ঢাকা ০৩:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ৩০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ: পিআর প্রশ্নে সমঝোতা আটকে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:২৫:১২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫
  • ৩০ বার

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ নিয়ে এখনো একমত হতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলো। বিএনপি চাইছে সুপারিশে আপত্তির (নোট অব ডিসেন্ট) কথা উল্লেখ থাকুক। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী কমিশনের দেওয়া সুপারিশে সমর্থন জানালেও চলতি মাসেই গণভোটের দাবি তুলেছে। সরকার মতের দূরত্ব ঘুচিয়ে দলগুলোকে এক ছাতার নিচে আনতে চেষ্টা চালাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আলোচনায় বিশেষভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (পিআর) ভিত্তিতে জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাব। আর এতেই আটকে আছে সমাধান।

পিআর পদ্ধতিতে আগামী সংসদে উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বিষয়টিতে নোট অব ডিসেন্ট আছে বিএনপির। তারা সংরক্ষিত নারী আসনের মতোই সংসদের আসনের অনুপাতে উচ্চকক্ষ গঠনের পক্ষে। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) পিআর পদ্ধতির দাবিতে অনড়। আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগে বাছাই কমিটি ব্যর্থ হলে র‌্যাংকর্ড চয়েজ পদ্ধতিতে নিয়োগের সুপারিশ করেছে কমিশন। তবে বিএনপি র‌্যাংকর্ড চয়েজে আপত্তি জানিয়ে বলছে, বিষয়টি জাতীয় সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের ভিত্তিতে করার পক্ষে। এ ক্ষেত্রে বিএনপি উচ্চকক্ষে পিআর ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে আপত্তি প্রত্যাহার করলে জামায়াত ভোটের দিন গণভোটে রাজি হতে পারে বলে দুই দলের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া একটি সূত্র জানিয়েছে।

গত শুক্রবার এক কর্মসূচিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হতে হবে। পিআর হবে কি হবে না, সেটা আগামী সংসদ সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি বলেন, গণভোটের প্রয়োজন ছিল না, তারপরও বিএনপি রাজি হয়েছে। তবে নির্বাচনের দিনই গণভোট করতে হবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ২৭ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন বিষয়ে সুপারিশ জমা দেয়। যেখানে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ জারির কথা বলা হয়। পাশাপাশি সনদ বাস্তবায়নে দুটি বিকল্প প্রস্তাব দেওয়া হয়। প্রথম প্রস্তাবে বলা হয়েছে, গণভোটের আগে সরকার জাতীয় সনদের ভিত্তিতে একটি খসড়া বিল প্রস্তুত করবে, যা গণভোটে উপস্থাপন করা হবে। ফল ইতিবাচক হলে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা একই সঙ্গে এমপি ও সংবিধান সংস্কার পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তারা প্রথম অধিবেশন থেকে ২৭০ দিনের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করবেন। নির্ধারিত সময় পার হলে বিলটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে।

দ্বিতীয় প্রস্তাবে বিলের কথা বলা নেই। এ ক্ষেত্রে সংবিধান সংস্কার পরিষদকে গাঠনিক ক্ষমতা দেওয়া হয়। তবে তারা প্রথম অধিবেশন শুরুর ২৭০ দিনের মধ্যে জুলাই সনদ অনুসারে সংবিধান সংস্কার শেষ করবে এবং এরপর পরিষদের কার্যক্রম শেষ হবে। বাকি ধারাগুলো একই আছে। দুটি প্রস্তাবেই পরিষদের কার্যক্রম শেষ হওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে পিআরের ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠনের কথা বলা হয়েছে।

জানা গেছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশগুলো নিয়ে আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে বাস্তবায়নের আদেশের বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছে। সূত্র জানায়, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের পর এ বিষয়ে ব্রিফ করা হবে।

সরকারের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করতে সরকারের একাধিক উপদেষ্টা বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ রাখছে। এসব বৈঠকে একাধিক বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। দলগুলো রাজনীতির মাঠে অনড় থাকলেও অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় ছাড় দেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এনসিপি শাপলা কলি প্রতীক নিতে রাজি হয়েছে।

এদিকে বিএনপি আপত্তির বিষয়টি সনদে যুক্ত করার দাবি জানিয়েছে। এ ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন আদেশে উচ্চকক্ষে পিআর ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ছাড়া বাকি বিষয়গুলোতে বিএনপির আপত্তি যুক্ত করা হতে পারে। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশের সুপারিশে আগামী জাতীয় সংসদকে ২৭০ দিনের জন্য সংবিধান সংস্কার পরিষদের দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলা আছে। চূড়ান্ত আদেশে এই সময়সীমা উঠিয়ে দেওয়া হতে পারে।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয় প্রস্তাবের আলোকে সরকার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করতে পারে। সে ক্ষেত্রে ২৭০ দিনের স্থলে ‘যত দিন লাগে তত দিনের মধ্যে’ সংবিধান সংস্কারের কাজ শেষ করার কথা বলা থাকতে পারে। একই সঙ্গে পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার প্রস্তাব ছাড়া বাকি প্রস্তাবগুলোতে আপত্তির কথা উল্লেখ থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে সংবিধান সংস্কার পরিষদ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে বিল পাস করবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, সরকার রাজনৈতিক বিবেচনায় সিদ্ধান্তে অগ্রসর হচ্ছে। আশা করা যায়, আগামী দুই-চার দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়ে নেবে। আর দ্বিতীয় প্রস্তাবে তো বাস্তবায়ন শেষ করার পরে পরিষদের কার্যক্রম শেষের কথা বলা আছে। সে ক্ষেত্রে ২৭০ দিনের বাধ্যবাধকতা থাকে না।

তবে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম শনিবার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘বাস্তবায়ন আদেশের প্রথম খসড়ায় যেভাবে ২৭০ দিন পর সংস্কার প্রস্তাব স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে যুক্ত হওয়ার বিধান ছিল, আমরা সেটিকে সমর্থন করি। এর ব্যত্যয় হলে আমরা সেই আদেশ সমর্থন করব কি না, তা পুনর্বিবেচনা করতে হবে।’

জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মাধ্যমে জারির দাবি জানিয়ে আসছে জামায়াত ও এনসিপি। সরকারের একটি সূত্র বলছে, আদেশ জারি প্রধান উপদেষ্টার করার সম্ভাবনাই বেশি। চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে এ আদেশ জারি হতে পারে বলে সূত্রে জানা গেছে।

জুলাই জাতীয় সনদের বাস্তবায়নের আদেশ কবে জারি হবে, তা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ: পিআর প্রশ্নে সমঝোতা আটকে

আপডেট টাইম : ১০:২৫:১২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ নিয়ে এখনো একমত হতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলো। বিএনপি চাইছে সুপারিশে আপত্তির (নোট অব ডিসেন্ট) কথা উল্লেখ থাকুক। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী কমিশনের দেওয়া সুপারিশে সমর্থন জানালেও চলতি মাসেই গণভোটের দাবি তুলেছে। সরকার মতের দূরত্ব ঘুচিয়ে দলগুলোকে এক ছাতার নিচে আনতে চেষ্টা চালাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আলোচনায় বিশেষভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (পিআর) ভিত্তিতে জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাব। আর এতেই আটকে আছে সমাধান।

পিআর পদ্ধতিতে আগামী সংসদে উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বিষয়টিতে নোট অব ডিসেন্ট আছে বিএনপির। তারা সংরক্ষিত নারী আসনের মতোই সংসদের আসনের অনুপাতে উচ্চকক্ষ গঠনের পক্ষে। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) পিআর পদ্ধতির দাবিতে অনড়। আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগে বাছাই কমিটি ব্যর্থ হলে র‌্যাংকর্ড চয়েজ পদ্ধতিতে নিয়োগের সুপারিশ করেছে কমিশন। তবে বিএনপি র‌্যাংকর্ড চয়েজে আপত্তি জানিয়ে বলছে, বিষয়টি জাতীয় সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের ভিত্তিতে করার পক্ষে। এ ক্ষেত্রে বিএনপি উচ্চকক্ষে পিআর ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে আপত্তি প্রত্যাহার করলে জামায়াত ভোটের দিন গণভোটে রাজি হতে পারে বলে দুই দলের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া একটি সূত্র জানিয়েছে।

গত শুক্রবার এক কর্মসূচিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হতে হবে। পিআর হবে কি হবে না, সেটা আগামী সংসদ সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি বলেন, গণভোটের প্রয়োজন ছিল না, তারপরও বিএনপি রাজি হয়েছে। তবে নির্বাচনের দিনই গণভোট করতে হবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ২৭ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন বিষয়ে সুপারিশ জমা দেয়। যেখানে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ জারির কথা বলা হয়। পাশাপাশি সনদ বাস্তবায়নে দুটি বিকল্প প্রস্তাব দেওয়া হয়। প্রথম প্রস্তাবে বলা হয়েছে, গণভোটের আগে সরকার জাতীয় সনদের ভিত্তিতে একটি খসড়া বিল প্রস্তুত করবে, যা গণভোটে উপস্থাপন করা হবে। ফল ইতিবাচক হলে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা একই সঙ্গে এমপি ও সংবিধান সংস্কার পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তারা প্রথম অধিবেশন থেকে ২৭০ দিনের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করবেন। নির্ধারিত সময় পার হলে বিলটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে।

দ্বিতীয় প্রস্তাবে বিলের কথা বলা নেই। এ ক্ষেত্রে সংবিধান সংস্কার পরিষদকে গাঠনিক ক্ষমতা দেওয়া হয়। তবে তারা প্রথম অধিবেশন শুরুর ২৭০ দিনের মধ্যে জুলাই সনদ অনুসারে সংবিধান সংস্কার শেষ করবে এবং এরপর পরিষদের কার্যক্রম শেষ হবে। বাকি ধারাগুলো একই আছে। দুটি প্রস্তাবেই পরিষদের কার্যক্রম শেষ হওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে পিআরের ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠনের কথা বলা হয়েছে।

জানা গেছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশগুলো নিয়ে আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে বাস্তবায়নের আদেশের বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছে। সূত্র জানায়, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের পর এ বিষয়ে ব্রিফ করা হবে।

সরকারের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করতে সরকারের একাধিক উপদেষ্টা বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ রাখছে। এসব বৈঠকে একাধিক বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। দলগুলো রাজনীতির মাঠে অনড় থাকলেও অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় ছাড় দেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এনসিপি শাপলা কলি প্রতীক নিতে রাজি হয়েছে।

এদিকে বিএনপি আপত্তির বিষয়টি সনদে যুক্ত করার দাবি জানিয়েছে। এ ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন আদেশে উচ্চকক্ষে পিআর ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ছাড়া বাকি বিষয়গুলোতে বিএনপির আপত্তি যুক্ত করা হতে পারে। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশের সুপারিশে আগামী জাতীয় সংসদকে ২৭০ দিনের জন্য সংবিধান সংস্কার পরিষদের দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলা আছে। চূড়ান্ত আদেশে এই সময়সীমা উঠিয়ে দেওয়া হতে পারে।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয় প্রস্তাবের আলোকে সরকার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করতে পারে। সে ক্ষেত্রে ২৭০ দিনের স্থলে ‘যত দিন লাগে তত দিনের মধ্যে’ সংবিধান সংস্কারের কাজ শেষ করার কথা বলা থাকতে পারে। একই সঙ্গে পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার প্রস্তাব ছাড়া বাকি প্রস্তাবগুলোতে আপত্তির কথা উল্লেখ থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে সংবিধান সংস্কার পরিষদ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে বিল পাস করবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, সরকার রাজনৈতিক বিবেচনায় সিদ্ধান্তে অগ্রসর হচ্ছে। আশা করা যায়, আগামী দুই-চার দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়ে নেবে। আর দ্বিতীয় প্রস্তাবে তো বাস্তবায়ন শেষ করার পরে পরিষদের কার্যক্রম শেষের কথা বলা আছে। সে ক্ষেত্রে ২৭০ দিনের বাধ্যবাধকতা থাকে না।

তবে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম শনিবার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘বাস্তবায়ন আদেশের প্রথম খসড়ায় যেভাবে ২৭০ দিন পর সংস্কার প্রস্তাব স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে যুক্ত হওয়ার বিধান ছিল, আমরা সেটিকে সমর্থন করি। এর ব্যত্যয় হলে আমরা সেই আদেশ সমর্থন করব কি না, তা পুনর্বিবেচনা করতে হবে।’

জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মাধ্যমে জারির দাবি জানিয়ে আসছে জামায়াত ও এনসিপি। সরকারের একটি সূত্র বলছে, আদেশ জারি প্রধান উপদেষ্টার করার সম্ভাবনাই বেশি। চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে এ আদেশ জারি হতে পারে বলে সূত্রে জানা গেছে।

জুলাই জাতীয় সনদের বাস্তবায়নের আদেশ কবে জারি হবে, তা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’