মাশরাফি বিন মুর্তজাকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের প্রাণ ভোমরা তিনি। এই তো সেদিন আফগানিস্তানের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে বোলিং করতে গিয়ে মাটিতে পড়ে যান মাশরাফি। সঙ্গে সঙ্গে কোটি মানুষের দুশ্চিন্তা শুরু হয়ে গেল, আবার না প্রিয় মাশরাফিকে মাঠের বাইরে চলে যেতে হয় ইনজুরির কারণে। না তেমনটা হয়নি। অপূর্ব এক ঘটনারও জন্ম দিয়েছিলেন সেদিন তিনি। নিরাপত্তাবলয় পেরিয়ে তার এক ভক্ত যখন মাঠে ঢুকে পড়লো তখন তাকে নিরাপত্তারক্ষীদের কাছ থেকে বুকে আগলে রাখলেন। ক্রিকেটে এমন ঘটনা আগে কখনোই ঘটেনি। মাঠে প্রবেশ করা একজন ভক্তকে বুক দিয়ে আগলে রেখেছেন তিনি শুধুই মাশরাফি।
মাঠে খেলেন নিজের শতভাগ উজাড় করে, জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসেন ক্রিকেট। বারবার বড় ধরনের ইনজুরিতে পড়েন, থাকতে হয় মাঠের বাইরে। আবার ফর্ম নিয়ে ফিরেও আসেন সগৌরবে। সাম্প্রতিক সময়ে ওয়ানডে ক্রিকেটের সবচে সফল অধিনায়কের নাম মাশরাফি বিন মুর্তজা।
৫ অক্টোবর ১৯৮৩, নড়াইল জেলায় জন্মগ্রহণ করেন ১৬ কোটি মানুষের প্রিয় মাশরাফি। ছোটবেলা থেকে মাশরাফি ছিলেন দুরন্ত। বাবা মায়ের আদর করে তাকে ডাকেন কৌশিক।
লেখাপড়া ভালোভাবে মনোযোগ না দিয়ে বাবা গোলাম মুর্তজার বাধা ডিঙিয়ে ফুটবল, ব্যাডমিন্টন নিয়ে পড়ে থাকতেন। পাশাপাশি বাড়ির পাশে চিত্রা নদীতে সাঁতার কাটাই ছিল তার আসল কাজ।
বন্ধুদের সাথে ঘুরাঘুরি করা, নারিকেল গাছে উঠে ডাব খাওয়া, নড়াইলের ফেরিঘাটে গিয়ে আড্ডা মারা ছিল তার অন্যতম কাজ। এখনও সময় পেলে গ্রামের বাড়ি নড়াইলে গিয়ে বাইক নিয়ে চিত্রা ব্রিজের ওপর আড্ডা দিয়ে সময় পার করেন মাশরাফি।
দুরন্ত মাশরাফি বন্ধুদের নিয়ে ফন্দি আঁটলেন আঁখ চুরি করবেন। কারণ পাশের বাড়ির চাচার ক্ষেতে দুপুর বেলা বন্ধুরা মিলে ৫টা আঁখ খেতে চাইলে তিনি তাদের না দিয়ে বাজার থেকে কিনে খাওয়ার উপদেশ দেন। একবার সন্ধ্যার পর তিন বন্ধু মিলে ক্ষেতে গিয়ে প্রায় দেড়শ’র মতো আঁখ কেটে আঁটি বেঁধেছেন। এমন সময় ক্ষেতের মালিক টর্চ লাইট নিয়ে তাদের ধাওয়া করলো। মাশরাফি পিঠের মধ্যে প্রায় দেড়শ আঁখের বোঝা নিয়ে পালাতে শুরু করলেন। পালাতে পালাতে চিত্রা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতরে নদী পার হয়েছিলেন। তবে মাশরাফির এক বন্ধু ধরা পড়ে যাওয়ায় মাশরাফির ছোট মামা মো. নাহিদকে ৫০০ টাকা জরিমানা দিতে হয়েছিল।
সূত্র: দেবব্রত মুখোপাধ্যায়ের লেখা ‘মাশরাফি’ বই। ইউডি