রোডপারমিট ছাড়াই শিশু চালক দিয়ে চলছে যান

ময়মনসিংহের ভালুকায় ঢাকা- ময়মনসিংহ মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত হওয়ার পর আশা করা হয়েছিলো যাত্রীদের দুর্ভোগ ও দুর্ঘটনা কমবে। কিন্তু আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি।
সেতুমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় দুর্ঘটনা কমাতে এই মহাসড়কে সিএনজি চলাচল বন্ধ আছে। তবে চলছে আরেক বিপদজনক যান, লেগুনা বা পালকী ছাড়াও মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ট্র্যাক্টর দিয়ে বানানো লড়ি, নছিমন ও করিমন। এসব অনেক যানেরই রোড পারমিট নেই। তাছাড়া বিভিন্ন মিল-ফ্যাক্টরির স্টাফ বাস যেগুলোর গাড়ি ৩০/৪০ বছরের পুরনো, যার কোনো ফিটনেস বা রোড পারমিট কোনটিই নেই। অন্যদিকে অভিজ্ঞ ড্রাইভারও নেই এসব যানের।
শুধু তাই নয়, লেগুনা ও লড়ি চালাচ্ছে শিশু চালক আর হেলপার। তাদের বয়স ১০ বছরের কম বা কিছু বেশি। এসব লেগুনার আনাড়ি চালকের জন্য ঘটছে প্রায়ই দুর্ঘটনা। তা ছাড়া পুরোনো মাইক্রোবাস কেটে এবং টাটা কোম্পানির ভাইরাস মালবাহী মিনি ট্রাকের উপরে কার্পেট লাগিয়ে তৈরি হচ্ছে এসব লেগুনা।
গত ২৪ মার্চ ভালুকায় ট্রাক উল্টে ১০ জন হতদরিদ্র মানুষের মৃত্যুতে ভালুকাসহ গোটা দেশ মর্মাহত হয়। আবার কোনো বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটার আগে এসব যানগুলি মহাসড়কে চলাচলের নিষেধাজ্ঞাসহ নজরদারী বাড়ানো দরকার বলে মনে করেন অনেকে।
কথা হয় রুবেল নামে লেগুনার এক ড্রাইভারের (১৫) সঙ্গে। সে জানায়, তার কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। কিছু দিন অন্য একটি লেগুনায় হেলপারি করে এখন সে ড্রাইভার। প্রতিদিন ৪০০ টাকা তাকে বেতন দেয়া হয়।
আরেক সহযোগী সোহাগ (১০) জানায়, সে এসব লেগুনায় হেলপারি করে। তাকে প্রতিদিন ১৫০/২০০ টাকা করে দেয়া হয়।
তারা আরো জানায়, এসব লেগুনার মালিক স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। প্রশাসন ও স্থানীয় শ্রমিক নেতাদের ম্যানেজ করেই লেগুনা সড়কে চলাচলের ব্যবস্থা করেন তারা।
ভালুকা মিনিট্রাক-মাইক্রোবাস ও লেগুনা মালিক সমিতির সভাপতি কাঞ্চন মন্ডল বলেন, ভালো ড্রাইভার পাওয়া যায় না। তবে আমরা মালিকদের নিয়ে বসবো যাতে এসব শিশু চালকের হাতে লেগুনা দেয়া না হয়।
ভরাডোবা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. জহিরুল ইসলাম জানান, আমরা শিগগিরই এসব অবৈধ লেগুনার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছি। আজকেও এসব শিশু চালকদের নিষেধ করে দিয়েছি লেগুনা না চালাতে। কথা না শুনলে আমরা র‌্যাকার লাগিয়ে এসব অবৈধ যানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর