ঢাকা ০৮:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নেত্রকোণার মদনে প্রতি বছরেই পানিতে ডুবে বিদ্যালয়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১৯:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৪
  • ৩৮ বার

নিজাম (নেত্রকোণা)ঃ বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়েছে ১০ বছর আগে। প্রায় একশত শিক্ষার্থী ও ৩ জন শিক্ষক কর্মরত আছে বিদ্যালয়ে। বর্ষা মৌসুমে সামান্য পানিতে প্রতি বছরেই ডুবে যায় বিদ্যানেত্রকোণালয় ভবন। তাই বাধ্য হয়ে বছরে মাস তিন এক পাঠদান বন্ধ রাখতে হয় বিদ্যালয়টিতে। এমন অবস্থা নেত্রকোণার মদন উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের ধানকুনিয়া আবুল হাশেম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।

এদিকে বিদ্যালয়ের এমন অবস্থা থাকলেও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর আবার ঐ নিচু স্থানেই প্রায় ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে বিদ্যালয়ের পাশেই একটি ওয়াশবক্ল নির্মাণ করছে। স্থানীয়দের অভিযোগ যেখানে বিদ্যালয়ের ভবনটি ৩ থেকে ৪ মাস পানির নিচে থাকে সেখানে নতুন স্থাপনা করে অযথা সরকারি অর্থ নষ্ট করা হচ্ছে।

এ বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় লোকজন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বার বার যোগাযোগ করলেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেনা কর্তৃপক্ষ। এতে করে ঐ এলাকার প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা নাজেহাল হয়ে পড়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী থাকলেও হয় না পাঠদান। এতে ওই এলাকার কোমলমতি শিশুরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ফতেপুর ইউনিয়নের ধানকুনিয়া গ্রামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে সেখানে একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। ভবনটি নির্মাণ করেন স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।

প্রত্যন্ত অঞ্চলে সুন্দর একটি ভবন নির্মাণ হওয়ার শিশুদের শিক্ষার হার বাড়বে বলে আশায় বুখ বাঁধে ওই এলাকার লোকজন। কিন্তু অপরিকল্পিত ভাবে বিদ্যালয়ের ভবনটি নির্মান করা হয়। গ্রামের সামনে একটি নিচু জমিতে ভবন নির্মাণ করায় বর্ষাকাল আসলেই ভবনটি পানিতে তলিয়ে যায়। এতে করে বছরে দুই থেকে তিন মাস বিদ্যালয়টি বন্ধ রাখতে হয়।

সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ধানকুনিয়া গ্রাম থেকে প্রায় ১২ থেকে ১৫ ফুট নিচু জায়গায় বিদ্যালয় ভবনটি নির্মান করা হয়েছে। স্বাভাবিক বর্ষার পানিতে বিদ্যালয়ের ছাঁদে পানি ছুঁই ছুঁই অবস্থা। এর পাশে আবার ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর একটি ওয়াসবক্ল (বাথরুম) নির্মান করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হাসেম ও শিক্ষার্থী অভিভাবক মোঃ ফরিদ মিয়া বলেন, যখন বিদ্যালয়ের ভবন নিচু জায়গায় নির্মাণ করা হয় তখন আমরা সকলেই প্রতিবাদ জানিয়েছি। কিন্তু স্থানীয় লোকজনের মতামত না নিয়ে সেখানে ভবন করা হয়েছে। এখন প্রতিবছর বর্ষাকালে পানিতে তলিয়ে যায় বিদ্যালয়টি। তাই বছরে ২/৩ মাস বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষার্থী যায় না। অপরিকল্পিত ভাবে ভবনটি নির্মান করায় এলাকার শিশুরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এখন নিচু স্থানেই আরেকটি বাথরুম নির্মাণ করে সরকারি টাকা নষ্ট করতেছে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দাবি জানান তাঁরা।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুস সামাদ লিজন বলেন, সামান্য পানি হলেই বিদ্যালয়টি ডুবে যায়। দুই মাস বিদ্যালয় বন্ধ রাখতে হয়েছে। ভবনটি উঁচু না করলে ওই এলাকার প্রাথমিক শিক্ষার মান কখনো উন্নত করা যাবে না। উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া পিয়াল বলেন, দীর্ঘদিন আগে ধানকুনিয়া বিদ্যালয় ভবনটি নির্মান করা হয়েছে। নিচু জায়গায় নির্মাণ হওয়ায় ভবনটি পানিতে ডুবে যায়। যখন নির্মাণ হয়েছিল তখন সেটার ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন ছিল।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুজ্জামান জানান, আমি নতুন যোগদান করেছি। ধানকুনিয়া বিদ্যালয় ভবনটি পানিতে ডুবে যায় শুনেছি। পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করবো।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

নেত্রকোণার মদনে প্রতি বছরেই পানিতে ডুবে বিদ্যালয়

আপডেট টাইম : ১২:১৯:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৪

নিজাম (নেত্রকোণা)ঃ বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়েছে ১০ বছর আগে। প্রায় একশত শিক্ষার্থী ও ৩ জন শিক্ষক কর্মরত আছে বিদ্যালয়ে। বর্ষা মৌসুমে সামান্য পানিতে প্রতি বছরেই ডুবে যায় বিদ্যানেত্রকোণালয় ভবন। তাই বাধ্য হয়ে বছরে মাস তিন এক পাঠদান বন্ধ রাখতে হয় বিদ্যালয়টিতে। এমন অবস্থা নেত্রকোণার মদন উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের ধানকুনিয়া আবুল হাশেম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।

এদিকে বিদ্যালয়ের এমন অবস্থা থাকলেও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর আবার ঐ নিচু স্থানেই প্রায় ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে বিদ্যালয়ের পাশেই একটি ওয়াশবক্ল নির্মাণ করছে। স্থানীয়দের অভিযোগ যেখানে বিদ্যালয়ের ভবনটি ৩ থেকে ৪ মাস পানির নিচে থাকে সেখানে নতুন স্থাপনা করে অযথা সরকারি অর্থ নষ্ট করা হচ্ছে।

এ বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় লোকজন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বার বার যোগাযোগ করলেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেনা কর্তৃপক্ষ। এতে করে ঐ এলাকার প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা নাজেহাল হয়ে পড়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী থাকলেও হয় না পাঠদান। এতে ওই এলাকার কোমলমতি শিশুরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ফতেপুর ইউনিয়নের ধানকুনিয়া গ্রামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে সেখানে একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। ভবনটি নির্মাণ করেন স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।

প্রত্যন্ত অঞ্চলে সুন্দর একটি ভবন নির্মাণ হওয়ার শিশুদের শিক্ষার হার বাড়বে বলে আশায় বুখ বাঁধে ওই এলাকার লোকজন। কিন্তু অপরিকল্পিত ভাবে বিদ্যালয়ের ভবনটি নির্মান করা হয়। গ্রামের সামনে একটি নিচু জমিতে ভবন নির্মাণ করায় বর্ষাকাল আসলেই ভবনটি পানিতে তলিয়ে যায়। এতে করে বছরে দুই থেকে তিন মাস বিদ্যালয়টি বন্ধ রাখতে হয়।

সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ধানকুনিয়া গ্রাম থেকে প্রায় ১২ থেকে ১৫ ফুট নিচু জায়গায় বিদ্যালয় ভবনটি নির্মান করা হয়েছে। স্বাভাবিক বর্ষার পানিতে বিদ্যালয়ের ছাঁদে পানি ছুঁই ছুঁই অবস্থা। এর পাশে আবার ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর একটি ওয়াসবক্ল (বাথরুম) নির্মান করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হাসেম ও শিক্ষার্থী অভিভাবক মোঃ ফরিদ মিয়া বলেন, যখন বিদ্যালয়ের ভবন নিচু জায়গায় নির্মাণ করা হয় তখন আমরা সকলেই প্রতিবাদ জানিয়েছি। কিন্তু স্থানীয় লোকজনের মতামত না নিয়ে সেখানে ভবন করা হয়েছে। এখন প্রতিবছর বর্ষাকালে পানিতে তলিয়ে যায় বিদ্যালয়টি। তাই বছরে ২/৩ মাস বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষার্থী যায় না। অপরিকল্পিত ভাবে ভবনটি নির্মান করায় এলাকার শিশুরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এখন নিচু স্থানেই আরেকটি বাথরুম নির্মাণ করে সরকারি টাকা নষ্ট করতেছে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দাবি জানান তাঁরা।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুস সামাদ লিজন বলেন, সামান্য পানি হলেই বিদ্যালয়টি ডুবে যায়। দুই মাস বিদ্যালয় বন্ধ রাখতে হয়েছে। ভবনটি উঁচু না করলে ওই এলাকার প্রাথমিক শিক্ষার মান কখনো উন্নত করা যাবে না। উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া পিয়াল বলেন, দীর্ঘদিন আগে ধানকুনিয়া বিদ্যালয় ভবনটি নির্মান করা হয়েছে। নিচু জায়গায় নির্মাণ হওয়ায় ভবনটি পানিতে ডুবে যায়। যখন নির্মাণ হয়েছিল তখন সেটার ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন ছিল।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুজ্জামান জানান, আমি নতুন যোগদান করেছি। ধানকুনিয়া বিদ্যালয় ভবনটি পানিতে ডুবে যায় শুনেছি। পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করবো।