টুর্নামেন্টে ফেবারিট হয়ে খেলতে গিয়ে দাপুটে শুরু। এরপর নকআউট পর্বে এসে বিপর্যয়। এক-দুবার নয়, ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটেছে বহুবার। তাইতো তাদের নামের সঙ্গে জুটেছে ‘চোকার্স’ অপবাদ। এবার সেই অপবাদ ঘুচতে পারল টেম্বা বাভুমার দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় চক্রের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা জিতল প্রোটিয়ারা।
ফাইনাল ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে ২৭৬ রানের মাথায় পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ওপেনার এইডেন মার্করাম। ১৩৬ রান করা এই নায়ক বিদায় নিলেও ততক্ষণে জয়ের একদম দ্বারপ্রান্তে দক্ষিণ আফ্রিকা। দরকার ছিল মাত্র ৬ রান। ডেভিড বেডিংহ্যাম ও কাইল ভেরেইন্না অনায়াসেই বাকি রান তুলে প্রোটিয়াদের দিলেন বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শিরোপার স্বাদ।
এটিই দক্ষিণ আফ্রিকার জেতা প্রথম বড় কোনো আইসিসি ট্রফি। এর আগে ১৯৯৮ সালে ‘আইসিসি নকআউট ট্রফি’ জিতেছিল দেশটি। তবে সেটি মেজর শিরোপার কাতারে পড়ে না। ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে শিরোপার কাছাকাছি গিয়েও শিরোপা খোয়াতে হয় ভারতের কাছে।
লর্ডসে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফাইনাল ম্যাচে শিরোপার পথ সহজ ছিল না দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার করা ২১২ রানের জবাবে ১৩৮ রানেই অলআউট হয় প্রোটিয়ারা। প্রথম ইনিংসে ৭৪ রানে পিছিয়ে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া করে ২০৭ রান। ফলে শিরোপার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় তাই ২৮২ রানের। ‘চোকার্স’ অপবাদ নিজেদের সঙ্গে জুটে যাওয়া প্রোটিয়ারা সেটিই অতিক্রম করলেন অনায়াসে।
প্রোটিয়ারা হয়তো অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তাদের আগের রেকর্ড থেকেই অনুপ্রেরণা নিয়েছেন এই ম্যাচে। আজকের আগে টেস্ট ক্রিকেটে যে পাঁচবার ২৫০ রানের বেশি তাড়া করে জেতার কীর্তি আছে দক্ষিণ আফ্রিকার, তার তিনবারই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। এর মধ্যে ২০০৮ সালে পার্থে সর্বশেষটি জিতেছিল তারা ৪১৪ রান তাড়া করে।
ব্যাট হাতে দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ের নায়ক মার্করাম। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৩৬ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলেন তিনি। আর প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও অধিনায়কের মতো খেললেন বাভুমা। প্রথম ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ (৩৬) রান করা বাভুমা দ্বিতীয় ইনিংসেও করলেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান (৬৬)। ইনজুরি নিয়েও তার এই রান জয়ের ভিত্তি তৈরি করে দেয় প্রোটিয়াদের।
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে বল হাতে ম্যাচজুড়ে দুর্দান্ত ছিলেন পেসার কাগিসো রাবাদা। প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসেও চার উইকেট নেন তিনি। এছাড়া ম্যাচে মার্কো জেনসেন ৪ উইকেট ও লুঙ্গি এনগিডি ৩ উইকেট নিয়েও রেখেছেন বড় ভূমিকা।