পবিত্র রমজান, ঈদুল ফিতর এবং গরমের কারণে এক সপ্তাহের ছুটি মিলিয়ে এক মাস ৩ দিন পর খুলেছে দেশের স্কুলগুলো। তবে তাপপ্রবাহ এখনও চলমান থাকায় স্কুল খোলা নিয়ে আপত্তি দেখা দিয়েছে। অভিভাবকরা সন্তানদের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন। তারা তাপদাহে স্কুল বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছেন।
এ নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি বলেছেন, তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি বা তার বেশি হলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের স্কুল স্থানীয় প্রশাসন বন্ধ করতে পারবে। তাপমাত্রা সব জেলায় সমান নয়। যেমন, চট্টগ্রামে তাপমাত্রা ৩৫-৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেখানে স্কুল বন্ধ করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।
রাজধানীর আগারগাঁও ঢাকা মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রোববার সকালে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
কোনো নির্দিষ্ট এলাকার তাপমাত্রার জন্য সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের বিপক্ষে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি মনে করেন তাপমাত্রা এখনও অসহনীয় হয়ে উঠেনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কোনো কোনো জেলায় যদি তা অসহনীয় পর্যায়ে যায়, সেখানে বিদ্যালয় নিজস্ব পদ্ধতিতে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা আঞ্চলিক পর্যায়ে আলোচনা করে সেই জায়গায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে পারেন। নির্দিষ্ট এলাকার তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য সারাদেশের স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা যায় না।
নওফেল বলেন, আবহাওয়ার যে পূর্বাভাস পাওয়া গেছে, তাতে দেখা যায় পাঁচটি জেলায় তাপমাত্রা ৪০–এর পর্যায়ে আছে। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি বাংলাদেশে নতুন নয়। সুতরাং পাঁচটি জেলায় তাপমাত্রা ৪০-এর ওপরে যাওয়ার পূর্বাভাসের ভিত্তিতে সারা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়াটা যুক্তিযুক্ত নয়। ঢাকা শহরের তাপমাত্রা বিবেচনা করে সারা দেশের বিদ্যালয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মানসিকতা পরিহার করতে হবে। জনপ্রিয়তার আলোকে তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। বাস্তবতার নিরিখে নিতে হবে। ঢাকা শহরের তাপমাত্রা সারা দেশের তাপমাত্রা নয়।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কিছু হলেই স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার আলোচনা কেন? সবকিছু খোলা থাকবে আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে, এ প্রত্যাশা যথাযথ নয়। মন্ত্রী জানান, তারা শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখতে চান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কয়েকটি জেলায় সেখানে যদি অসহনীয় পর্যায়ে যায়, বিদ্যালয় সেখানে নিজস্ব পদ্ধতিতে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কোনো জেলায় তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি বা তারও বেশি বা প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ হলে করণীয় বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও একটি নির্দেশনা দেওয়া আছে। সেটি তারাও সমন্বয় করেন। এলাকাভিত্তিক যদি ৪২ ডিগ্রির বেশি তাপমাত্রা যায়, তাহলে সেখানে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আছেন, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আছেন, তারা আঞ্চলিক পর্যায়ে আলোচনা করে সেই জায়গায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে পারেন এবং সময়সীমাও পরিবর্তন করতে পারেন। এটা অঞ্চল ভেদে।
মাধ্যমিকের ক্লাশ শনিবারেও বন্ধ না রাখার ঘোষণার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এটি অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর কিছু হলেই স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার আলোচনা কেন? সবকিছু খোলা থাকবে আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে, এ প্রত্যাশা যথাযথ নয়। তাঁরা শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখতে চান।