ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের দখলদারিত্বের শিকার। এবার ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচ ঘোষণা দিয়েছেন, নতুন সেনাপ্রধান আয়াল জামিরের নেতৃত্বে এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সহায়তায় ইসরায়েলি বাহিনী গাজা দখলের জন্য প্রস্তুত। তার এই বক্তব্য নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ইসরায়েলের সংসদ কনেসেটের এক বৈঠকে স্মোটরিচ এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, বর্তমানে লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী সবচেয়ে দুর্বল অবস্থায় রয়েছে এবং এটি লেবানন সরকার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাদের স্থলপথে সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে দেওয়া হয়েছে এবং নেতৃত্ব ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান আরও তীব্র করার পরিকল্পনা করছে।
স্মোটরিচ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ইসরায়েল গাজাকে পশ্চিম তীর ও উত্তর গাজার জাবালিয়ার মতো করে তুলতে চায়, যেখানে তারা আগেই জাতিগত নির্মূল অভিযান চালিয়েছে। তিনি গর্ব করে জানান, ইসরায়েল এর আগেও পশ্চিম তীরের শরণার্থী শিবির থেকে হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করেছে এবং তাদের বসতি ধ্বংস করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “যখন আমরা যুদ্ধ শুরু করব, তখন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শক্তি প্রয়োগ করব এবং এমন আঘাত দেব যা তারা সহজে সামলাতে পারবে না।” হামাসের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, “আমরা তাদের এক বিন্দুও অবশিষ্ট রাখব না।” এছাড়া, তিনি উল্লেখ করেন, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ইতোমধ্যে পশ্চিম তীরে হামাসের বিরুদ্ধে ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান ব্যবহার করছে।
গাজায় ইসরায়েলি হামলার ফলে বিপুলসংখ্যক প্রাণহানি হয়েছে। গত মাসে গাজায় এক যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময় চুক্তি কার্যকর হয়। এর আগে ইসরাইলের ধ্বংসাত্মক যুদ্ধে প্রায় ৪৮,৩৫০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইতোমধ্যে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। ইসরায়েলের এসব পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক মহলে নিন্দার ঝড় তুলেছে এবং মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।