ঢাকা ০১:৪৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫, ২৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
ঈদে আম ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত আমাকে কালো জাদু করা হয়েছিল, ২২ দিন আইসিউতে ছিলাম সড়কপথে গাজার দিকে রওনা দিয়েছেন শত শত অধিকারকর্মী বিচ্ছেদকে বিদায়, যেভাবে ফের বান্ধবীর সঙ্গে এক হলেন এনজো ফার্নান্দেজ দেশ চালানোর মতো ক্ষমতা তারেক রহমানের আছে: ফজলুর রহমান লন্ডন বৈঠক সরকার ও বিএনপি উভয়ের জন্যই সুযোগ জাল টাকায় ক্ষতিগ্রস্ত সেই বৃদ্ধকে ওমরাহ করাবেন অপু বিশ্বাস পুরনো বাংলাদেশকে বিদায় বলে নতুন বাংলাদেশ তৈরি করতে চাই : প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের নোবেল প্রাপ্তি, খালেদা জিয়া ও প্রিন্স চার্লসের অনন্য ভূমিকা সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের সম্পদ জব্দ করেছে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি

পশুর বয়স কত হলে কোরবানি করা যাবে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:৪৫:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫
  • ৩০ বার

কোরবানি বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য পশু নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হতে হবে। পবিত্র কোরআনে চতুষ্পদ জন্তুর কথা বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি সব জাতির জন্য কোরবানির বিধান রেখেছি, যেন আমি তাদের জীবনোকরণ হিসেবে যে চতুষ্পদ জন্তু দিয়েছি তাতে (জবাই করার সময়) আল্লাহর নাম স্মরণ করে। (সুরা হজ, আয়াত : ৩৪)

যেসব পশু দিয়ে কোরবানি হয় : তিন ধরনের চতুষ্পদ জন্তু দিয়ে কোরবানি করা যাবে।

তা হলো : ১. ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা, ২. গরু, মহিষ, ৩. উট।

কোরবানির পশুর বয়সসীমা : কোরবানির জন্য উটের বয়স পাঁচ বছর হতে হবে। গরু ও মহিষের বয়স দুই বছর হতে হবে। ছাগল ও ভেড়ার বয়স এক বছর হতে হবে।

নাফে (রহ.) বর্ণনা করেছেন, আবদুল্লাহ বিন ওমর (রা.) কোরবানি, হজ ও ওমরার পশুর ক্ষেত্রে উটের বয়স পাঁচ বছর, গরু ও মহিষের বয়স দুই বছর এবং ছাগল, দুম্বা ও ভেড়ার ক্ষেত্রে এক বছর বয়স হওয়ার কথা বলতেন। (মুয়াত্তা মালেক, হাদিস : ৭৫৪)

তবে ছাগল ও ভেড়া এক বছর পরিপূর্ণ না হয়ে বছরের বেশির ভাগ সময় অতিবাহিত হয় এবং দেখতে এক বছরের বাচ্চার মতো মনে হয় তাহলে এ ধরনের দুম্বা ও ভেড়া দিয়ে কোরবানি জায়েজ। ছাগলের বয়স এক বছরের কম হলে কোনো অবস্থাতেই তা দ্বারা কোরবানি করা জায়েজ হবে না। (ফাতাওয়ায়ে কাজিখান : ৩/৩৪৮, বাদায়িউস সানায়ে : ৪/২০৫-২০৬)

সাতজনের পক্ষ থেকে কোরবানি : গরু, মহিষ ও উটের ক্ষেত্রে একটি জন্তু দিয়ে সর্বোচ্চ সাতজনের পক্ষ থেকে কোরবানি করা জায়েজ আছে।

জাবির (রা.) বর্ণনা করেছেন, আমরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে হুদায়বিয়া চুক্তির বছর একটি উট ও একটি গরু দিয়ে সাতজন কোরবানি করেছি। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৩২২, ৩০৪৮; ফাতাওয়া কাজিখান : ৩/৩৪)

কোরবানির পশু যেমন হবে : কোরবানির পশু সব ধরনের শারীরিক ত্রুটিমুক্ত হওয়া জরুরি। গুণগত দিক থেকে উত্তম হলো, পশুটি দেখতে সুন্দর, নিখুঁত বা দোষত্রুটি মুক্ত ও হৃষ্টপুষ্ট। যে পশু দেখলে পছন্দ হয়। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)শিংবিশিষ্ট ও মোটাতাজা একটি মেষ কোরবানি করেছেন।

এর চেহারা, পা ও চোখ ছিল মিটমিটে কালো। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩১২৮)

পশুর যেসব ত্রুটি থাকলে কোরবানি শুদ্ধ হয় না

কোরবানির পশু দোষ-ত্রুটিমুক্ত হওয়া আবশ্যক। এ বিষয়ে ইসলামী শরিয়তের বিধান নিম্নরূপ :

১. অন্ধ : যে গরু চোখে দেখতে পায় না, তা স্পষ্ট।

২. রোগাগ্রস্ত : রোগ-বালাইয়ে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট।

৩. পঙ্গু : যে পশু হাঁটাচলা করতে পারে না।

৪. আহত : যার কোনো অঙ্গ ভেঙে গেছে তা স্পষ্ট। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৪৯৭)

৫. যে পশুর একটি দাঁতও নেই বা এত বেশি দাঁত পড়ে গেছে যে ঘাস বা খাদ্য চিবাতে পারে না—এমন পশু দ্বারা কোরবানি করা জায়েয নয়। (বাদায়িউস সানায়ে : ৪/২১৫; ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি ৫/২৯৮)

৬. যে পশুর শিং একেবারে গোড়া থেকে ভেঙে গেছে, যে কারণে মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; সে পশুর কোরবানি জায়েজ নয়। পক্ষান্তরে যে পশুর অর্ধেক শিং বা কিছু শিং ফেটে বা ভেঙে গেছে বা শিং একেবারে ওঠেনি সে পশু কোরবানি করা জায়েজ। (রদ্দুল মুহতার : ৬/৩২৪; ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি : ৫/২৯৭)

৭. যে পশুর লেজ বা কোনো কান অর্ধেক বা তারও বেশি কাটা, সে পশুর কোরবানি জায়েজ নয়। আর যদি অর্ধেকের বেশি থাকে তাহলে তার কোরবানি জায়েজ। তবে জন্মগতভাবেই যদি কান ছোট হয় তাহলে অসুবিধা নেই। (সুনানে তিরমিজি : ১/২৭৫; হেদায়া : ৪/৪৪৭)

সর্বোচ্চ সতর্কতা জরুরি : আলী (রা.) বলেন, আমাদের রাসুল (সা.) আদেশ করেছেন, আমরা যেন কোরবানির পশুর চোখ ও কান ভালো করে দেখে নিই এবং কান কাটা, কান ছেঁড়া বা কানে গোলাকার ছিদ্র করা পশু দ্বারা কোরবানি না করি। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ২৮০৪)।

মহান আল্লাহ! আমাদের আমল করার তাওফিক দিন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

ঈদে আম ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত

পশুর বয়স কত হলে কোরবানি করা যাবে

আপডেট টাইম : ০৩:৪৫:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫

কোরবানি বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য পশু নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হতে হবে। পবিত্র কোরআনে চতুষ্পদ জন্তুর কথা বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি সব জাতির জন্য কোরবানির বিধান রেখেছি, যেন আমি তাদের জীবনোকরণ হিসেবে যে চতুষ্পদ জন্তু দিয়েছি তাতে (জবাই করার সময়) আল্লাহর নাম স্মরণ করে। (সুরা হজ, আয়াত : ৩৪)

যেসব পশু দিয়ে কোরবানি হয় : তিন ধরনের চতুষ্পদ জন্তু দিয়ে কোরবানি করা যাবে।

তা হলো : ১. ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা, ২. গরু, মহিষ, ৩. উট।

কোরবানির পশুর বয়সসীমা : কোরবানির জন্য উটের বয়স পাঁচ বছর হতে হবে। গরু ও মহিষের বয়স দুই বছর হতে হবে। ছাগল ও ভেড়ার বয়স এক বছর হতে হবে।

নাফে (রহ.) বর্ণনা করেছেন, আবদুল্লাহ বিন ওমর (রা.) কোরবানি, হজ ও ওমরার পশুর ক্ষেত্রে উটের বয়স পাঁচ বছর, গরু ও মহিষের বয়স দুই বছর এবং ছাগল, দুম্বা ও ভেড়ার ক্ষেত্রে এক বছর বয়স হওয়ার কথা বলতেন। (মুয়াত্তা মালেক, হাদিস : ৭৫৪)

তবে ছাগল ও ভেড়া এক বছর পরিপূর্ণ না হয়ে বছরের বেশির ভাগ সময় অতিবাহিত হয় এবং দেখতে এক বছরের বাচ্চার মতো মনে হয় তাহলে এ ধরনের দুম্বা ও ভেড়া দিয়ে কোরবানি জায়েজ। ছাগলের বয়স এক বছরের কম হলে কোনো অবস্থাতেই তা দ্বারা কোরবানি করা জায়েজ হবে না। (ফাতাওয়ায়ে কাজিখান : ৩/৩৪৮, বাদায়িউস সানায়ে : ৪/২০৫-২০৬)

সাতজনের পক্ষ থেকে কোরবানি : গরু, মহিষ ও উটের ক্ষেত্রে একটি জন্তু দিয়ে সর্বোচ্চ সাতজনের পক্ষ থেকে কোরবানি করা জায়েজ আছে।

জাবির (রা.) বর্ণনা করেছেন, আমরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে হুদায়বিয়া চুক্তির বছর একটি উট ও একটি গরু দিয়ে সাতজন কোরবানি করেছি। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৩২২, ৩০৪৮; ফাতাওয়া কাজিখান : ৩/৩৪)

কোরবানির পশু যেমন হবে : কোরবানির পশু সব ধরনের শারীরিক ত্রুটিমুক্ত হওয়া জরুরি। গুণগত দিক থেকে উত্তম হলো, পশুটি দেখতে সুন্দর, নিখুঁত বা দোষত্রুটি মুক্ত ও হৃষ্টপুষ্ট। যে পশু দেখলে পছন্দ হয়। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)শিংবিশিষ্ট ও মোটাতাজা একটি মেষ কোরবানি করেছেন।

এর চেহারা, পা ও চোখ ছিল মিটমিটে কালো। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩১২৮)

পশুর যেসব ত্রুটি থাকলে কোরবানি শুদ্ধ হয় না

কোরবানির পশু দোষ-ত্রুটিমুক্ত হওয়া আবশ্যক। এ বিষয়ে ইসলামী শরিয়তের বিধান নিম্নরূপ :

১. অন্ধ : যে গরু চোখে দেখতে পায় না, তা স্পষ্ট।

২. রোগাগ্রস্ত : রোগ-বালাইয়ে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট।

৩. পঙ্গু : যে পশু হাঁটাচলা করতে পারে না।

৪. আহত : যার কোনো অঙ্গ ভেঙে গেছে তা স্পষ্ট। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৪৯৭)

৫. যে পশুর একটি দাঁতও নেই বা এত বেশি দাঁত পড়ে গেছে যে ঘাস বা খাদ্য চিবাতে পারে না—এমন পশু দ্বারা কোরবানি করা জায়েয নয়। (বাদায়িউস সানায়ে : ৪/২১৫; ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি ৫/২৯৮)

৬. যে পশুর শিং একেবারে গোড়া থেকে ভেঙে গেছে, যে কারণে মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; সে পশুর কোরবানি জায়েজ নয়। পক্ষান্তরে যে পশুর অর্ধেক শিং বা কিছু শিং ফেটে বা ভেঙে গেছে বা শিং একেবারে ওঠেনি সে পশু কোরবানি করা জায়েজ। (রদ্দুল মুহতার : ৬/৩২৪; ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি : ৫/২৯৭)

৭. যে পশুর লেজ বা কোনো কান অর্ধেক বা তারও বেশি কাটা, সে পশুর কোরবানি জায়েজ নয়। আর যদি অর্ধেকের বেশি থাকে তাহলে তার কোরবানি জায়েজ। তবে জন্মগতভাবেই যদি কান ছোট হয় তাহলে অসুবিধা নেই। (সুনানে তিরমিজি : ১/২৭৫; হেদায়া : ৪/৪৪৭)

সর্বোচ্চ সতর্কতা জরুরি : আলী (রা.) বলেন, আমাদের রাসুল (সা.) আদেশ করেছেন, আমরা যেন কোরবানির পশুর চোখ ও কান ভালো করে দেখে নিই এবং কান কাটা, কান ছেঁড়া বা কানে গোলাকার ছিদ্র করা পশু দ্বারা কোরবানি না করি। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ২৮০৪)।

মহান আল্লাহ! আমাদের আমল করার তাওফিক দিন।