১৯৩৫ সালে মার্কিন কংগ্রেস বন্ধুদের সম্মানে একটি দিন উৎসর্গ করার কথা মাথায় রেখে আনুষ্ঠানিকভাবে আগস্টের প্রথম রবিবারকে জাতীয় বন্ধু দিবস বলে ঘোষণা দেয়। একই সঙ্গে দিনটিকে সরকারি ছুটির দিন হিসেবেও নির্ধারণ করা হয়। তখন থেকে প্রতিবছর দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোতে বিশেষ করে প্যারাগুয়েতে ঘটা করে বন্ধু দিবস পালিত হতো। ধীরে ধীরে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও অন্যান্য দেশে এ দিনটি ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়।
কথিত রয়েছে, ১৯৩৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে এক ব্যক্তি নিহত হন। দিনটি ছিল আগস্টের প্রথম শনিবার। বন্ধু বিয়োগের ঘটনায় আঘাত সহ্য করতে না পেরে সেই ব্যক্তির এক বন্ধু আত্মহত্যা করেন। বন্ধুর জন্য বন্ধুর এ অাত্মত্যাগের ঘটনায় সেসময় চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক উত্তেজনা। সেবছরই মার্কিন কংগ্রেস বন্ধুত্বের প্রতি সম্মান জানিয়ে আগস্টের প্রথম রবিবারকে বন্ধু দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
অন্য এক সূত্র অনুযায়ী, বন্ধু দিবসের শুরু হয়েছিলো আরও আগে। ১৯১৯ সালে আগস্টের প্রথম রবিবার বন্ধুরা নিজেদের মধ্যে কার্ড, ফুল, উপহার বিনিময় করতো। ১৯১০ সালে জয়েস হলের প্রতিষ্ঠিত হলমার্ক কার্ড বন্ধু দিবস পালনের রীতিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়েছিলো।
সম্প্রতি বন্ধু দিবসের দিন তারিখ বদলানো হয়েছে। ১৯৫৮ সালে অান্তর্জাতিক নাগরিক সংগঠন ওয়ার্ল্ড ফ্রেন্ডশিপ ক্রুসেড বিশ্বে শান্তির উদ্দেশ্যে প্যারাগুয়েতে ৩০ জুলাইকে বিশ্ব বন্ধু দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দেয়।
১৯৫৮ সালের ২০ জুলাই ওয়ার্ল্ড ফ্রেন্ডশিপ ক্রুসেডের প্রতিষ্ঠাতা ড. ৠামন আর্তেমিও ব্রেঞ্চো বন্ধুদের সঙ্গে প্যারাগুয়ের পুয়ের্তো পিনাসকোতে এক নৈশভোজে এ প্রস্তাব উত্থাপন করেন। সে রাতেই ওয়ার্ল্ড ফ্রেন্ডসিপ ক্রুসেড প্রতিষ্ঠা পায়।
এই প্রতিষ্ঠানটি ৩০ জুলাই বিশ্বব্যাপী বন্ধু দিবস পালনের জন্য জাতিসংঘে প্রস্তাব পাঠায়। প্রায় পাঁচ যুগ পর ২০১১ সালের ২৭ জুলাই জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ৩০ জুলাইকে বিশ্ব বন্ধু দিবস হিসেবে নির্ধারণ করা হয়।
তবে এখনও বাংলাদেশ-ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আগষ্টের প্রথম রবিবারই বন্ধু দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। আবার কোনো কোনো দেশে ০৮ এপ্রিল বন্ধু দিবস হিসেবে পালন করা হয়।