ঢাকা ১১:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রবাস ছেড়ে খেজুর চাষে ভাগ্যবদল, বছরে ৫০ লাখ টাকা আয়ের স্বপ্ন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১১:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫
  • ১৬ বার

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা শহরের ঢাকা মোড় থেকে রংপুর যাওয়ার সড়কের বাঁ দিকে চোখে পড়বে হাস্কিং মিলের চাতাল। সেখানে গুদাম ঘরসংলগ্ন ইটের প্রাচীর ঘেরা একটা জায়গা। প্রাচীরের উচ্চতা ভেদ করে মাথা দোলাচ্ছে খেজুরগাছের সবুজ পাতা। প্রাচীরের অভ্যন্তরে লাগানো রয়েছে ১৯টি খেজুরগাছ। অধিকাংশ গাছে থোকায় থোকায় খেজুরের কাঁদি ঝুলছে। হলুদ রঙের কাঁদির সঙ্গে ঝুলছে সবুজ রঙের খেজুর। ইতিমধ্যে কাঁদিগুলোকে গাছের ডালের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। এই বাগান গড়ে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন জাকির হোসেন (৪৭) নামে কুয়েতফেরত এক যুবক।

জাকির হোসেন ফুলবাড়ী পৌর শহরের স্বজনপুকুর এলাকার আবু আব্বাসের ছেলে। ১৯৯৯ সালে এক নিকটাত্মীয়ের মাধ্যমে কুয়েতপ্রবাসী হন। শুরুতেই কুয়েতের ‘সুয়েব’ শহরে মোটর গ্যারেজে চাকরি নেন। এরপর ধীরে ধীরে কর্মচারী থেকে গ্যারেজের মালিক হন। সুয়েব শহরে প্রতিটি বাড়িতে, রাস্তায় প্রায় সবখানে খেজুরগাছ দেখে উদ্বুদ্ধ হন জাকির। সেটা দেখে নিজের দেশে খেজুরবাগান করার পরিকল্পনা করেন। চাষের পদ্ধতি শিখেন অনলাইনসহ খেজুরচাষিদের কাছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোতে থাকেন জাকির।

২০১৭ সালে ফুলবাড়ী পৌর শহরের স্বজনপুকুর এলাকায় নিজের ২০ শতক জমিতে বপন করেন খেজুরের বীজ। ২০২২ সালে প্রথমবারের মতো রোপণকৃত গাছে দেখা মেলে কাঙ্ক্ষিত সেই খেজুর ফলের। এরপর আর প্রবাসে ফেরেননি তিনি।

রোববার (১৫ জুন) সকালে খেজুরবাগানে দেখা মিলে জাকিরের। কয়েকজন শ্রমিক নিয়ে ফলন্ত খেজুরগাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ সময় কথা হলে তিনি জানান, প্রায় দুই একর জমিতে খেজুরগাছের বাগান ও চারা উৎপাদন করছেন তিনি। নার্সারিতে বিক্রির উপযোগী ১০ হাজারেরও অধিক চারা রয়েছে । বর্তমানে বীজ থেকে খেজুরগাছের চারা তৈরি করেছেন জাকির। সেই চারা বিক্রি করছেন আশপাশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। অনলাইনেও খেজুরগাছপ্রেমীদের চাহিদা মেটাচ্ছেন। গত তিন বছরে প্রায় ৪০ লাখ টাকার চারা বিক্রি করেছেন।

শুরুর দিকে ২০ শতক জমিতে লাগানো ১৯টি খেজুরগাছের মধ্যে এবার ১৪টিতে আশানুরূপ ফল ধরেছে। এসব গাছে প্রায় ২০ মণ খেজুর পাবেন, এমনটাই আশা করছেন তিনি। খেজুরগুলো এখনো পরিপক্ব হয়নি। সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা কেজি দর পেলেও ১০ লাখ টাকার খেজুর বিক্রি করবেন, এমনটাই আশা করছেন তিনি। বাগানমালিক জাকির হোসেন বলেন, ‘২০২২ সালে প্রথম দুটি গাছে ফল ধরেছিল। এর পর থেকে ফলন বাড়তে থাকে। খেজুর শুরুতে সবুজ রঙের থাকে। ধীরে ধীরে রং পরিবর্তন হয়ে প্রথমে হলুদ, তারপর গাঢ় লালচে রং ধারণ করবে। আগস্টের শেষ দিকে বাজারজাত করার উপযোগী হয়ে উঠবে।’

জাকিরের বাগানে মরিয়ম, আজওয়া, খলিজি, মেডজল ও আম্বার জাতের খেজুরগাছ রয়েছে। আকৃতির দিক থেকে খেজুরগুলো কোনোটি গোলাকৃতির, কোনোটি লম্বা। প্রতিদিন তাঁর খেজুরবাগানে দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন, কেউ কেউ চারা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিটি দুই বছর বয়সী খেজুরগাছের চারা বিক্রি করছেন এক হাজার টাকা করে। আর প্রতিটি কলম চারার মূল্য রেখেছেন ১৫-৩০ হাজার টাকা। ছাদে লাগানোর জন্য প্লাস্টিকের ড্রামেও চারা প্রস্তুত করেছেন। তিনি বলেন, ‘এলাকার মানুষ যখন জানল চাকরি ও ব্যবসা ছেড়ে দেশে এসে খেজুরবাগান করছি। তখন অনেকে হাসাহাসি করেছে। নানা প্রশ্ন করেছে। ফ্রিতে চারা দিতে চেয়েছি। গুরুত্ব দেয়নি কেউ। এখন তাঁরাই নিজে থেকে টাকা দিয়ে চারা কিনছেন।’ যাঁরা চারা কিনেছেন এরই মধ্যে কয়েকজনের গাছে ফল ধরেছে। তাঁদেরও মোবাইল ফোনে নানান পরামর্শ দিচ্ছেন জাকির।

খেজুরগাছের যত্ন নেওয়া, বীজ থেকে চারা উৎপাদন, কলম চারা করার পদ্ধতি, ডাল ছাঁটাই, ফসল সংগ্রহ-সংরক্ষণ বিষয়ে জাকির যেন রীতিমতো বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের ধারণা খেজুর মরুর দেশের ফল। বিষয়টি তা নয়। খেজুরগাছ সব ধরনের মাটিতেই হয়। খেয়াল রাখতে হবে জমি থেকে পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা আছে কি না। তবে বেলে-দোআঁশ মাটি সবচেয়ে উপযোগী।’

তিনি বলেন, বালি-ছাই-গোবর ও কম্পোস্ট সার মিশিয়ে কয়েক দিন রেখে দিয়ে পরে জমিতে দিতে হবে। খেজুর থেকে প্রাপ্ত বীজ ৪০-৪৮ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। পরে ট্রেতে বীজ বপন করতে হয়। নিয়মিত পরিচর্যা করতে হয়। এভাবে চার সপ্তাহের মধ্যে বীজ থেকে চারা গজাবে। কিছুদিন পর ওই চারা প্লাস্টিকের প্যাকেটে তুলে রাখতে হয়। তারপর আবার তা মাটিতে বপন করতে হয়।

পঞ্চগড় থেকে জাকিরের কাছে খেজুরগাছের চারা কিনতে আসা তাহেরুল ইসলাম বলেন, ‘পরিচিত একজনের কাছে জাকিরের সন্ধান পাই। তারপর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করি। ইতিমধ্যে জমি প্রস্তুত করেছি, ২০টি চারা কিনে নিয়ে যাচ্ছি।’

শুধু খেজুরগাছই নয় পাশাপাশি ড্রাগন, লেবু, আমসহ অন্যান্য ফলের আবাদ শুরু করেছেন জাকির। তিনি বলেন, ‘এত সুন্দর পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এই ফল, যা প্রতিদিন বিশেষ করে রমজান মাসে লাখ লাখ টাকার খেজুর আমাদের আমদানি করতে হয়। অথচ আমাদের দেশে খেজুর চাষের দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে। আমি চেষ্টা করছি, আগামী ১০ বছরের মধ্যে দেশের প্রত্যেকটি গ্রামে, বাড়িতে এই খেজুরগাছের চারা রোপণ করতে। রপ্তানি করতে না পারি যেন খেজুর আর আমদানি করতে না হয়, সে লক্ষ্যেই কাজ করছি। ইতিমধ্যে এলাকার মানুষদের উদ্বুদ্ধ করেছি, সাড়াও পাচ্ছি বেশ।’

উপজেলা (ভারপ্রাপ্ত) কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহানুর রহমান বলেন, ‘আমরা জাকিরের খেজুরবাগান পরিদর্শন করেছি এবং কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাঁকে সার্বিক পরামর্শ প্রদান করা হয়। খেজুর চাষে এ অঞ্চলের কৃষিতে এক নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। তিনি খুব ভালো একজন কৃষি উদ্যোক্তা। জাকির যেভাবে খেজুর চাষাবাদ করেছেন, এভাবে খেজুর চাষাবাদ করে লাভবান হওয়া সম্ভব। তাঁর বাগানের খেজুরগুলো সুমিষ্ট এবং সুস্বাদু।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

প্রবাস ছেড়ে খেজুর চাষে ভাগ্যবদল, বছরে ৫০ লাখ টাকা আয়ের স্বপ্ন

আপডেট টাইম : ১১:১১:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা শহরের ঢাকা মোড় থেকে রংপুর যাওয়ার সড়কের বাঁ দিকে চোখে পড়বে হাস্কিং মিলের চাতাল। সেখানে গুদাম ঘরসংলগ্ন ইটের প্রাচীর ঘেরা একটা জায়গা। প্রাচীরের উচ্চতা ভেদ করে মাথা দোলাচ্ছে খেজুরগাছের সবুজ পাতা। প্রাচীরের অভ্যন্তরে লাগানো রয়েছে ১৯টি খেজুরগাছ। অধিকাংশ গাছে থোকায় থোকায় খেজুরের কাঁদি ঝুলছে। হলুদ রঙের কাঁদির সঙ্গে ঝুলছে সবুজ রঙের খেজুর। ইতিমধ্যে কাঁদিগুলোকে গাছের ডালের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। এই বাগান গড়ে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন জাকির হোসেন (৪৭) নামে কুয়েতফেরত এক যুবক।

জাকির হোসেন ফুলবাড়ী পৌর শহরের স্বজনপুকুর এলাকার আবু আব্বাসের ছেলে। ১৯৯৯ সালে এক নিকটাত্মীয়ের মাধ্যমে কুয়েতপ্রবাসী হন। শুরুতেই কুয়েতের ‘সুয়েব’ শহরে মোটর গ্যারেজে চাকরি নেন। এরপর ধীরে ধীরে কর্মচারী থেকে গ্যারেজের মালিক হন। সুয়েব শহরে প্রতিটি বাড়িতে, রাস্তায় প্রায় সবখানে খেজুরগাছ দেখে উদ্বুদ্ধ হন জাকির। সেটা দেখে নিজের দেশে খেজুরবাগান করার পরিকল্পনা করেন। চাষের পদ্ধতি শিখেন অনলাইনসহ খেজুরচাষিদের কাছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোতে থাকেন জাকির।

২০১৭ সালে ফুলবাড়ী পৌর শহরের স্বজনপুকুর এলাকায় নিজের ২০ শতক জমিতে বপন করেন খেজুরের বীজ। ২০২২ সালে প্রথমবারের মতো রোপণকৃত গাছে দেখা মেলে কাঙ্ক্ষিত সেই খেজুর ফলের। এরপর আর প্রবাসে ফেরেননি তিনি।

রোববার (১৫ জুন) সকালে খেজুরবাগানে দেখা মিলে জাকিরের। কয়েকজন শ্রমিক নিয়ে ফলন্ত খেজুরগাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ সময় কথা হলে তিনি জানান, প্রায় দুই একর জমিতে খেজুরগাছের বাগান ও চারা উৎপাদন করছেন তিনি। নার্সারিতে বিক্রির উপযোগী ১০ হাজারেরও অধিক চারা রয়েছে । বর্তমানে বীজ থেকে খেজুরগাছের চারা তৈরি করেছেন জাকির। সেই চারা বিক্রি করছেন আশপাশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। অনলাইনেও খেজুরগাছপ্রেমীদের চাহিদা মেটাচ্ছেন। গত তিন বছরে প্রায় ৪০ লাখ টাকার চারা বিক্রি করেছেন।

শুরুর দিকে ২০ শতক জমিতে লাগানো ১৯টি খেজুরগাছের মধ্যে এবার ১৪টিতে আশানুরূপ ফল ধরেছে। এসব গাছে প্রায় ২০ মণ খেজুর পাবেন, এমনটাই আশা করছেন তিনি। খেজুরগুলো এখনো পরিপক্ব হয়নি। সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা কেজি দর পেলেও ১০ লাখ টাকার খেজুর বিক্রি করবেন, এমনটাই আশা করছেন তিনি। বাগানমালিক জাকির হোসেন বলেন, ‘২০২২ সালে প্রথম দুটি গাছে ফল ধরেছিল। এর পর থেকে ফলন বাড়তে থাকে। খেজুর শুরুতে সবুজ রঙের থাকে। ধীরে ধীরে রং পরিবর্তন হয়ে প্রথমে হলুদ, তারপর গাঢ় লালচে রং ধারণ করবে। আগস্টের শেষ দিকে বাজারজাত করার উপযোগী হয়ে উঠবে।’

জাকিরের বাগানে মরিয়ম, আজওয়া, খলিজি, মেডজল ও আম্বার জাতের খেজুরগাছ রয়েছে। আকৃতির দিক থেকে খেজুরগুলো কোনোটি গোলাকৃতির, কোনোটি লম্বা। প্রতিদিন তাঁর খেজুরবাগানে দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন, কেউ কেউ চারা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিটি দুই বছর বয়সী খেজুরগাছের চারা বিক্রি করছেন এক হাজার টাকা করে। আর প্রতিটি কলম চারার মূল্য রেখেছেন ১৫-৩০ হাজার টাকা। ছাদে লাগানোর জন্য প্লাস্টিকের ড্রামেও চারা প্রস্তুত করেছেন। তিনি বলেন, ‘এলাকার মানুষ যখন জানল চাকরি ও ব্যবসা ছেড়ে দেশে এসে খেজুরবাগান করছি। তখন অনেকে হাসাহাসি করেছে। নানা প্রশ্ন করেছে। ফ্রিতে চারা দিতে চেয়েছি। গুরুত্ব দেয়নি কেউ। এখন তাঁরাই নিজে থেকে টাকা দিয়ে চারা কিনছেন।’ যাঁরা চারা কিনেছেন এরই মধ্যে কয়েকজনের গাছে ফল ধরেছে। তাঁদেরও মোবাইল ফোনে নানান পরামর্শ দিচ্ছেন জাকির।

খেজুরগাছের যত্ন নেওয়া, বীজ থেকে চারা উৎপাদন, কলম চারা করার পদ্ধতি, ডাল ছাঁটাই, ফসল সংগ্রহ-সংরক্ষণ বিষয়ে জাকির যেন রীতিমতো বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের ধারণা খেজুর মরুর দেশের ফল। বিষয়টি তা নয়। খেজুরগাছ সব ধরনের মাটিতেই হয়। খেয়াল রাখতে হবে জমি থেকে পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা আছে কি না। তবে বেলে-দোআঁশ মাটি সবচেয়ে উপযোগী।’

তিনি বলেন, বালি-ছাই-গোবর ও কম্পোস্ট সার মিশিয়ে কয়েক দিন রেখে দিয়ে পরে জমিতে দিতে হবে। খেজুর থেকে প্রাপ্ত বীজ ৪০-৪৮ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। পরে ট্রেতে বীজ বপন করতে হয়। নিয়মিত পরিচর্যা করতে হয়। এভাবে চার সপ্তাহের মধ্যে বীজ থেকে চারা গজাবে। কিছুদিন পর ওই চারা প্লাস্টিকের প্যাকেটে তুলে রাখতে হয়। তারপর আবার তা মাটিতে বপন করতে হয়।

পঞ্চগড় থেকে জাকিরের কাছে খেজুরগাছের চারা কিনতে আসা তাহেরুল ইসলাম বলেন, ‘পরিচিত একজনের কাছে জাকিরের সন্ধান পাই। তারপর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করি। ইতিমধ্যে জমি প্রস্তুত করেছি, ২০টি চারা কিনে নিয়ে যাচ্ছি।’

শুধু খেজুরগাছই নয় পাশাপাশি ড্রাগন, লেবু, আমসহ অন্যান্য ফলের আবাদ শুরু করেছেন জাকির। তিনি বলেন, ‘এত সুন্দর পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এই ফল, যা প্রতিদিন বিশেষ করে রমজান মাসে লাখ লাখ টাকার খেজুর আমাদের আমদানি করতে হয়। অথচ আমাদের দেশে খেজুর চাষের দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে। আমি চেষ্টা করছি, আগামী ১০ বছরের মধ্যে দেশের প্রত্যেকটি গ্রামে, বাড়িতে এই খেজুরগাছের চারা রোপণ করতে। রপ্তানি করতে না পারি যেন খেজুর আর আমদানি করতে না হয়, সে লক্ষ্যেই কাজ করছি। ইতিমধ্যে এলাকার মানুষদের উদ্বুদ্ধ করেছি, সাড়াও পাচ্ছি বেশ।’

উপজেলা (ভারপ্রাপ্ত) কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহানুর রহমান বলেন, ‘আমরা জাকিরের খেজুরবাগান পরিদর্শন করেছি এবং কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাঁকে সার্বিক পরামর্শ প্রদান করা হয়। খেজুর চাষে এ অঞ্চলের কৃষিতে এক নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। তিনি খুব ভালো একজন কৃষি উদ্যোক্তা। জাকির যেভাবে খেজুর চাষাবাদ করেছেন, এভাবে খেজুর চাষাবাদ করে লাভবান হওয়া সম্ভব। তাঁর বাগানের খেজুরগুলো সুমিষ্ট এবং সুস্বাদু।’