স্বাধীনতা দিবসে জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে দৃপ্ত শপথ

জঙ্গিবাদ প্রতিরোধের দৃপ্ত শপথে রোববার মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে নানা কর্মসূচি পালিত হয়। এসব কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়।

দিবসটি উপলক্ষে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে একাত্তরের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর জঙ্গিবাদমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশের প্রত্যাশার কথা জানান বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ।

বরাবরের মতোই এবারও রাষ্ট্রীয়ভাবে দিনটি পালন করা হয়েছে। দিবসটিতে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নজরদারি ছিল।

দিনটিতে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ঢাকা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জাতীয় শিশু-কিশোর সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন।

উপভোগ করেন শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ ডিসপ্লে। এর আগে ভোর ৬টায় জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর তারা শহীদদের স্মরণ করে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।

এ সময় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। বেজে ওঠে বিউগলে করুণ সুর। পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে দলের পক্ষ থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে আরেকবার পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, সংসদ সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধান, মুক্তিযোদ্ধা, বৈদেশিক কূটনীতিক এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা, বীরশ্রেষ্ঠদের পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশী কূটনীতিক, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

স্মৃতিসৌধে মানুষের স্রোত বয়ে যাওয়ার মধ্যেই সকাল সাড়ে ৯টায় বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এ সময় তিনি কিছু সময় নীবরে দাঁড়িয়ে থাকেন।

শ্রদ্ধা নিবেদনকালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, আবদুল মান্নান, মোহাম্মদ শাহজাহান, এজেডএম জাহিদ হোসেন, রুহুল আল চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আজম খান, উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন-নবী খান সোহেলসহ বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছিলেন।

স্বাধীনতা ও বিজয় দিবস উপলক্ষে সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ সময় পার্টির মহাসচিব ও প্রেসিডিয়াম সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতার শ্রদ্ধা নিবেদনের পর স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে। বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন ও মিছিল নিয়ে প্রবেশ করতে থাকেন।

স্মৃতিসৌধে যখন হাজার হাজার মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আসছিল, তখন সিলেটে একটি জঙ্গি আস্তানা ঘিরে আইনশৃংখলা বাহিনীর অভিযান চলছিল।

তাই বারবার মানুষের মুখে জঙ্গিবাদবিরোধী স্লোগান ওঠে। জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, দুঃশাসনের ধারাবাহিকতায় দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান হতে পেরেছে।

এখন সেটা ভয়াবহ আকারে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় এবং দেশের ধারাবাহিক অগ্রযাত্রার জন্য মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ক্ষমতায় রাখা এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।

স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ঐক্যবদ্ধ চেতনাই পারে আমাদের সব স্বপ্ন সফল করতে। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের জীবন দিয়ে আমাদের জন্য স্বাধীন দেশ দিয়ে গেছেন। এখন সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ মোকাবেলায়ও আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক সেই চেতনাকে ভিত্তি হিসেবে ধরতে হবে।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার বলেন, এ বছর আমরা গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতি জাতীয় সংসদে পেয়েছি। এটা আমাদের জন্য একটি বড় অর্জন।

কিন্তু যে পাকিস্তানিদের পরাজিত করে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি, তাদের দোসর জামায়াত-বিএনপি অস্তিত্ব নিয়ে টিকে আছে। এদের রুখতে ঐক্যবদ্ধ হওয়া এখন জরুরি। সকালে ভাইস চেয়ারম্যান আবু ওসমান চৌধুরীর নেতৃত্বে স্মৃতি একাত্তরের সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের নেতাকর্মীরা স্মৃতিসৌধে যান। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর সময় ৮ নম্বর সেক্টরের কিছু ঘটনা শুনিয়ে নিরস্ত্র সাধারণ মানুষ কীভাবে স্বাধীনতার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তার বর্ণনা দেন ওই সেক্টরের কমান্ডার আবু ওসমান চৌধুরী।

তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। আর দুর্বৃত্তরা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে সব অর্জন ধ্বংস করে নিতে চাইছে।
জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সিলেটে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান, বিমানবন্দর এলাকায় হামলাসহ কোনো কিছুকে মানুষ বাধা মনে করেনি।

এখানে আসা লোকগুলো তার প্রমাণ। অনেক হতাশার মাঝেও তারা চায় ঐক্যবদ্ধ থাকতে। জনগণের সেই শক্তিকে এক করে রাখতে পারলে আমরা গণতন্ত্রের সব সিঁড়ি পেরোতে পারব। পৌঁছাতে পারব উন্নতির সোপানে।

সাভার থেকে জাভেদ মোস্তফা জানান, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর হাজার হাজার মানুষের ভিড়ে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় পুরো স্মৃতিসৌধ এলাকা। স্মৃতিসৌধ ঘিরে আনন্দ আর উচ্ছ্বাসে গোটা সাভার উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। দিনটি উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধ চত্বর নানা সাজে সাজানো হয়।

সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য আলোকসজ্জা করা হয় স্মৃতিসৌধ চত্বর এলাকায়। স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন সাভারের পক্ষাঘাত পুনর্বাসন কেন্দ্রে (সিআরপি) চিকিৎসাধীনরা। তাদের অনেকে হুইল চেয়ারে চেপে কিংবা কারও কাঁধে ভর করে স্মৃতিসৌধে আসেন।

স্মৃতিসৌধে যেসব প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশেরে ওয়ার্কার্স পার্টি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি, বাংলাদেশ মাশরুম ফাউন্ডেশন, সূর্যসেন হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সিটিজেনস প্রোগ্রাম ফর হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট (সিপিএইচভি), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক পার্টি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, ঢাবি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, জাতীয় শ্রমিক লীগ ধামরাই অঞ্চলিক শাখা, বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক লীগ আশুলিয়া অঞ্চল কমিটি, জাতীয় শ্রমিক লীগ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, গণবিশ্ববিদ্যালয় সাভার , গণবিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ, বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ তাঁতী লীগ, বাংলাদেশ যুবমৈত্রী, বাঁধন জাহাঙ্গীর জোন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, পরমাণুশক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল সাভার উপজেলা ও আশুলিয়া থানা কমিটি, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সাভার উপজেলা কমান্ড, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা সমিতি, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব), বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জাসদ), বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ, অফিসার্স ট্রেনিং ইন্সটিটিউট-ঢাকা, সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর, জাতীয় পার্টি (জেপি), বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল-জামুকা, ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাসমূহের সমন্ময়কারী প্রতিষ্ঠান অ্যাডাব, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেশনা পরিষদ, সচেতন নাগরিক কমিটি-সনাক, কবি জসীমউদ্দীন পরিষদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, বঙ্গবন্ধু পিডব্লিউবি ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদ, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ শিক্ষাবোর্ড কর্মচারী ইউনিয়ন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সমিতি, বাংলাদেশ আইন সমিতি, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, স্বাধীনতা মেডিকেল টেকনোলজিস্ট পরিষদ, বঙ্গবন্ধু কৃষি পরিষদ, ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশ, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, সোনালী ব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তাননহ (হুমায়ুন কবির) অসংখ্য সংগঠন।

এ ছাড়া দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে সংবাদপত্রে বিশেষ নিবন্ধ ও ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়। সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশন ও বেতারে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচারিত হয়।

মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। হাসপাতাল, কারাগার, বৃদ্ধাশ্রমসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে উন্নতমানের খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা করা হয়।

দিবসটি উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ছায়ানট, জাতীয় জাদুঘর, বাংলা একাডেমি, নজরুল ইন্সটিটিউট, জাতীয় প্রেস ক্লাব, অফিসার্স ক্লাব ঢাকা, কেন্দ্রীয় কচিকাঁচার মেলা, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি নানা কর্মসূচি পালন করে।

বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা : স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে রোববার সকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ থেকে ফিরে রাজধানীতে ধানমন্ডিস্থ বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সন্মুখে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন তিনি। পুষ্পার্ঘ প্রদানের পর প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রতিকৃতির সামনে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।

এরপর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনা দলের নেতাদের নিয়ে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য প্রদান করেন।

এ সময় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন ও ড. আবদুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর নানক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ ছাড়া স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া ধানমন্ডিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিকে পুষ্পার্ঘ্য প্রদান করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

জিয়াউর রহমানের মাজারে খালেদা জিয়ার শ্রদ্ধা নিবেদন : জাতীয় স্মৃতিসৌধ থেকে ফিরে কয়েক হাজার নেতাকর্মী নিয়ে সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে খালেদা জিয়া দলের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। সেখানে জাতীয়তাবাদী উলামা দলের উদ্যোগে প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। জিয়ার মাজারে বিএনপি ছাড়াও মহানগর বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, উলামা দল, মহিলা দল, মৎস্যজীবী দল, ছাত্রদল, জাসাসসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

মুক্তিযোদ্ধাদের প্রধানমন্ত্রীর উপহার ও শুভেচ্ছা : স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী দেশের সব মুক্তিযোদ্ধাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

এ ছাড়া তিনি প্রতি বছরের মতো এবারও মোহাম্মদপুরের গজনভী রোডে শহীদ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে (মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ার-১) যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ফুল, ফল ও মিষ্টি পাঠিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রাইভেট সেক্রেটারি সাইফুজ্জামান শিখর, ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আশরাফুল আলম খোকন ও প্রটোকল অফিসার খুরশিদ-উল-আলম রোববার সকালে শুভেচ্ছা সামগ্রী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে হস্তান্তর করেন।

মুক্তিযোদ্ধারা স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, ঈদ ও পহেলা বৈশাখের মতো প্রত্যেক জাতীয় দিবস ও উৎসবে তাদের স্মরণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

কঠোর নিরাপত্তাবলয় : দিবসটি উপলক্ষে স্মৃতিসৌধ ও এর আশপাশের এলাকায় কয়েক স্তরের নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। সেনাবাহিনীর পাশাপাশি র‌্যাব, পোশাকধারী পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।

তবে এবারও যানজট ও অব্যবস্থাপনায় চরম দুর্ভোগে পড়েন স্মৃতিসৌধে আগত হাজার হাজার মানুষ। পার্কিংয়ের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় মহাসড়কগুলোতেই যানবাহন পার্কিং করতে হয়।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর