ঢাকা ০৪:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সীতাকুণ্ডে ৯ শিশুর মৃত্যুর কারণ হাম

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৩০:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুলাই ২০১৭
  • ৩৫৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ   চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ত্রিপুরা পাড়ায় আক্রান্ত ও মৃত শিশুরা হাম রোগের জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হয়েছিল।

সোমবার মহাখালী আইইডিসিআর মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ এ তথ্য জানান। ত্রিপুরা পাড়ায় অসুস্থতা ও মৃত্যুর কারণ-ক্লিনিক্যাল ও ল্যাবরেটরি পরীক্ষা এবং রোগতাত্ত্বিক সমীক্ষার পর্যবেক্ষণ জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, তারা অপুষ্টিতে ভুগছিল এবং এর ফলে সংক্রমণ একজনের শরীর থেকে অন্যজনের শরীরে ছড়িয়ে পড়েছিল। অপুষ্টির কারণে সংক্রমণ তীব্র আকার ধারণ করেছিল।

আবুল কালাম আজাদ জানান, ত্রিপুরা পাড়ায় মোট ৮৫ বাড়িতে ৩৮৮ জন মানুষ বাস করে। এরা কেউই হামের টিকা পায়নি। ৩৮৮ জনের মধ্য বয়সভেদে সন্দেহজনক হাম আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৯০ জন। এদের মধ্যে ৫ থেকে ৯ বছর বয়সি আক্রান্তের হার ৯২.৫ শতাংশ, ১ থেকে ৪ বছর বয়সি আক্রান্তের হার ৬১.৯ শতাংশ, নয় মাস বয়সিদের ৪০ শতাংশ, ৯ থেকে ১১ মাস বয়সিদের ২০ শতাংশ, ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সিদের ১৫ শতাংশ, ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সিদের ১০ শতাংশ এবং ২০ বছরের উপরে বা নিচে ০.৯ শতাংশ।

হামের টিকা না পাওয়ার কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, টিকা কর্মসূচি পরিচালিত হয় ওয়ার্ডভিত্তিক মাইক্রোপ্ল্যান অনুযায়ী। ত্রিপুরা পাড়া মাইক্রোপ্ল্যানে না থাকায় বাদ পড়ে আসছে। এ জন্য আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দেশের সব ওয়ার্ডের টিকাদান মাইক্রোপ্ল্যান পর্যালোচনা করা হবে। কোন ছোট জনপদ বাদ গেলে সেগুলোকে এর অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

তবে দেশে হাম রোগের টিকা কার্যক্রম ঠিকভাবে চলছে এমন দাবি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মাত্রায় হাম রোগ প্রাদুর্ভাবের কোনো আশঙ্কা নেই।

ত্রিপুরা পাড়ায় হামের সংক্রমণ সম্পর্কে তিনি জানান, ত্রিপুরা পাড়ায় হামের সংক্রমণের লক্ষণ চলতি বছরের ২২ জুন প্রথম দেখা দেয়। সর্বোচ্চসংখ্যক আক্রান্ত শিশুর মধ্যে জ্বরের লক্ষণ দেখা দেয় ১০ জুলাই। প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ৮ জুলাই। চিকিৎসা পাওয়ায় ১২ জুলাইয়ের পর কেউ মারা যায়নি। মৃত নয় শিশুর বয়স ৩ থেকে ১২ বছরের মধ্যে।

তিনি আরো জানান, ঘটনা শোনার পর আইইডিসিআর এর টিম সেখানে গিয়ে ভর্তি রোগীদের রক্ত ও গলার নিঃসরণ এর নমুনা সংগ্রহ করে। ঢাকায় যথাক্রমে আইইডিসিআর ল্যাবরেটরি এবং জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের জাতীয় পোলিও ও মিজলস ল্যাবরেটরিতে নমুনাসমূহ পরীক্ষা করা হয়।

ত্রিপুরা পাড়া বর্তমান ও পরবর্তী কার্যক্রম সম্পর্কে আবুল কালাম আজাদ জানান, চিকিৎসাধীন রোগীদের সুচিকিৎসা চলছে।  এলাকার বাসিন্দা বীরেন্দ্র ত্রিপুরার বাড়িতে অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আইপিএইচএন কর্তৃক উক্ত পল্লীতে পুষ্টি কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এইসঙ্গে ওই এলাকায় রোগ ব্যাধি ও স্বাস্থ্য পরিস্থিতি সম্পর্কে নিয়মিত পর্যাবেক্ষণ চলমান থাকবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন আইইডিসিআর এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সাবরীনা ফ্লোরা, চট্টগ্রাম সিভি সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকী প্রমুখ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সীতাকুণ্ডে ৯ শিশুর মৃত্যুর কারণ হাম

আপডেট টাইম : ০৯:৩০:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুলাই ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ   চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ত্রিপুরা পাড়ায় আক্রান্ত ও মৃত শিশুরা হাম রোগের জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হয়েছিল।

সোমবার মহাখালী আইইডিসিআর মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ এ তথ্য জানান। ত্রিপুরা পাড়ায় অসুস্থতা ও মৃত্যুর কারণ-ক্লিনিক্যাল ও ল্যাবরেটরি পরীক্ষা এবং রোগতাত্ত্বিক সমীক্ষার পর্যবেক্ষণ জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, তারা অপুষ্টিতে ভুগছিল এবং এর ফলে সংক্রমণ একজনের শরীর থেকে অন্যজনের শরীরে ছড়িয়ে পড়েছিল। অপুষ্টির কারণে সংক্রমণ তীব্র আকার ধারণ করেছিল।

আবুল কালাম আজাদ জানান, ত্রিপুরা পাড়ায় মোট ৮৫ বাড়িতে ৩৮৮ জন মানুষ বাস করে। এরা কেউই হামের টিকা পায়নি। ৩৮৮ জনের মধ্য বয়সভেদে সন্দেহজনক হাম আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৯০ জন। এদের মধ্যে ৫ থেকে ৯ বছর বয়সি আক্রান্তের হার ৯২.৫ শতাংশ, ১ থেকে ৪ বছর বয়সি আক্রান্তের হার ৬১.৯ শতাংশ, নয় মাস বয়সিদের ৪০ শতাংশ, ৯ থেকে ১১ মাস বয়সিদের ২০ শতাংশ, ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সিদের ১৫ শতাংশ, ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সিদের ১০ শতাংশ এবং ২০ বছরের উপরে বা নিচে ০.৯ শতাংশ।

হামের টিকা না পাওয়ার কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, টিকা কর্মসূচি পরিচালিত হয় ওয়ার্ডভিত্তিক মাইক্রোপ্ল্যান অনুযায়ী। ত্রিপুরা পাড়া মাইক্রোপ্ল্যানে না থাকায় বাদ পড়ে আসছে। এ জন্য আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দেশের সব ওয়ার্ডের টিকাদান মাইক্রোপ্ল্যান পর্যালোচনা করা হবে। কোন ছোট জনপদ বাদ গেলে সেগুলোকে এর অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

তবে দেশে হাম রোগের টিকা কার্যক্রম ঠিকভাবে চলছে এমন দাবি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মাত্রায় হাম রোগ প্রাদুর্ভাবের কোনো আশঙ্কা নেই।

ত্রিপুরা পাড়ায় হামের সংক্রমণ সম্পর্কে তিনি জানান, ত্রিপুরা পাড়ায় হামের সংক্রমণের লক্ষণ চলতি বছরের ২২ জুন প্রথম দেখা দেয়। সর্বোচ্চসংখ্যক আক্রান্ত শিশুর মধ্যে জ্বরের লক্ষণ দেখা দেয় ১০ জুলাই। প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ৮ জুলাই। চিকিৎসা পাওয়ায় ১২ জুলাইয়ের পর কেউ মারা যায়নি। মৃত নয় শিশুর বয়স ৩ থেকে ১২ বছরের মধ্যে।

তিনি আরো জানান, ঘটনা শোনার পর আইইডিসিআর এর টিম সেখানে গিয়ে ভর্তি রোগীদের রক্ত ও গলার নিঃসরণ এর নমুনা সংগ্রহ করে। ঢাকায় যথাক্রমে আইইডিসিআর ল্যাবরেটরি এবং জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের জাতীয় পোলিও ও মিজলস ল্যাবরেটরিতে নমুনাসমূহ পরীক্ষা করা হয়।

ত্রিপুরা পাড়া বর্তমান ও পরবর্তী কার্যক্রম সম্পর্কে আবুল কালাম আজাদ জানান, চিকিৎসাধীন রোগীদের সুচিকিৎসা চলছে।  এলাকার বাসিন্দা বীরেন্দ্র ত্রিপুরার বাড়িতে অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আইপিএইচএন কর্তৃক উক্ত পল্লীতে পুষ্টি কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এইসঙ্গে ওই এলাকায় রোগ ব্যাধি ও স্বাস্থ্য পরিস্থিতি সম্পর্কে নিয়মিত পর্যাবেক্ষণ চলমান থাকবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন আইইডিসিআর এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সাবরীনা ফ্লোরা, চট্টগ্রাম সিভি সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকী প্রমুখ।