল বিভাগে মামলা পুনরুজ্জীবিতের আবেদন করব।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির শনিবার যুগান্তরকে জানান, রাজনৈতিক দল হিসাবে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া নিবন্ধন অবৈধ বলে রায় দেন হাইকোর্ট। সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে জামায়াত। আপিল শুনানিতে আপিলের পক্ষে নিয়োজিত জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলীর ব্যক্তিগত অসুবিধার জন্য ৬ সপ্তাহ সময়ের আবেদন দেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবী। শুনানি মুলতবির আবেদন দেওয়া হয়। আদালত আবেদনটি রিফিউজ (প্রত্যাখ্যান) করেন এবং ‘ডিসমিসড ফর ডিফল্ট’ বলেন। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল পুনঃশুনানির জন্য সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করব। রোববার (আজ) আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে এ আবেদন করা হবে।

আদালতে জামায়াতের বিরুদ্ধে করা আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তানিয়া আমীর ও আহসানুল করিম। আপিল পুনঃশুনানির বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় ব্যারিস্টার তানিয়া আমীরের কাছে। তিনি শনিবার যুগান্তরকে বলেন, রাজনৈতিক দল হিসাবে দেওয়া নিবন্ধন অবৈধ বলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল পুনঃশুনানির কোনো আবেদন আমি এখনও পাইনি। পেলে এ বিষয়ে মন্তব্য করব।

জামায়াতের আইনজীবী প্যানেলের অন্যতম সদস্য অ্যাডভোকেট মো. মতিউর রহমান আকন্দ শনিবার যুগান্তরকে বলেন, আপিল বিভাগ আমাদের আবেদনটি রিফিউজ (প্রত্যাখ্যান) এবং ‘ডিসমিসড ফর ডিফল্ট’ করেন। আইনে আছে, রায়ের ১ মাসের মধ্যে আপিল পুনঃশুনানির (পুনরুজ্জীবিত) আবেদন করতে হবে। তবে, কোনো কারণে যদি ১ মাসের মধ্যে করা না যায়, তাহলে কারণ উল্লেখ করে ব্যাখ্যা দিয়ে আবেদন করা যাবে। আমরা সেই ব্যাখ্যা দিয়ে আবেদনটি দাখিল করব। আশা করি আদালত আমাদের আবেদন গ্রহণ করবেন।

২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাজনৈতিক দল হিসাবে জামায়াতকে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৯ সালে রিট করেন সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ ২৫ ব্যক্তি। রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দল হিসাবে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্টের তিন সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চ। একই সঙ্গে আদালত এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সনদ দেন, যা পরবর্তী সময়ে আপিল হিসাবে রূপান্তরিত হয়। এছাড়া হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে একই বছর দলটির পক্ষ থেকে লিভ টু আপিল (সিপি) করা হয়।