ঢাকা ০৯:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
নাগরিক টেলিভিশনে নতুন দায়িত্বে এরফানুল হক নাহিদ ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই দেশে ফিরতে পারেন তারেক রহমান, গুলশানে প্রস্তুত হচ্ছে নতুন বাসভবন অষ্টগ্রামের ইকুরদিয়া ঘাটের মুরালি দেশজুড়ে সাড়া ফেলেছে নিয়োগের ১ মাসের মধ্যে মাদারীপুরের ডিসি আফসানা বিলকিসকে পরিবর্তন কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণায় ঐকমত্য প্রশাসনেও বইতে শুরু করেছে নির্বাচনী হাওয়া ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যেই পে-স্কেলের গেজেটের দাবিতে আলটিমেটাম হামজার জনপ্রিয়তা দেখতে ঢাকায় লেস্টার সিটির কর্মকর্তারা জলবায়ু অর্থায়ন কোনো দরকষাকষির বিষয় নয়, টিকে থাকার প্রশ্ন : ফরিদা আখতার ইব্রাহিমি মসজিদ বন্ধ করে দিলো ইসরায়েল, ফিলিস্তিনিদের ওপর কারফিউ

কুষ্টিয়ায় পদ্মার চরের ৩৪ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৩১:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ১১৯ বার

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মার পানি বেড়েছে। ডুবেছে আবাদি ফসল। চিলমারীর চরের বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণি কক্ষের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

নিম্নচাপের প্রভাবে ভারী বৃষ্টি এবং ভারতের উজান থেকে নেমে আসা বৃষ্টির পানিতে ফুলে ফেঁপে উঠেছে পদ্মার পানি। এরফলে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়ায় দৌলতপুর উপজেলার চার ইউনিয়নের পদ্মার চরের অন্তত ৩৪টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ভাঙন ও বন্যার আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন তারা।

পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে চিলমারী ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। তলিয়েছে যাতায়াতের রাস্তা। ডুবেছে মরিচা, ফিলিপনগর, রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী এলাকার চরের মাসকলাইসহ আবাদি জমি ও ফসল।

এর আগে আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে নদীতে পানি বাড়লেও শেষের দিকে তা কমতে শুরু করে। তবে ফের সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে পদ্মা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে।

পদ্মায় পানি বৃদ্ধির বিষয়ে পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের দেওয়া তথ্যমতে, সোমবার সকাল ৯টা থেকে বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা পর্যন্ত দুই দিনে নদীতে পানি বেড়েছে ২৩ সেন্টিমিটার। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা পর্যন্ত পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল ১২ দশমিক ৩৪ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ১ দশমিক ৪৬ সেন্টিমিটার নিচে। এই পয়েন্টে বিপৎসীমা ধরা হয়েছে ১৩ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাবনা ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম।

এদিকে চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, আমার ইউনিয়নের প্রায় ১৮টি গ্রামের আশপাশে পানি চলে এসেছে। চলাচলের রাস্তার ওপরে পানি উঠেছে। তবে এখনো বসতঘরে পানি প্রবেশ করেনি। তবে চরের আবাদি জমি ডুবে গেছে।

রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডল জানান, রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ১৬টি গ্রামের চারপাশে পানি চলে এসেছে। তার ইউনিয়নের পদ্মার চরের প্রায় সব আবাদি জমি তলিয়ে গেছে। এতে মাসকালাই চাষিরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

চরে পানিবন্দী হয়ে পড়া প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রমের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চরের কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। পরিস্থিতির অবনতি হলে তা পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো এখনো স্বাভাবিক রয়েছে বলে তারা উল্লেখ করেন।

চরে তলিয়ে যাওয়া ফসলি জমি ও কৃষিজমির ক্ষতির পরিমাণও আগের তুলনায় বেড়েছে অনেকগুণ। পানিতে তলিয়ে যাওয়া ফসলি জমির বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার মো. নুরুল ইসলাম বলেন, পদ্মায় পানি বাড়ার কারণে এখন পর্যন্ত চার ইউনিয়নের অন্তত ১০০ হেক্টর জমির মাসকালাই ডুবে যাওয়ার খবর পেয়েছি। এবার চরে ২ হাজার ৩২৩ হেক্টর জমিতে মাসকালাইয়ের চাষ হয়েছে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। আমরা পানিবন্দি হয়ে পড়া এলাকাগুলোর খোঁজ খবর রাখছি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

নাগরিক টেলিভিশনে নতুন দায়িত্বে এরফানুল হক নাহিদ

কুষ্টিয়ায় পদ্মার চরের ৩৪ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি

আপডেট টাইম : ১১:৩১:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মার পানি বেড়েছে। ডুবেছে আবাদি ফসল। চিলমারীর চরের বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণি কক্ষের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

নিম্নচাপের প্রভাবে ভারী বৃষ্টি এবং ভারতের উজান থেকে নেমে আসা বৃষ্টির পানিতে ফুলে ফেঁপে উঠেছে পদ্মার পানি। এরফলে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়ায় দৌলতপুর উপজেলার চার ইউনিয়নের পদ্মার চরের অন্তত ৩৪টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ভাঙন ও বন্যার আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন তারা।

পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে চিলমারী ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। তলিয়েছে যাতায়াতের রাস্তা। ডুবেছে মরিচা, ফিলিপনগর, রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী এলাকার চরের মাসকলাইসহ আবাদি জমি ও ফসল।

এর আগে আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে নদীতে পানি বাড়লেও শেষের দিকে তা কমতে শুরু করে। তবে ফের সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে পদ্মা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে।

পদ্মায় পানি বৃদ্ধির বিষয়ে পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের দেওয়া তথ্যমতে, সোমবার সকাল ৯টা থেকে বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা পর্যন্ত দুই দিনে নদীতে পানি বেড়েছে ২৩ সেন্টিমিটার। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা পর্যন্ত পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল ১২ দশমিক ৩৪ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ১ দশমিক ৪৬ সেন্টিমিটার নিচে। এই পয়েন্টে বিপৎসীমা ধরা হয়েছে ১৩ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাবনা ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম।

এদিকে চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, আমার ইউনিয়নের প্রায় ১৮টি গ্রামের আশপাশে পানি চলে এসেছে। চলাচলের রাস্তার ওপরে পানি উঠেছে। তবে এখনো বসতঘরে পানি প্রবেশ করেনি। তবে চরের আবাদি জমি ডুবে গেছে।

রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডল জানান, রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ১৬টি গ্রামের চারপাশে পানি চলে এসেছে। তার ইউনিয়নের পদ্মার চরের প্রায় সব আবাদি জমি তলিয়ে গেছে। এতে মাসকালাই চাষিরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

চরে পানিবন্দী হয়ে পড়া প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রমের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চরের কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। পরিস্থিতির অবনতি হলে তা পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো এখনো স্বাভাবিক রয়েছে বলে তারা উল্লেখ করেন।

চরে তলিয়ে যাওয়া ফসলি জমি ও কৃষিজমির ক্ষতির পরিমাণও আগের তুলনায় বেড়েছে অনেকগুণ। পানিতে তলিয়ে যাওয়া ফসলি জমির বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার মো. নুরুল ইসলাম বলেন, পদ্মায় পানি বাড়ার কারণে এখন পর্যন্ত চার ইউনিয়নের অন্তত ১০০ হেক্টর জমির মাসকালাই ডুবে যাওয়ার খবর পেয়েছি। এবার চরে ২ হাজার ৩২৩ হেক্টর জমিতে মাসকালাইয়ের চাষ হয়েছে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। আমরা পানিবন্দি হয়ে পড়া এলাকাগুলোর খোঁজ খবর রাখছি।