হয়ত এমনি সুযোগের অপেক্ষায় ছিলো হাওরাঞ্চলের অসাধু ব্যবসায়ীরা। অকাল বন্যায় সোনার ধান তলিয়ে যাওয়াতে অনেক ফুরফুরে মেজাজে আছেন তারা।
কৃত্রিম সস্কট দেখিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম হাওরের পানির সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়িয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী। বিশেষ করে চালের দাম আকাশচুম্বী। পানি বন্দি হাওর পাড়ের অসহায় কৃষক নিরুপায় হয়ে দ্বিগু টাকার বিনিময়ে ক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছেন। যা সম্ভল হারানো কৃষকের ওপর মরার ওপর খাড়া ঘা।
জেলার কুলাউড়া, জুড়ি, বড়লেখা, সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার কয়েক লাখ হাওরঞ্চলের কৃষক কদিনের ব্যবধানে জিম্মি হয়ে পড়েছেন অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে। একদিকে চোখের সামনে তালিয়ে গেছে সোনার ফসল অন্যদিকে মাথার ওপর ঋনের বোঝা আবার ঘরের খাদ্য সস্কটের সাথে সাথে চালের বাজারে আগুন। সবমিলিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন অকাল বন্যায় ফসল হারানো এসব কৃষক।
তথ্যমতে, কৃত্রিম সঙ্কট দেখিয়ে ২২শ টাকা চালের বস্তা বিক্রি করছে ২৬-২৮শ টাকা এবং ১২-১৩শ টাকার আটার বস্তা বিক্রি করছে ১৫-১৬শ টাকা দরে। এ চিত্র জেলার কুলাউড়া, জুড়ি, বরলেখা, কমলগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল, সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার সর্বত্র।
ক্রেতাদের অভিযোগ জেলার অধিকাংশ হাওর তলিয়ে যাওয়ায় এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে চাল-আটার দাম বৃদ্ধি করে একদিকে মুনাফা লুটছেন অন্যদিকে প্রতারণা করছেন ফসল হারিয়ে দিশেহারা কৃষকদের সঙ্গে।
কৃষি কার্যালয় ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, হাকালুকি হাওর পাড়ের জুড়ী উপজেলাতে ৬ হাজার ৪৫০ হেক্টর, কুলাউড়া উপজেলাতে ৭ হাজার ৪৯০ হেক্টর ও বড়লেখা উপজেলাতে ৫ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের বোরো ধানের আবাদ হয়েছে।
এছাড়া সিলেট জেলার ফেঞ্চুগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জ এই দুই উপজেলায় কমপক্ষে ৯-১০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। গত তিন-চার দিন ধরে টানা বৃষ্টিতে উজানের পাহাড়ি ঢলে হাকালুকি হাওরের পানি বাড়ছে অতিদ্রুত হারে।
কৃষক গফফার, আইয়ুব, মাখন, ইসরাব আলী, হাজী চলিমুল্লা বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে অন্যের জমি চাষ করেছিলাম কিন্তু সব ধান পানির নিছে তলিয়ে গেছে। এখন আবার চালের বাজারে আগুন।
পরিবার কিভাবে চালাব চিন্তা করে কুলকিনারা পাচ্ছিনা। কৃষাণি জয়তুন বিবি বলেন, বোরো ফসল দিয়ে আমাদের সংসার ও ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া খরচ চালাতাম কিন্তু এখন কিভাবে বাচ্চাদের মুখে ভাত দিব ভেবে পাচ্ছিনা।
এ নিয়ে মোলভীবাজার জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীদের ধমন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার তাই করবো। ইঞ্চি পরিমাণ ছাড় দেবো না।