ঢাকা ০৫:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না মদন হিসাবরক্ষণ অফিসে শিক্ষকদের ক্ষোভ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:৫০:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪
  • ৪৪ বার

নিজাম (নেত্রকোনা) প্রতিনিধিঃ ঘুষ ছাড়া কাজ না করার অভিযোগ উঠেছে নেত্রকোনার মদন উপজেলার হিসাবরক্ষণ অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে। ঘুষ নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষকদের ডিপিএড প্রশিক্ষণের উন্নীত ভাতা উত্তোলণ ফাইলের কাজ শুরু হয়। কিন্তু হিসাবরক্ষণ অফিসের চাহিদা মতো ঘুষ না দেওয়ায় কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ভাতা উত্তোলণ করতে ঘুষের চাহিদায় হয়রানির শিকার হওয়ায় শিক্ষকদের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সাল থেকে যে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ডিপিএড প্রশিক্ষণে ছিলেন তাদের প্রশিক্ষক উন্নীত ভাতা বকেয়া রয়েছে। প্রশিক্ষণের বকেয়া ভাতা উত্তোলনের জন্য মদন উপজেলার ২৯ জন শিক্ষক আবেদন করেন। কিন্তু ২৬ জন ডিপিএড প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত শিক্ষকের ভাতা উত্তোলণ করার আবেদন মঞ্জুর হয়। নিয়মনুযায়ী একজন শিক্ষক ডিপিএডের প্রশিক্ষণ ভাতা পাবে স্কেল অনুযায়ী ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। সেই ভাতা উত্তোলনের ফাইলপত্রের কাজ করেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও হিসাবরক্ষণ অফিস। প্রশিক্ষন করা শিক্ষকদের বকেয়া ভাতার কাজ করার জন্য প্রতিজন শিক্ষককের কাছ থেকে ৩ হাজার করে টাকা ঘুষ নেন মদন হিসাবরক্ষণ অফিসের অডিটর জুবায়ের আহম্মেদ।

সেই হিসাব মতে প্রথমে ৭৮ হাজার টাকা ঘুষ দেন ২৬ জন শিক্ষক। এখন পশিক্ষণের মোট ভাতার থেকে ২০% দাবি করেন তিনি। এর সাথে শিক্ষক নেতা সাখাওয়াত ভূইয়ার মাধ্যেমে প্রতিজনের কাজ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে দাবি করেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। শিক্ষকরা ঘুষের টাকা দিতে অপারকতা প্রকাশ করায় তাদের ডিপিএড এর বকেয়া ভাতার কাজ বন্ধ রয়েছে বলে শিক্ষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

ভুক্তভোগী সহকারি শিক্ষক এমদাদ হোসাইন, শাহ্ জাফরিন সুলতানা, সামিউল হক জুসেফসহ অনেকেই জানান, ডিপিএড স্কেলের বকেয়া ভাতার জন্য হিসাব রক্ষণ অফিসের জুবায়েরকে আমরা ৩ হাজার টাকা করে ঘুষ নিয়েছে। বকেয়া ভাতা পেতে হলে শিক্ষা অফিসের খরচ বাবদ প্রত্যেকে আবার ২ হাজার ৫০০ টাকা ঘুষ দিতে হবে বলে আমাদের সহকারি শিক্ষক সাখাওয়াত ভূইয়া জানিয়েছে। এর সাথে হিসাবরক্ষণ অফিসকে আবার মোট বিলের ২০% ঘুষ দিতে হবে। বিল উত্তোলণ করতে গিয়ে আমরা বার বার হয়রানির শিকার হচ্ছি।

শিক্ষক নেতা সাখাওয়াত ভুঁইয়া জানান, ডিপিএড স্কেলের ভাতার জন্য তো কিছু খরচ দিতেই হয়েছে। ভাতা উত্তোলনের জন্য ২০% দাবি করলেও টাকা দেওয়া হয়নি।

জানতে চাইলে মদন উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের অডিটর জুবায়ের আহমেদ জানান, বিল তৈরির জন্য টাকা পয়সা দিতে হয় না। আমার নাম ভাঙ্গিয়ে যদি কেউ শিক্ষদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে থাকেন তাহলে দায়বার তার।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তারেক সালাউদ্দিন জানান, আমাদের অফিসের নাম ভাঙ্গিয়ে যদি কেউ শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে থাকে তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না মদন হিসাবরক্ষণ অফিসে শিক্ষকদের ক্ষোভ

আপডেট টাইম : ০১:৫০:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪

নিজাম (নেত্রকোনা) প্রতিনিধিঃ ঘুষ ছাড়া কাজ না করার অভিযোগ উঠেছে নেত্রকোনার মদন উপজেলার হিসাবরক্ষণ অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে। ঘুষ নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষকদের ডিপিএড প্রশিক্ষণের উন্নীত ভাতা উত্তোলণ ফাইলের কাজ শুরু হয়। কিন্তু হিসাবরক্ষণ অফিসের চাহিদা মতো ঘুষ না দেওয়ায় কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ভাতা উত্তোলণ করতে ঘুষের চাহিদায় হয়রানির শিকার হওয়ায় শিক্ষকদের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সাল থেকে যে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ডিপিএড প্রশিক্ষণে ছিলেন তাদের প্রশিক্ষক উন্নীত ভাতা বকেয়া রয়েছে। প্রশিক্ষণের বকেয়া ভাতা উত্তোলনের জন্য মদন উপজেলার ২৯ জন শিক্ষক আবেদন করেন। কিন্তু ২৬ জন ডিপিএড প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত শিক্ষকের ভাতা উত্তোলণ করার আবেদন মঞ্জুর হয়। নিয়মনুযায়ী একজন শিক্ষক ডিপিএডের প্রশিক্ষণ ভাতা পাবে স্কেল অনুযায়ী ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। সেই ভাতা উত্তোলনের ফাইলপত্রের কাজ করেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও হিসাবরক্ষণ অফিস। প্রশিক্ষন করা শিক্ষকদের বকেয়া ভাতার কাজ করার জন্য প্রতিজন শিক্ষককের কাছ থেকে ৩ হাজার করে টাকা ঘুষ নেন মদন হিসাবরক্ষণ অফিসের অডিটর জুবায়ের আহম্মেদ।

সেই হিসাব মতে প্রথমে ৭৮ হাজার টাকা ঘুষ দেন ২৬ জন শিক্ষক। এখন পশিক্ষণের মোট ভাতার থেকে ২০% দাবি করেন তিনি। এর সাথে শিক্ষক নেতা সাখাওয়াত ভূইয়ার মাধ্যেমে প্রতিজনের কাজ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে দাবি করেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। শিক্ষকরা ঘুষের টাকা দিতে অপারকতা প্রকাশ করায় তাদের ডিপিএড এর বকেয়া ভাতার কাজ বন্ধ রয়েছে বলে শিক্ষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

ভুক্তভোগী সহকারি শিক্ষক এমদাদ হোসাইন, শাহ্ জাফরিন সুলতানা, সামিউল হক জুসেফসহ অনেকেই জানান, ডিপিএড স্কেলের বকেয়া ভাতার জন্য হিসাব রক্ষণ অফিসের জুবায়েরকে আমরা ৩ হাজার টাকা করে ঘুষ নিয়েছে। বকেয়া ভাতা পেতে হলে শিক্ষা অফিসের খরচ বাবদ প্রত্যেকে আবার ২ হাজার ৫০০ টাকা ঘুষ দিতে হবে বলে আমাদের সহকারি শিক্ষক সাখাওয়াত ভূইয়া জানিয়েছে। এর সাথে হিসাবরক্ষণ অফিসকে আবার মোট বিলের ২০% ঘুষ দিতে হবে। বিল উত্তোলণ করতে গিয়ে আমরা বার বার হয়রানির শিকার হচ্ছি।

শিক্ষক নেতা সাখাওয়াত ভুঁইয়া জানান, ডিপিএড স্কেলের ভাতার জন্য তো কিছু খরচ দিতেই হয়েছে। ভাতা উত্তোলনের জন্য ২০% দাবি করলেও টাকা দেওয়া হয়নি।

জানতে চাইলে মদন উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের অডিটর জুবায়ের আহমেদ জানান, বিল তৈরির জন্য টাকা পয়সা দিতে হয় না। আমার নাম ভাঙ্গিয়ে যদি কেউ শিক্ষদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে থাকেন তাহলে দায়বার তার।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তারেক সালাউদ্দিন জানান, আমাদের অফিসের নাম ভাঙ্গিয়ে যদি কেউ শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে থাকে তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।