টাইফুন ইয়াগির প্রভাবে মিয়ানমারে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে এখন পর্যন্ত ১৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির ক্ষমতাসীন জান্তার মুখপাত্র জাও মিন তুন রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) ১৬৪ জন এখনো নিখোঁজের তথ্য জানিয়েছেন। তবে আঞ্চলিক সূত্রগুলো বলছে, প্রকৃত মৃতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
সংবাদ সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্যার কারণে ৩ লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষকে বাধ্যতামূলকভাবে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
টাইফুন ইয়াগি চলতি বছরে এশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে অন্যতম। এর বিধ্বংসী প্রভাব ইতোমধ্যে ভিয়েতনাম, লাওস, চীনের হাইনান দ্বীপ এবং ফিলিপাইনের ওপর পড়েছে। মিয়ানমারে প্রবেশের আগেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এই টাইফুনে ২৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মিয়ানমারের স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, টাইফুনের কারণে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ৬৬ হাজার বাড়িঘর এবং ৩৭৫টি স্কুল ও একটি মঠ ধ্বংস হয়েছে। কয়েক মাইলজুড়ে সড়ক ও অন্যান্য অবকাঠামো বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। এ পর্যন্ত ১৮৭টি ত্রাণশিবিরে ২ লাখ ৩৬ হাজারের বেশি মানুষকে স্থানান্তর করা হয়েছে।
মধ্য মিয়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক বৃষ্টির কারণে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অনেকেই বলছেন, সরকার যে সংখ্যা প্রকাশ করেছে, তার চেয়ে মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে। রেডিও ফ্রি এশিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারে ১৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে, আর মানডালে অঞ্চলে অন্তত ২৩০ জনের প্রাণহানি হয়েছে হয়েছে।
এদিকে জাপানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এনএইচকে জানিয়েছে, টাইফুনের কারণে শনিবার পর্যন্ত ১২০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
মিয়ানমারের তথ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জরুরি ও স্বাস্থ্যকর্মীরা বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রমে নিয়োজিত আছেন এবং খাদ্য ও পানীয় সরবরাহের জন্য তহবিল বরাদ্দ করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ও সেতু পুনর্নির্মাণের কাজও শুরু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, টাইফুন ইয়াগি কয়েকদিনের মধ্যে মিয়ানমার থেকে সরে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। যদিও পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে আরও একটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় নিম্নচাপ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে।