সচল রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রমিক-কর্মচারীদের আগস্টের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য চলতি মূলধন ঋণ সীমার বাইরে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে বিশেষ বিবেচনায় নতুন ঋণ দেওয়া যাবে। এ ঋণের পরিমাণ গত ৩ মাসে দেওয়া সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গড় বেতন-ভাতার বেশি হবে না।
বাজারভিত্তিক প্রচলিত সুদ হারে এ ঋণ দেওয়া যাবে। এই ঋণের ওপর সুদ ব্যতীত অন্য কোনো ফি বা চার্জ আরোপ করা যাবে না।
এ বিষয়ে রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে রপ্তানিমুখী পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে দেখা করে রপ্তানি খাতের সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন। তারা ওই সময়ে বলেছিলেন, দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও বন্যার কারণে পোশাক রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে তারা ব্যাংক ঋণ পাচ্ছেন না। অর্থের জোগান কমে যাওয়ায় শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ বাধাগ্রস্ত হবে। এ কারণে তারা বিশেষ ঋণ সুবিধা চেয়েছেন। এর আলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ওই সার্কুলার জারি করেছে।
সার্কুলারে বলা হয়, সচল রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা যথাসময়ে পরিশোধের মাধ্যমে উক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর রপ্তানি সক্ষমতা ও দেশের আর্থিক প্রবৃদ্ধি অক্ষুণ্ন রাখার জন্য সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর আলোকে সচল রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রমিক-কর্মচারীদের আগস্টের বেতন-ভাতা পরিশোধের নিমিত্ত চলতি মূলধন ঋণসীমার বাইরে প্রযোজ্যতা অনুসারে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে গ্রাহকের সক্ষমতা বিশ্লেষণপূর্বক মেয়াদি ঋণ সুবিধা দেওয়া যেতে পারে। ঋণ সুবিধার পরিমাণ ঋণগ্রহীতা শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বিগত ৩ মাসের প্রদত্ত গড় বেতন-ভাতার বেশি হবে না। যেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান মোট উৎপাদনের ন্যূনতম ৮০ শতাংশ রপ্তানি করে তারা রপ্তানিমুখী শিল্প এবং যেসব প্রতিষ্ঠান তাদের শ্রমিক-কর্মচারীদের মে হতে জুলাইয়ের বেতন পরিশোধ করেছেন তারা সচল হিসাবে বিবেচিত হবে। সচল ও রপ্তানিমুখী হওয়ার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিত্বকারী বাণিজ্য সংগঠনের (বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ইত্যাদি) প্রত্যয়নপত্র দ্বারা সমর্থিত হতে হবে। এ ঋণের বিপরীতে বাজারভিত্তিক প্রচলিত সুদহার প্রযোজ্য হবে। গ্রাহকের ওই ঋণের আওতায় তফশিলি ব্যাংকগুলো সংশ্লিষ্ট শ্রমিক-কর্মচারীর ব্যাংক হিসাবে বা মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে সরাসরি আগস্টের বেতন-ভাতার অর্থ প্রদান করবে। এতে আরও বলা হয়, এ খাতে উদ্যোক্তাদের দেওয়া ঋণসহ গ্রাহকের সমুদয় ঋণ একক ঋণ সীমার মধ্যে থাকতে হবে। কোনোক্রমেই এ সীমা অতিক্রম করা যাবে না। উক্ত ঋণের অর্থ মেয়াদি ঋণ আকারে ৩ মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ সর্বোচ্চ ১ বছরে সমান কিস্তিতে মাসিক বা ত্রৈমাসিক হিসাবে আদায় করা যেতে পারে। এরূপ ঋণের ওপর নিয়মিত সুদ ব্যতীত অন্য কোনো প্রকার অতিরিক্ত সুদ, মুনাফা, ফি, চার্জ (যে নামেই অভিহিত করা হোক না কেন) আদায় বা আরোপ করা যাবে না।