ঢাকা ১০:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চিঠির খবর শুনে চাঁদপুরে ইলিশের দাম কেজিতে কমেছে ৭০০ টাকা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৫৪:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫
  • ১৭ বার

ইলিশের মূল্য নির্ধারণের জন্য মঙ্গলবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সচিবের কাছে চিঠি দিয়েছেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। আর এ চিঠির খবর শুনে চাঁদপুর মাছঘাটে ইলিশের দাম কেজিপ্রতি কমেছে সাতশ টাকা।

এ চিত্র মঙ্গল ও বুধবার চাদঁপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের। একদিন আগেও ১ কেজি সাইজের মাছের কেজিপ্রতি দাম ছিল ২৭০০-২৮০০ টাকা।

জেলা প্রশাসক বলেছেন, কক্সবাজার, ভোলা, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ইলিশের দামের তুলনায় চাঁদপুরে ইলিশের দাম ২-৩ গুণ বেশি।

ওই চিঠিতে জেলা প্রশাসক উল্লেখ করেন, প্রাচীনকাল থেকেই চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনা নদীর ইলিশ অত্যন্ত সুস্বাদু এবং মানের দিক থেকেও অতুলনীয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে বাংলাদেশের প্রথম জেলা ব্র্যান্ডিং হিসেবে চাঁদপুরকে ‘ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর’ হিসেবে সরকার স্বীকৃতি দেয়। ইলিশের এ স্বাদের সুযোগ নিয়ে চাঁদপুর ও আশপাশের জেলার কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী ও আড়তদার নিজের ইচ্ছেমতো দাম হাঁকাচ্ছেন, যা ক্রেতার নাগালের বাইরে। এমনকি চাঁদপুরের স্থায়ী বাসিন্দাদেরও অভিযোগ ইলিশের চড়া মূল্যের কারণে ইলিশ তাদের ক্রয়সীমার বাইরে চলে যাচ্ছে।

চিঠিতে তিনি আরও উল্লেখ করেন, যেহেতু ইলিশ চাঁদপুরসহ অন্যান্য জেলাতেও ধরা পড়ে, সেহেতু জেলা প্রশাসন ইলিশের মূল্য নির্ধারণের উদ্যোগ নিলে এর ফলপ্রসূ প্রভাব পড়বে না।

এখানে উল্লেখ্য, চাঁদপুরের পাশাপাশি বরিশাল, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠিসহ অনেক সাগর তীরবর্তী জেলায় ইলিশ ধরা পড়ে থাকে। নদী বা সাগরে ইলিশ উৎপাদনে জেলেদের কোনো উৎপাদন খরচ না থাকলেও ধৃত ইলিশের দাম অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। যেহেতু ইলিশ প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদন হয় সেহেতু ইলিশ আহরণ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক ব্যয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে ইলিশের মূল্য নির্ধারণ প্রয়োজন। এমতাবস্থায়, জাতীয় মাছ ইলিশের মূল্য নির্ধারণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্যে বিনীত অনুরোধ করা হলো।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, অনেকই দাবি করেন চাঁদপুর ও আশপাশের জেলার কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী ও আড়তদার নিজের ইচ্ছেমতো দাম হাঁকাচ্ছেন; যা একেবারেই ক্রেতার নাগালের বাহিরে। তার পরিপ্রেক্ষিতেই ইলিশের মূল্য নির্ধারণ করা প্রয়োজন। তাই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে। আশা করি তারা বিষয়টি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

এ বিষয়ে চাঁদপুরের মাছ ব্যবসায়ী বণিক সমিতির সভাপতি আব্দুল বারী জমাদার মানিক বলেন, এমন কিছু হলে চাঁদপুরের ব্যবসায়ীরা আর এ ব্যবসা করবেন না।

তিনি বলেন, বর্তমানে মাছ ধরতে গিয়ে যে পরিমাণ টাকা খরচ হয়, জেলেরা সেই পরিমাণ মাছ পায় না। চাহিদার চেয়ে জোগান কম হওয়ায় দেশের অন্যান্য জায়গা থেকে চাঁদপুরে ইলিশের দাম একটু বেশি হয়।

তিনি আরও বলেন, একদিন আগে ১ কেজি সাইজের মাছের কেজিপ্রতি দাম ছিল ২৭০০-২৮০০ টাকা। মঙ্গলবার ও বুধবার মাছের আমদানি একটু বেশি হওয়ায় কেজিপ্রতি ৬-৭ শ টাকা কমে এখন ২২০০-২৩০০ টাকা হয়েছে। বাজারে আরও বেশি মাছ এলে দাম আরও কমে আসবে বলে জানান তিনি।

মাছ ব্যবসায়ী বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবেবরাত বলেন, বাস্তবতা চিন্তা না করে ইলিশের দাম নির্ধারণ করা হলে এক সময় এখানে ইলিশ আসা বন্ধ হয়ে যাবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

চিঠির খবর শুনে চাঁদপুরে ইলিশের দাম কেজিতে কমেছে ৭০০ টাকা

আপডেট টাইম : ০৬:৫৪:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫

ইলিশের মূল্য নির্ধারণের জন্য মঙ্গলবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সচিবের কাছে চিঠি দিয়েছেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। আর এ চিঠির খবর শুনে চাঁদপুর মাছঘাটে ইলিশের দাম কেজিপ্রতি কমেছে সাতশ টাকা।

এ চিত্র মঙ্গল ও বুধবার চাদঁপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের। একদিন আগেও ১ কেজি সাইজের মাছের কেজিপ্রতি দাম ছিল ২৭০০-২৮০০ টাকা।

জেলা প্রশাসক বলেছেন, কক্সবাজার, ভোলা, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ইলিশের দামের তুলনায় চাঁদপুরে ইলিশের দাম ২-৩ গুণ বেশি।

ওই চিঠিতে জেলা প্রশাসক উল্লেখ করেন, প্রাচীনকাল থেকেই চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনা নদীর ইলিশ অত্যন্ত সুস্বাদু এবং মানের দিক থেকেও অতুলনীয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে বাংলাদেশের প্রথম জেলা ব্র্যান্ডিং হিসেবে চাঁদপুরকে ‘ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর’ হিসেবে সরকার স্বীকৃতি দেয়। ইলিশের এ স্বাদের সুযোগ নিয়ে চাঁদপুর ও আশপাশের জেলার কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী ও আড়তদার নিজের ইচ্ছেমতো দাম হাঁকাচ্ছেন, যা ক্রেতার নাগালের বাইরে। এমনকি চাঁদপুরের স্থায়ী বাসিন্দাদেরও অভিযোগ ইলিশের চড়া মূল্যের কারণে ইলিশ তাদের ক্রয়সীমার বাইরে চলে যাচ্ছে।

চিঠিতে তিনি আরও উল্লেখ করেন, যেহেতু ইলিশ চাঁদপুরসহ অন্যান্য জেলাতেও ধরা পড়ে, সেহেতু জেলা প্রশাসন ইলিশের মূল্য নির্ধারণের উদ্যোগ নিলে এর ফলপ্রসূ প্রভাব পড়বে না।

এখানে উল্লেখ্য, চাঁদপুরের পাশাপাশি বরিশাল, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠিসহ অনেক সাগর তীরবর্তী জেলায় ইলিশ ধরা পড়ে থাকে। নদী বা সাগরে ইলিশ উৎপাদনে জেলেদের কোনো উৎপাদন খরচ না থাকলেও ধৃত ইলিশের দাম অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। যেহেতু ইলিশ প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদন হয় সেহেতু ইলিশ আহরণ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক ব্যয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে ইলিশের মূল্য নির্ধারণ প্রয়োজন। এমতাবস্থায়, জাতীয় মাছ ইলিশের মূল্য নির্ধারণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্যে বিনীত অনুরোধ করা হলো।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, অনেকই দাবি করেন চাঁদপুর ও আশপাশের জেলার কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী ও আড়তদার নিজের ইচ্ছেমতো দাম হাঁকাচ্ছেন; যা একেবারেই ক্রেতার নাগালের বাহিরে। তার পরিপ্রেক্ষিতেই ইলিশের মূল্য নির্ধারণ করা প্রয়োজন। তাই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে। আশা করি তারা বিষয়টি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

এ বিষয়ে চাঁদপুরের মাছ ব্যবসায়ী বণিক সমিতির সভাপতি আব্দুল বারী জমাদার মানিক বলেন, এমন কিছু হলে চাঁদপুরের ব্যবসায়ীরা আর এ ব্যবসা করবেন না।

তিনি বলেন, বর্তমানে মাছ ধরতে গিয়ে যে পরিমাণ টাকা খরচ হয়, জেলেরা সেই পরিমাণ মাছ পায় না। চাহিদার চেয়ে জোগান কম হওয়ায় দেশের অন্যান্য জায়গা থেকে চাঁদপুরে ইলিশের দাম একটু বেশি হয়।

তিনি আরও বলেন, একদিন আগে ১ কেজি সাইজের মাছের কেজিপ্রতি দাম ছিল ২৭০০-২৮০০ টাকা। মঙ্গলবার ও বুধবার মাছের আমদানি একটু বেশি হওয়ায় কেজিপ্রতি ৬-৭ শ টাকা কমে এখন ২২০০-২৩০০ টাকা হয়েছে। বাজারে আরও বেশি মাছ এলে দাম আরও কমে আসবে বলে জানান তিনি।

মাছ ব্যবসায়ী বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবেবরাত বলেন, বাস্তবতা চিন্তা না করে ইলিশের দাম নির্ধারণ করা হলে এক সময় এখানে ইলিশ আসা বন্ধ হয়ে যাবে।